• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বয়স বিভ্রান্তি!

অভিনেত্রী জয়া আহসান

সংরক্ষিত ছবি

আনন্দ বিনোদন

বয়স বিভ্রান্তি!

  • সোহেল অটল
  • প্রকাশিত ১২ জুলাই ২০১৮

মেয়েদের বয়স জানতে চাইতে নেই। সুন্দরী হলে তো আরো নেই। এমন একটা ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত।

ধারণাটা পশ্চাৎপদ। মধ্যযুগীয়। কিন্তু এই পশ্চাৎপদ ধারণাকেই মনেপ্রাণে ধারণ করেন অনেক শোবিজ তারকা। নিজের বয়স নিয়ে চলে টালবাহানা। যৌবনে খানিক ভাটা পড়ে গেলে বয়স নিয়ে চলে রীতিমতো লুকোচুরি। যারা নিজেদের আসল বয়স জানাতে চান না, তাদের জন্যও ব্যাপারটা বিব্রতকর। এখন সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম জন্মতারিখের ব্যাপারটাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সাধারণের মধ্যেও জন্মদিন, তারিখ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। তবে শোবিজ-সুন্দরীরা এখনো রয়েছেন পশ্চাৎপদ ধারণা আঁকড়েই। বেশিরভাগই প্রকৃত বয়স জানাতে চান না। তাতে যদি ‘বুড়িয়ে যাওয়া’ ধরা পড়ে যায়!

বয়স বিভ্রান্তির সাম্প্রতিক নজির হয়ে থাকল বাংলাদেশের শীর্ষ অভিনেত্রী জয়া আহসানের বেলায়। গত ১ জুলাই ছিল এই শিল্পীর জন্মদিন। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে- কত হলো জয়ার বয়স?

যেহেতু জয়া নিজে স্বীকার করছেন না, তাই বিভিন্ন মাধ্যম ঘেঁটে জানা যাচ্ছে তার বয়স ৪৪ কিংবা ৪৬। জয়ার সহকর্মীদের দেওয়া তথ্যতেও তার বয়স এমনই। সংবাদমাধ্যমেও খবর বের হচ্ছে ৪৪-এর জয়াকে নিয়ে। তাতেই ক্ষেপেছেন এই শিল্পী। তার মতে, বয়সটাকে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। ইচ্ছে করে লোকজন জয়ার সঙ্গে শত্রুতা করছে। তাকে ‘বুড়ি’ বানানোর ফন্দি আঁটছে!

জয়া তার ক্ষোভ উগরেছেন ফেসবুকে। নাতিদীর্ঘ এক বক্তব্যে ইনিয়ে-বিনিয়ে জানিয়েছেন তার বয়স আসলে অতটা নয় যতটা বলা হচ্ছে। জয়া লিখেছেন- “ইদানিং ২/১টি বিষয় আমাকে কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে ইদানিং বেশ কয়েকজন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা/উইকিপিডিয়ার তথ্যসূত্র টেনে আমার বয়স নিয়েও বেশ চর্চা করছেন। বলা হচ্ছে, আমার বয়স নাকি ৪৬! গুজব-গুঞ্জন আমি বরাবরই খাবারের লবণের মতো উপভোগ করে গিয়েছি। দু-একজন সমবয়সী কিংবা আমার চেয়ে বয়সে বড় শ্রদ্ধাভাজন সহকর্মী (বিশেষ করে বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী) গণমাধ্যমে নিজেদের অধিকার মনে করে আমার বয়স (ভুল তথ্য) নিয়ে চর্চা করেছেন- বিষয়টি মজার। তাই এতদিন উপভোগ করেই গিয়েছি। তবে খুব সম্ভবত আমার চুপ থাকাটাকে অনেকে ‘মৌনতা সম্মতির লক্ষণ’ হিসেবে ধরে নিয়েছেন। নিন্দুকেরাও ‘অস্ত্র’ হিসেবে আমার বয়সের ভুল তথ্য প্রচার করে আনন্দ পাচ্ছেন।”

কথিত নিন্দুকদের একহাত নিয়ে জয়া জানিয়েছেন, ৪৬ বছর আগে তার বাবা-মায়ের বিয়েই হয়নি। তাহলে তার বয়স ৪৬ হয় কী করে?

যৌক্তিক কথা! ক্ষেপে যাওয়ার মতো কারণ তো অবশ্যই আছে। তাহলে জয়ার জন্মটা হলো কবে? তার বয়সটাও বা কত?

ফেসবুকে জয়ার নাতিদীর্ঘ পোস্টে এ ব্যাপারটা কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি একগাদা তথ্য দিয়ে বাবার নাম, জন্মস্থান, ভাইবোনের সংখ্যা ইত্যাদি জানিয়েছেন। কিন্তু নিজের বয়সটা জানাতেই তার যত অনীহা। ওদিকে তিনি মোটেই পা বাড়াননি।

কেউ নিজের বয়স লুকালে তাকে জোর দিয়ে কিছু বলার থাকে না। ‘ব্যক্তিগত অধিকারের’ তালিকায় ওটা ফেলে দিতে হয়। কিন্তু একজন তারকার প্রকৃত জন্মতারিখটা জানার অধিকারকেও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। বয়স লুকিয়ে লাভ কী? দুই-চার বছর বেশি বেঁচে থাকা যায়? বরং জয়া এই বয়সেও যেভাবে পূর্ণ-যৌবনা অভিনেত্রীদের সঙ্গে টক্কর দিয়ে অভিনয় করে যাচ্ছেন, সেটাই তো সাধুবাদ পেতে পারে!

কে শোনে কার কথা! জয়া সব জানাবেন, নিজের জন্মতারিখ জানাবেন না। অথচ জগৎ জুড়ে শোবিজ তারকাদের বয়স লুকানোর এই খেলা আর কোথাও নেই। জয়া এখন যেখানে নিয়মিত কাজ করছেন, সেই টালিগঞ্জেও নেই। বলিউড-হলিউডের কথা না-ই বললাম। ওখানে বরং নিজের প্রকৃত জন্মতারিখ প্রকাশ করাটাই নিয়ম।

শোবিজ তারকারা যতদিন নিজের বয়স নিয়ে লুকোচুরি খেলবেন, ততদিন ‘নিন্দুকেরা’ তাকে নিয়ে লুকোচুরি খেলবেন। এটা স্বাভাবিক। এটাতে ক্ষেপাক্ষেপির কিছু নেই। বরং সর্বোত্তম উপায়ই হলো সততা। সততার সঙ্গে নিজের আসল বয়সটা প্রকাশ করে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়!

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads