• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
দেশেই তৈরি হবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার

প্রতীকী ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

দেশেই তৈরি হবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২২ অক্টোবর ২০১৮

দেশেই তৈরি করা হবে বিদ্যুৎ বিতরণের প্রিপেইড মিটার। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ও চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি যৌথভাবে এ মিটার তৈরি করবে। এ লক্ষ্যে গতকাল রোববার বিদ্যুৎ ভবনে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠনের চুক্তি সই হয়েছে।

চুক্তিতে পিডিবির সচিব আবদুল মোতালেব এবং হেক্সিংয়ের পক্ষে চেয়ারম্যান জো ইয়াং চেং সই করেন। এ সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির চেয়ারম্যান জো ইয়াং চেং, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মাকসুদা আক্তার, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, দেশে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারের জন্য খুলনার সাচিবুনিয়ায় ভাড়া করা ফ্যাক্টরিতেই কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। তবে এই উদ্যোগকে আরো সম্প্রসারিত করে ভবিষ্যতে বড় পরিসরে মিটার তৈরির কারখানা করা হবে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম নেওয়া হয়েছে। অন্য কোম্পানিকেও তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক কোম্পানি এগিয়ে এলে মিটারের দাম কমে আসবে। প্রতিযোগিতার বাজার তৈরি হবে।’

বিদ্যুৎ সচিব কায়কাউস বলেন, দেশে মিটার তৈরির মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতের নতুন যুগের সূচনা হলো। আমরা শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনে নজর দিচ্ছি না, যন্ত্রপাতি বানানোতেও মনোযোগ দিচ্ছি। এটা শুরু। আমরা আরো এগিয়ে যাব।

তিনি আক্ষেপ করে জানান, তিনি ডেসকোর চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই মিটার বানানোর প্রকল্প নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। ওজোপাডিকো উদ্যোগ নেওয়ায় তাদের অভিনন্দন জানান বিদ্যুৎ সচিব।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক উদ্দিন বলেন, জানুয়ারি থেকেই মিটার উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর আগে সব মিটারই আমদানি করা হতো। এখন থেকে আমদানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় রাষ্ট্রীয় অর্থের সাশ্রয় হবে।

তিনি আরো বলেন, ধীরে ধীরে সব গ্রাহকের আঙিনায় প্রিপেইড মিটার বসানো হবে। এতে ব্যবহারের আগেই গ্রাহককে বিদ্যুতের বিল দিতে হবে। ফলে বিদ্যুৎ বিল শতভাগ আদায়ের পাশাপাশি বিল তৈরি ও সরবরাহ ব্যয় কমে যাবে। ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলো দুই দিক থেকে লাভবান হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, এখন দেশে মোট বিদ্যুতের গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লাখ। কিন্তু প্রিপেইড মিটার বসানো হয়েছে মাত্র ১৫ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহকের আঙিনায়। সরকার বিতরণ কোম্পানিকে যে লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে ৭৫ লাখ গ্রাহকের আঙিনায় মিটার বসাতে হবে। অর্থাৎ সরকারের পরিকল্পনা সফল করতে হলে ২ বছরে ৫৯ লাখ ২০ হাজার গ্রাহকের আঙিনায় মিটার বসাতে হবে। কিন্তু এত অল্প সময়ে এত বেশি মানুষের ঘরে ঘরে প্রিপেইড মিটার বসানো সম্ভব নয় বলে মনে করা হয়।

ওয়েস্টজোন ও হেক্সিং যৌথভাবে যে সমীক্ষা চালিয়েছে তাতে দেখা যায়, প্রতিটি মিটার আমদানি করতে এখন ব্যয় হচ্ছে সাড়ে চার হাজার টাকা। কিন্তু দেশে তৈরি করা হলে প্রতি মিটারের দাম পড়বে চার হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি মিটারে সাশ্রয় হবে ৫০০ টাকা। তবে উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হলে আরো কম খরচে মিটার উৎপাদন সম্ভব।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একেবারে নতুন হওয়ায় বাংলাদেশে প্রিপেইড মিটারের বড় বাজার রয়েছে। তিন কোটি গ্রাহক আর চার হাজার টাকা ধরে হিসাব করলেও দেশে প্রিপেইড মিটারের ১২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে। বিপুল সম্ভাবনাময় এই খাতে মিটারের সব জোগানই এত দিন বাইরে থেকে আসত। এখন এর আংশিক দেশেই উৎপাদিত হবে। অন্য বিতরণ কোম্পানি মিটার উৎপাদনে এগিয়ে এলে দেশেই সব মিটার উৎপাদন সম্ভব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads