• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

গৃহ শ্রমিকরাও শ্রম আইনের বাইরে রয়েছে

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিদ্যমান শ্রম আইনে শ্রমশক্তির মাত্র ১৫ ভাগ শ্রমিক আইনি সুরক্ষা পায়। বাকি ৮৫ ভাগ শ্রমিক এ আইনের বাইরে রয়েছে। বাইরে থাকা শ্রমশক্তির মধ্যে রয়েছে গৃহ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, স্বাস্থ্যকর্মী, ছোট যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক পরিবহন শ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সভায় বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধনী-২০১৮ নামে যে শ্রম আইনের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তাতেও শ্রমিকদের অধিকার উপেক্ষা করা হয়েছে। আইনে সংবিধান ও আইএলও কনভেনশনের যথাযথ প্রতিফলন ঘটেনি। এ ধরনের অভিযোগ তুলে গৃহ শ্রমিকসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে শ্রম আইনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত ও সর্বজনীন মানবাধিকার সনদের আলোকে শ্রম আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন।

গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মুর্শিদা আক্তার নাহার। এ সময় সংগঠনের সভাপতি আমেনা বেগম, সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জাহান আরা হক, উপদেষ্টা আবুল হোসেন, আমেরিকান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল লেবার সলিডারিটির বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কেরি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য কোনো আইন বা নীতিমালা নেই। গৃহ শ্রমিকদের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। এছাড়া গৃহ শ্রমিকদের জন্য আইএলও কনভেনশন ১৮৯ এবং হোম ওয়ার্কারদের জন্য আইএলও কনভেনশন ১৬৬ প্রণীত হলেও বাংলাদেশ সরকার তাতে অনুসমর্থন করেনি। ফলে গৃহ শ্রমিক ও হোম ওয়ার্কাররা তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এদিকে সংশোধিত শ্রম আইনের বেশ কিছু ধারার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন। ২০ শতাংশ শ্রমিক সদস্য হওয়ার শর্তে শ্রমিকদের সংগঠন রাখার বিধানকে সংবিধান ও আইএলও কনভেনশনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদে এবং আইএলও কনভেনশনের ৮৭ ও ৯৮ ধারার কোনো ধরনের বিধিনিষেধ ছাড়াই শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংশোধিত শ্রম আইনে এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।

এছাড়া সংশোধিত শ্রম আইনে শ্রমিকদের সরাসরি শ্রম আদালতে মামলা দায়েরে প্রতিবন্ধকতা, মাতৃকালীন সময়ে মজুরি পাওয়ার অধিকার সঙ্কুচিত করা, শতভাগ রফতানিমুখী শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য গ্রুপবীমার সুযোগ না রাখা, সাপ্তাহিক ছুটির দিনের জন্য অধিকাল ভাতা কর্তন করা, উৎসব ভাতা প্রাপ্তিতে ৬ মাসের পরিবর্তে এক বছরের শর্ত জুড়ে দেওয়া এবং টাকার পরিমাণ উল্লেখ না করা, ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ১০ ঘণ্টা কাজ করার শর্ত আরোপ করার মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

শ্রম আইনের বর্তমান সংশোধনীটি শিল্প সম্পর্ক, উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সব শ্রমিক প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে মানবিক শ্রম আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads