হাসান সাইদুল
পুরো নাম সৈয়দ হাসানুর রহমান। হাসান নামেই অধিক পরিচিত তিনি। নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পীর গান এখনো মানুষের মুখে মুখে। তিনি ১৯৯৬ সালে ব্যান্ড আর্কে ভোকালিস্ট হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে ‘তাজমহল’ নামে আর্কের একটি অ্যালবাম প্রকাশ হয়। এই অ্যালবামে তার গাওয়া গানগুলো ছিল তার নিজের লেখা এবং সুর করা। ১৯৯৮ সালে ‘জন্মভূমি’ অ্যালবামের গানগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
হঠাৎ গান থেকে উধাও! কারো প্রতি কোনো অভিমান আছে কি না? উত্তরে তিনি জানান, কোনো অভিমান নেই। দর্শক শ্রোতাদের নতুন কিছু দিতে না পারলে গণমাধ্যমে শিরোনাম হওয়ার কোনো মানে হয় না।
গান গাইব, শিল্পী হব এমন চিন্তা কখনো করিনি— উল্লেখ করে সঙ্গীতে আসার যাত্রা সম্পর্কে হাসান বলেন, ‘আমি অনেক দেরিতে গান শুরু করি। আমি সাংস্কৃতিক বিভিন্ন অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এক স্কুলবন্ধু বলল আমার কণ্ঠে একটা সুর আছে। ক্লাস টেনের দিকের কথা। বন্ধুরা অনেক উৎসাহ দিত আমাকে। এভাবেই আমার গান গাওয়ার প্রথম ইচ্ছা হলো। তবে শুদ্ধ বাংলা গান গাওয়ার ইচ্ছা ছিল। এই জন্য আমি পল্লীগীতির ওপর একটা ডিপ্লোমা কোর্স করেছি।’
হাসান সর্বশেষ নতুন গান করেন ২০১৫ সালে। তারপর থেকে নতুন কোনো গানে তাকে পাওয়া যায়নি। সত্যি কি গান ছেড়ে দিয়েছেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে গানকে আমি ছাড়িনি। গানও আমাকে ছাড়েনি। হয়তো নতুন কোনো গান করছি না কিন্তু গানের সঙ্গেই আছি। এখনকার যুগে শ্রোতা চাহিদা অনেক পরিবর্তন। মিউজিক বিশ্বও এখন অনেক এগিয়ে গেছে। এখন আবার অনুভব করি যে, কিছু একটা করা উচিত। এমন কিছু করব যা দর্শক শ্রোতাদের আনন্দ দেবে। অনেক নতুন কিছু শিখছি। শ্রোতাদের নতুন কিছু দেওয়ার সময় এসেছে। খুব শিগগির শ্রোতারা আমার গান পাবে।
বাংলাদেশে পশ্চিমা ধাঁচের গান সুর ও সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করেন হাসান। অবাক করা বিষয় জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী হাসানের গাওয়া গান অন্তত দুই শতাধিক। কিন্তু তার একক অ্যালবাম মাত্র একটি। আর্কের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই আমরা আবার শ্রোতাদের মধ্যে আসব। তখন সেটা ভালো করে বোঝা যাবে। সব প্রশ্নের উত্তর পাবে দর্শক শ্রোতারা। আমরা নিয়মিত শো করছি। ভালো গান তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
গান কতকাল আর গান থাকবে! গান তো এখন মিউজিক ভিডিও কিংবা কন্টেন হয়ে গেছে বলতেই তিনি বলেন, গান শোনার বিষয়। গান গানই থাকবে তবে সিনিয়রদের একটু কাজ করতে হবে। নতুনদের বোঝাতে হবে, তাদের সঠিক রাস্তা দেখাতে হবে। তরুণরাও একটু সচেতন হতে হবে গানের ভিতর একটি দেশের ঐতিহ্য নিহিত থাকতে পারে এটা নতুনদের ভাবতে হবে। গান হূদয়কে আনন্দ দেয় অথবা পিছনের কথা মনে করিয়ে দেয়। কনন্টেন কিংবা মিউজিক ভিডিওর কথা বলছ- ওটা তো গানের বাইরের একটি গল্প দেখে মানুষ। গান গানের জায়গায় ফিরে আসবে আমি আশাবাদী। দর্শক শ্রোতারা যেমনটি চায় ঠিক সেই গানের স্বাদ আবার বাংলা গানে আসবে বলে আমি আশাবাদী।