• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

অর্থ ও বাণিজ্য

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আবার বাজারমুখী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ অক্টোবর ২০২০

দেশের উভয় শেয়ারবাজারে ফের চাঙাভাব দেখা যাচ্ছে। এর ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাজারমুখী হচ্ছেন। বাজারে যেমন সূচক বাড়ছে, আবার  লেনদেনও বাড়ছে। এভাবে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে শেয়ারবাজার।

ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ৪৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে কমেছিল ৭৮ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট। অর্থাৎ টানা দুই সপ্তাহে ১২৩ পয়েন্ট কমার পর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪১ পয়েন্ট বাড়ল।

প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বেড়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচক। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ২০ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৪ দশমিক ১৭ পয়েন্ট । আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ২১ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছিল ১ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট।

মূল্য সূচকের উত্থান হলেও গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২৫টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৩টির। আর ৫১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও বাজারে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাত। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ ১০টি স্থানের ৯টিই দখল করেছে বিমা খতের কোম্পানি। সপ্তাহজুড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে পছন্দের শীর্ষ ছিল গ্লোবাল ইনস্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়েই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ার মূল্যে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্য দিয়ে গত সপ্তাহ পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা হারালেন বিনিয়োগকারীরা।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহেও বাজার মূলধন কমেছিল ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহে কমে ৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এই হিসাবে টানা তিন সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৪৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৬৭১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৭৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বা ২৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ২৪০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৩৫৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৮৮২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সিন্ডিকেট তৈরি না হলে বাজারের ক্ষতি হয় না। এ জন্য সিন্ডিকেট করে কেউ যাতে অনিয়ম করতে না পারে, সে জন্য সজাগ থাকতে হবে। আর বাজারে দীর্ঘ মেয়াদের বিনিয়োগ আসা দরকার। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগ আসলে বাজারে ছোট বিনিয়োগকারীরা সাহস পান। তিনি বলেন, সুশাসন থাকলেও ছোট বিনিয়োগকারীরা সাহস পান।  তবে বাজার এখন অনেকটাই সুশাসনে ফিরছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে বাজারে নতুন  আসা ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের বিডিংয়ে দাম প্রস্তাবের বিষয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের (ইলিজিবল ইনভেস্টর) কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে তাদের দাম প্রস্তাবের বিষয়টি বিএসইসির নীতিমালা অনুসারে হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু ওয়ালটন নয়, পরবর্তীতে অন্য কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে একই ব্যবস্থা। গত বুধবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads