• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
অর্থবছরের প্রথম মাসে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি

রাজস্ব ভবন

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

অর্থবছরের প্রথম মাসে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথম মাস জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এ মাসে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৭৩৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। কিন্তু মাস শেষে আয় হয়েছে ১৩ হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ১৭ দশমিক ১৫ শতাংশ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

অবশ্য লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আদায় কম হলেও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আয় বেশি হয়েছে ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম মাসে রাজস্ব আয় হয়েছিল ১৩ হাজার ২২৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

এদিকে চলতি অর্থবছরে সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজস্ব আদায়ের এ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু অর্থবছরের প্রথম মাসেই লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৭ শতাংশ কম আদায় হওয়ায় বছর শেষে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ঘাটতিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। অবশ্য বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হবে না বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির পক্ষ থেকে রাজস্ব আদায়ে সংশয় প্রকাশ করে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় ৩১ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছরের রাজস্ব আদায়ের পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ১৬ থেকে ১৭ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে রাজস্ব আদায়ে যে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে তা অর্জিত হবে না। রাজস্ব আদায় বাড়াতে যে ধরনের সংস্কার বা কার্যক্রম গ্রহণ করার দরকার তার কোনো প্রতিফলনও বাজেটে নেই। এ ছাড়া ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়ায় রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের গতি ফেরার সুযোগও নেই।  রাজস্ব আদায়ে সিপিডির সে আশঙ্কারই প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে প্রথম মাসের রাজস্ব আদায়ে। অবশ্য ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে এনবিআর। ফলে বছর শেষে উন্নয়ন বাজেটে বড় ধরনের কাটছাঁট করতে হচ্ছে।

এনবিআর প্রধানত আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে রাজস্ব, স্থানীয় পর্যায়ে মূসক এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে রাজস্ব আয় করে থাকে। অর্থবছরের প্রথম মাসে এসব খাতের কোনোটি থেকেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আয় করতে পারেনি। আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ হাজার ৫২২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার ৭৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ আয় করতে সক্ষম হয়েছে। এ হিসাবে এ খাতে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে মূসক আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৪০৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ৯৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে মূসক আদায় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৮৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অপরদিকে আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে ৪ হাজার ১১৮ কোটি টাকার পরিবর্তে আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৬১২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আদায় কম হয়েছে ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ। তবে গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এ খাতে আদায় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। ওই সময় আদায়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৭৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads