• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আয় বাড়বে প্রায় ৯ কোটি

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আয় বাড়বে প্রায় ৯ কোটি

প্রতীকী ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

অর্থনৈতিক করিডোর নিয়ে এডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আয় বাড়বে প্রায় ৯ কোটি

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ০৬ জানুয়ারি ২০১৯

বর্তমান ব্যবস্থাপনায় ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বছরে অর্থনৈতিক উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার। পরিকল্পনার উন্নয়নের মাধ্যমে এ অঞ্চলের বার্ষিক আয় ১৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা সম্ভব। এর জন্য বছরে বিনিয়োগ করতে হবে ৪৬৬ কোটি ডলার।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে এ অঞ্চলের বার্ষিক আয় বাড়বে ১০ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। বর্তমান বাজারমূল্যে এর পরিমাণ প্রায় ৮ লাখ ৬৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। একই সঙ্গে অঞ্চলটিতে অতিরিক্ত আড়াই কোটি মানুষের কর্মসৃজন সম্ভব হবে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে। অর্থনৈতিক করিডোরের মাধ্যমে উন্নয়ন সম্ভাবনা শীর্ষক প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে এডিবি। এতে বলা হয়েছে, সমন্বিতভাবে উন্নয়ন করা গেলে ২০৫০ সাল নাগাদ শুধু এই অঞ্চলটি সাড়ে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের অঞ্চলে পরিণত হবে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্মসংস্থান বাড়বে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের। এ লক্ষ্য পূরণ করতে হলে আগামী ৩০ বছরে অন্তত ১৪ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় বিনিয়োগের পরিমাণ ১১ লাখ কোটি টাকার বেশি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কাঠামোগত রূপান্তর এবং আঞ্চলিক সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নের মতো উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এর মাধ্যমে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন হবে। সেই সঙ্গে কমে আসবে গ্রাম-শহরের অর্থনৈতিক ব্যবধান। অভ্যন্তরীণ বাজারব্যবস্থা উন্নত হবে এবং বৈশ্বিক ভ্যালু চেইন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়া সহজ হবে।

এতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো গড়ে ওঠেনি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। খুলনা বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহৎ শহর। নৌ-বন্দর সুবিধা থাকায় এই অঞ্চল বাণিজ্যের অন্যতম প্রবেশদ্বার হতে পারে। এজন্য দ্রুত অবকাঠামো অগ্রগতির মাধ্যমে বহুমুখী পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। উৎপাদন কেন্দ্র এবং বর্ধিঞ্চু চাহিদার কেন্দ্র হিসেবে বিনিয়োগকারীদের কাছে এই করিডোর আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে বৃহৎ বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে করিডোরের সংযোগ স্থাপনও সম্ভব হবে।

ইকোনমিক করিডোর স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রফতানি বহুমুখীকরণ করা সম্ভব হতে পারে বলেও ধারণা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। এতে বলা হয়েছে, দেশের তৈরি পোশাক খাতের সফলতার পরে অন্য খাতেও উন্নতি প্রয়োজন। পরিকল্পনায় ১৪টি খাতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন বিশেষ করে মৎস্য ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, তৈরি পোশাক, বাইসাইকেল, অটোমোবাইল, শিপ বিল্ডিং, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়াজাত পণ্য, আসবাব পণ্য, গ্লাস, সিরামিক, প্লাস্টিক, টায়ার প্রস্তুত কারখানা উল্লেখযোগ। বাংলাদেশের বর্তমান শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থায় দেশীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে মনযোগী হতে হবে। এজন্য এসব শিল্প গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে। যাতে অভ্যন্তরীণ কাঁচামাল ব্যবহার বেশি করা যায়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন উন্নয়নশীল বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই। এখানে নগরায়ন ও শিল্পায়ন আলাদা দুই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এজন্য অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদেরও অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে অঙ্গীকার প্রয়োজন।

অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে সরকারের নানা পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এ জন্য পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রয়েছে। এখন প্রয়োজন এগুলোর সময়ভিত্তিক বাস্তবায়ন।

সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়, অর্থনৈতিক করিডোরকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে আগামী ৩০ বছরে রূপান্তরিত অবকাঠামো খাতে অন্তত ১৪ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পার্শ্ববর্তী নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ আরো শক্তিশালী করবে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads