• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
হালাল খাদ্য উৎপাদনে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ

এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে ব্রুনাই প্রতিনিধিদলের বৈঠক

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

হালাল খাদ্য উৎপাদনে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ

এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে ব্রুনাই প্রতিনিধিদলের বৈঠক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হালাল খাদ্য উৎপাদনে বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তা কাজে লাগাতে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশে সফররত ব্রুনাইয়ের একটি প্রতিনিধিদল। গতকাল রোববার রাজধানীর মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে এফবিসিসিআইয়ের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ আহ্বান জানায় তারা।

প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। খাদ্যের মান ও গুণের কারণে শুধু মুসলিম দেশই নয়, অন্যান্য দেশেও হালাল খাদ্যের বাজার তৈরি হচ্ছে। ব্রুনাই হালাল খাদ্য উৎপাদন করলেও চাহিদার তুলনায় অনেক কম উৎপাদন করে থাকে। এ খাতে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে পারেন। বাংলাদেশ ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের (ছাগল) মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে ব্রুনাইয়ে রফতানির সুযোগও কাজে লাগাতে পারে বলে মনে করছে প্রতিনিধিদলটি। প্রক্রিয়াজাতকরণে কারিগরি সহায়তা কিংবা এ খাতে ব্রুনাই বাংলাদেশেও বিনিয়োগ করতে পারে। 

ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব সিতি নরিশহান আবদুল গাফুর ১০ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত হাইকমিশনার হাজাজ মাশরুই মাসরি, ব্রুনাইয়ের বিদেশি বিনিয়োগ বিভাগের ব্যবস্থাপক ফেরদাউস হাজী আবদুল কাদের, হালাল খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গানিম ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নূর রহমান প্রমুখ। 

এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। ১০০ ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রুনাই ওষুধসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। বিনিয়োগের জন্য সুস্পষ্ট প্রস্তাবনা নিয়ে দুই দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে আলোচনা হওয়া উচিত বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

ব্রুনাই প্রতিনিধিদলের নেতারা বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায়। তারা আরো বলেন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ভারত থেকেও ব্রুনাই মাংস আমদানি করছে। বাংলাদেশও এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্রুনাইয়ে মাংস রফতানি করতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পাট, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, চাল, ওষুধ ইত্যাদি পণ্য ব্রুনাইয়ে রফতানি করতে পারে।

বিনিয়োগের জন্য ব্রুনাই অত্যন্ত আকর্ষণীয় উল্লেখ করে প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রাকৃতিক সম্পদ তেল ও গ্যাসসমৃদ্ধ দেশ হিসেবে ব্রুনাই পরিচিত। পণ্যের বহুমুখীকরণে বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শতভাগ নিজস্ব বিনিয়োগ বা সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিদেশি উদ্যোক্তারা দেশটিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। শিল্পায়নে ২৬টি আলাদা জায়গা রয়েছে। সহজেই ব্যবসা করা যায়। কোনো ধরনের ব্যক্তিগত আয়কর দিতে হয় না, মূলধনি আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত। করপোরেট করের হার সাড়ে ১৮ শতাংশ, যা সিঙ্গাপুরের পর এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা, মুনাফাসহ বিনিয়োগ শতভাগ প্রত্যাবাসনের সুযোগ রয়েছে। হালাল খাদ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ওষুধ, সেবা খাত, আইটি, প্রযুক্তি ও পর্যটন খাতে দেশটিতে বিনিয়োগের অপার সুযোগ রয়েছে। তারা আরো বলেন, জনসংখ্যা কম হওয়ায় দেশটিতে চাহিদাও কম। কিন্তু বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি থাকায় এবং আসিয়ানের সদস্য হওয়ায় দেশটি থেকে পণ্য রফতানির সুযোগ অনেক বেশি। এ সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।  

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads