• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বিনামূল্যে প্রজেক্টর

হাতে গোনা কয়েকটি সিনেপ্লেক্স ছাড়া দেশের বেশিরভাগ প্রেক্ষাগৃহ চলছে পুরনো পদ্ধতিতে

ছবি : ইন্টারনেট

আনন্দ বিনোদন

বিনামূল্যে প্রজেক্টর

  • সোহেল অটল
  • প্রকাশিত ২৩ জুন ২০১৮

ডিজিটাল হতে হতেও পুরোপুরি ডিজিটাল হতে পারছে না দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো। হাতে গোনা কয়েকটি সিনেপ্লেক্স ছাড়া দেশের বেশিরভাগ প্রেক্ষাগৃহ চলছে পুরনো পদ্ধতিতে। সেই পদ্ধতিতে কয়েক বছর আগে শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে ঢুকেছে ডিজিটাল সিনেমা প্রজেকশন সিস্টেম। এই ব্যবসা একচেটিয়া ছিল জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাতে। এবার নতুন কৌশলে তাতে ভাগ বসাতে যাচ্ছে লাইভ এসকে টেকনোলজিস।

বাংলাদেশের নতুন এই কোম্পানি দেশের সব প্রেক্ষাগৃহে স্থাপন করতে যাচ্ছে ডিজিটাল সিনেমা প্রজেকশন সিস্টেম। জানা গেছে, লাইভ এসকে টেকনোলজিস সম্প্রতি ‘শর্ত সাপেক্ষে’ বাংলাদেশের সব প্রেক্ষাগৃহে বিনামূল্যে আধুনিক প্রজেক্টর, সাউন্ড সিস্টেম ও সার্ভার মেশিন বিতরণ শুরু করেছে। শর্তটা জানতে চাইলে লাইভ এসকে টেকনোলজিসের ডিরেক্টর ইয়াসির আরাফাত বাংলাদেশের খবরকে বলেন, আমরা যে যন্ত্রটি প্রেক্ষাগৃহে দিচ্ছি সেটার যেন সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে, তার দায়দায়িত্ব হল মালিককেই নিতে হবে— শর্তটা এমন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের ব্যবসা উন্নয়নের জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি। ৩৫ এমএম-এর সময় হলে সিনেমা প্রদর্শনের জন্য প্রযোজককে টাকা দিতে হতো না। এখন দিতে হয়। একটি সুপারহিট চলচ্চিত্রের জন্য একজন প্রযোজককে গুনতে হয় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, প্রদর্শন মেশিনের ভাড়ার জন্য অনেক হল মালিক ছবি চালাতে পারেন না। এতে করে দিন দিন হলের সংখ্যাও কমছে। সাধারণ প্রযোজক ও হল মালিকদের কথা ভেবেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।

লাইভ এসকে টেকনোলজিসের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর তামজিদ-উল-আলম অতুল বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। শ্রদ্ধেয় মিয়া ভাই (নায়ক ফারুক) সাহেবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনা করেছি হল মালিক সমিতি, প্রদর্শক, বুকিং এজেন্ট সমিতি এবং বিশিষ্ট প্রযোজকদের সঙ্গেও। তার দাবি, লাইভ এসকে টেকনোলজিসের সার্ভার থেকে কোনোভাবে মুভি পাইরেসি করা সম্ভব নয়। অতুল বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে আমরা আরো নতুন কিছু করার চিন্তা করছি। এর মধ্যে আছে ই-টিকেটিং, হলের পর্দা পরিবর্তন ও মহিলাদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করা। বিনামূল্যে প্রজেক্টর বিতরণের মাধ্যমে লাইভ এসকে টেকনোলজিসের কী লাভ- এমন প্রশ্নে কোম্পানির মিডিয়া অ্যাডভাইজর চলচ্চিত্র পরিচালক অনন্য মামুন বলেন, বিনিময়ে আমরা প্রেক্ষাগৃহে বিজ্ঞাপন চালাব। এ ব্যাপারে হল মালিকদের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছে।

লাইভ এসকে টেকনোলজিসের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশের নতুন ছবির জন্য প্রযোজককে ‘মাস্টারিং চার্জ’ বাবদ এককালীন ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। আমদানি, যৌথ প্রযোজনা ও বিদেশি ছবির জন্য দিতে হবে ২ লাখ টাকা। পুরনো বাংলাদেশি ছবির জন্য কোনো মাস্টারিং চার্জ লাগবে না।

দেশে একই ব্যবসার অগ্রপথিক জাজ মাল্টিমিডিয়ার শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে ডিজিটাল প্রজেক্টর বসানো রয়েছে। তবে তাদের প্রজেক্টর বিনামূল্যে দেওয়া হয়নি। প্রজেক্টর বসানোর বিনিময়ে হল মালিকদের কাছ থেকে তারা প্রত্যেকটা শো’র প্রতিটা টিকেট থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পায়। নতুন কোম্পানির ‘বিনামূল্য অফার’কে স্বাগত জানিয়ে জাজ মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ বলেন, আমরা চাই আরো কোম্পানি আসুক। চলচ্চিত্র উন্নয়নে কাজ করুক। লাইভ এসকে টেকনোলজিসের ব্যবসায়িক কৌশল প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের জন্য সুবিধার হলেও নিজেদের জন্য চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন না আবদুল আজিজ। তিনি বলেন, প্রয়োজনে আমরাও ব্যবসায়িক কৌশল পরিবর্তন করব। এখনই চূড়ান্ত কিছু বলতে পারছি না; আলোচনা করে জানাব।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads