• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
জানুয়ারি থেকে এনবিআর তালিকাভুক্ত সফটওয়্যারে তথ্য সংরক্ষণ

এনবিআর ভবন

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

জানুয়ারি থেকে এনবিআর তালিকাভুক্ত সফটওয়্যারে তথ্য সংরক্ষণ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মূসক নিবন্ধিত কিংবা নিবন্ধনযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক লেনদেন পাঁচ কোটি বা তার অধিক হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তালিকাভুক্ত সফটওয়্যারে তথ্য সংরক্ষণে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে।  সফটওয়্যারটিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সংক্রান্ত দলিলাদি এবং হিসাবপত্র সংরক্ষণ করে তা সংশ্লিষ্ট মূল্য সংযোজন কার্যালয়ে বা এনবিআর নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার সিস্টেমে পাঠাতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি আদেশ এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ থেকে জারি করা হয়েছে। গতকাল রোববার এ আদেশ এনবিআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

যেসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব সংরক্ষণে বাধ্যবাধকতা নেই সেসব প্রতিষ্ঠানও তালিকাভুক্ত সফটওয়্যারে তাদের হিসাব সংরক্ষণ করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।

এদিকে এনবিআরের তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য সফটওয়্যারের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও সফটওয়্যারে যেসব বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে তারও একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে আদেশে।

সফটওয়্যার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে, এটি আরজেএসির নিবন্ধনযুক্ত পাবলিক বা প্রাইভেট কোম্পানি হতে হবে, কমপক্ষে পাঁচ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে কার্যক্রম পরিচালনা ও বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানে অভিজ্ঞতা, কমপক্ষে তিনটি মধ্যম বা বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে  হিসাব সংরক্ষণ সংক্রান্ত সফটওয়্যার সফলভাবে স্থাপনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

অপরদিকে নির্মিত সফটওয়্যারের মোট ২৩ বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। এসব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে সফটওয়্যারটি মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এবং এ আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালা, প্রজ্ঞাপন ও আদেশ পরিপালনে সক্ষম হতে হবে। এটিতে ক্রয় ও বিক্রয় সংক্রান্ত কোনো তথ্য এন্ট্রি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হবে, উৎসে মূসক আদায়/কর্তন, অপচয় ও উপজাত পণ্য ব্যবস্থাপনা ও মূল্য ঘোষণা ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করার সুবিধা থাকতে হবে, মাত্র একবার মূল মূসক চালানপত্র প্রিন্ট করা যাবে। যেন একই চালানপত্র দ্বিতীয়বার বা পরবর্তীতে ইস্যু করা না যায় তেমন ব্যবস্থা থাকতে হবে। তবে প্রয়োজনে অনুলিপি প্রিন্ট করা যাবে এবং যাতে অনুলিপি বা ‘copy© জলছাপে বড় অক্ষরে প্রিন্ট করা থাকবে। মূসক ও চালানপত্রে সময় ও তারিখ স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রিন্ট করতে হবে, যা কেবলমাত্র যখনই প্রিন্ট করা হবে সেই সময় ও তারিখ প্রদর্শন করবে। সফটওয়্যারটিতে আরো যেসব বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট মূসক কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একসেস সুবিধা থাকতে হবে। এনবিআরের নির্দেশনা ও চাহিদা মোতাবেক বোর্ডের অন্যান্য সফটওয়্যার বা উপাত্ত ভান্ডার বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তথ্য বা উপাত্ত বিনিময়ের সুবিধা থাকতে হবে। প্রতিদিনের কার্যক্রম শেষে সকল তথ্য ন্যূনতম দুটি ব্যাক-আপ নেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে, যেকোনো ডাটা হারানোর দায়-দায়িত্ব নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে। সফটওয়্যারটিতে হ্যাকিং ও ট্যাম্পারিংসহ সকল ধরনের ঝুঁকি হতে সুরক্ষার জন্য পরিপূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

আদেশে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সফটওয়্যার নির্মাণ করে এনবিআর গঠিত এ সংক্রান্ত কমিটির কাছে তালিকাভুক্তির আবেদন জানাতে হবে। ঢাকার বৃহৎ করদাতা ইউনিট-মূসক কমিশনারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এ কমিটি গঠন করেছে এনবিআর। তবে কমিটি প্রয়োজনে অন্য কোনো বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ করতে পারবে। কমিটি আবেদন দাখিলের ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সফটওয়্যারটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তালিকাভুক্তির বিষয়ে সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন এনবিআরের সদস্যের (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) কাছে উপস্থাপন করবেন। তবে কোনো কারণে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব না হলে ২১ কার্যদিবস অতিক্রান্ত হওয়ার ৭ কার্যদিবস আগে সর্বোচ্চ ১৫ কার্যদিবস সময় বাড়ানোর জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জানাতে পারবেন। চেয়ারম্যান স্বীয় বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সময় বৃদ্ধি করবেন। দাখিলকৃত প্রতিবেদন মোতাবেক সফটওয়্যারটি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হলে তা তালিকাভুক্ত করে এনবিআরের ওয়েসবাইটে প্রয়োজনীয় লিঙ্ক প্রকাশ করা হবে।   

আদেশে বলা হয়েছে, কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে সাময়িকভাবে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা না গেলে ওই সময়ের জন্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে এবং ত্রুটিমুক্ত হওয়ার পর সেসব তথ্য সফটওয়্যারে ধারণ করতে হবে।  

এনবিআরের আদেশে আরো বলা হয়েছে, যেসব মূসক নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ইতোপূর্বে কমিশন অনুমোদিত সফটওয়্যার স্থাপন করেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রযোজ্য বৈশিষ্ট্য প্রতিপালনপূর্বক মূল্য সংযোজন কর আইন-১৯৯১ ও মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১-এর সর্বশেষ বিধি-বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও হালনাগাদ করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমিটির নিকট আবেদন করতে হবে। কমিটি স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত মনে করলে সফটওয়্যারটি প্রয়োজনীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রয়োজন অনুসারে এনবিআর সফটওয়্যার তালিকাভুক্তি, তালিকাভুক্তির শর্ত, সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর করণীয় এবং এ সংক্রান্ত উদ্ভূত যেকোনো বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও ব্যাখ্যা প্রদান করতে পারবে। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads