• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
আন্দোলনকারীদের পাশে শোবিজকর্মীরা

সশরীরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শামিল হন মুনিরা মিঠু ও আবদুল্লাহ রানা

সংরক্ষিত ছবি

আনন্দ বিনোদন

আন্দোলনকারীদের পাশে শোবিজকর্মীরা

  • প্রকাশিত ০২ আগস্ট ২০১৮

রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর নিহতের ঘটনায় গত কয়েক দিন ধরেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন শোবিজ জগতের অনেকেই। সেসবের খোঁজ জানাচ্ছেন আল কাছির-

অভিনেত্রী মুনিরা মিঠু ও অভিনেতা আবদুল্লাহ রানা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। উত্তরার হাউজ বিল্ডিং এলাকায় ‘বিচার শুধু মুখে নয়, বাস্তবে দেখতে চাই’ লেখা পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামেন তারা। নিজের ফেসবুক পোস্টে আবদুল্লাহ রানা লিখেছেন, ‘আছি আমাদের ছেলেমেয়েদের পাশে। হাউজ বিল্ডিং থেকে আবদুল্লাহপুর। আপনারা?’

ছাত্রদের দাবির পক্ষে জোর সমর্থন দিয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী কোনাল। লম্বা এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘কণ্ঠশিল্পীর গান, অভিনয়শিল্পীর অভিনয়, সাংবাদিকের লেখনী, কিংবা বাদ্যযন্ত্রীর যন্ত্র এক ঘণ্টা থেমে থাকলে হয়তো অনেক ক্ষতি হবে। কিন্তু তার চেয়েও যে বেশি ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে দেশে, আমাদের পরিবারে, আমাদের মনুষ্যত্ববোধে! আপনারা সমাজের ভীষণ দায়িত্বশীল ভূমিকায় আছেন। তাই, আপনাদের একটি কথা, একটি শব্দ, একটি অনুরোধ, হয়তো পৌঁছে যেতে পারে সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গায়। চলুন না মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের পেছনে না বসে, ছোট্ট এই ভবিষ্যৎগুলোর সঙ্গে দাঁড়াই! আমরা যা করতে পারিনি, তারা তো করছে সাহসিকতার সঙ্গে! তাদের আরেকটু সাহস জোগাই!’

ক্লোজআপ ওয়ান তারকা পুলক অধিকারীও দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। ফেসবুকে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘এতদিন ছিলাম ডিজিটালি আজ থেকে থাকব রাস্তায় ছাত্রদের সাথে। আমরা বিচার চাই।’

নির্মাতা শ্রাবণী ফেরদৌস তার ওয়ালে ছাত্রদের আন্দোলনের একটি ছবি আপলোড করে লিখেছেন, ‘নতুন নতুন কবিতা লেখা হচ্ছে। জেগে ওঠা পাখি সব। প্লিজ ওদের পরিচর্যা করুন। নয়তো সব ধ্বংস হয়ে যাবে।’

‘সাথে আছি ভাই তোদের’ বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে নিজের ফেসবুকে এমনটাই লিখেছেন চিত্রনায়ক নিরব।

ছাত্রদের বিক্ষোভের কারণে মঙ্গলবার রাস্তায় জ্যামে বসে ছিলেন চিত্রনায়িকা ববি। আন্দোলনের প্রতি তিনিও সমর্থন জানিয়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘দুপুর থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত রাস্তায় জ্যামে বসে ছিলাম। জ্যামে বসে মনে মনে খুব গর্ববোধ করছিলাম এই ভেবে, এখনো আমরা মরে যাইনি, সবাই অমানুষ হয়ে যাইনি। এখনো আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাই এক হয়ে প্রতিবাদ করতে পারি।’

অভিনেতা কাজী রাজু লিখেছেন, ‘আমার সন্তান রাস্তায় তাই আমিও ওদের সাথে রাস্তায় আছি।’

বাচ্চাদের গায়ে হাত না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন চিত্রনায়ক ওমর সানী। এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘তারা কোনো আসনের নমিনেশন পাবার জন্য পথে নামে নাই। তাদের দাবি পথের নিরাপত্তা কেবল। এই দেশের পরবর্তী কর্ণধার এই বাচ্চারাই। এখনো অনেক বাচ্চা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বাচ্চাদের মাথায় লাঠির আঘাত নয়, ভরসার হাত রাখুন। মা-বাবাদের পথে নামতে বাধ্য করবেন না দয়া করে। ওরা আমাদের সন্তান। নাড়িছেঁড়া ধন! জারজ নয়!’

এদিকে উল্টো পথে আসা মন্ত্রীর গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ায় ছাত্রদের ‘বাঘের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেছেন অভিনেত্রী নওশীন।

চিত্রনায়ক শিপন ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আন্দোলনের পক্ষে।’

দেশের অন্যতম সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু বাসচাপায় শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যার যায় শুধু সেই জানে জীবনে কী হারায়। অন্য কারো বোঝার কোনো উপায় নাই।’

শিক্ষার্থীদের ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ফারুকী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কিছু প্রতিবাদী ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘এই রকম যাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, ইতিহাস চেতনা, আর ডিটারমিনেশন, তাদেরকে ট্রাক উঠিয়ে, মাস্তান পাঠিয়ে, পুলিশ দিয়ে কোনোভাবেই দাবায়ে রাখা সম্ভব না। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা। তরুণ প্রযুক্তিবিদ, প্রকৌশলী এবং পরিবহন খাতের অভিজ্ঞ লোকজন নিয়ে বানানো কমিটি। পরিবহন খাতের মাফিয়াতন্ত্র ধ্বংস করবে যে কমিটি, নিরাপদ সড়কের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর নতুন দিনের নিয়মনীতি বানাবে যে কমিটি।’

অভিনেত্রী বন্যা মির্জা ৩১ জুলাই সন্ধ্যায় তার এক পোস্টে লেখেন, ‘কাল ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যামে থেমে পড়েছিল ঢাকা। তবু পথচলতি মানুষেরা কেউ বিরক্ত হননি একটুও। যেন বা আজকের ট্রাফিক জ্যাম ও কয়েক ঘণ্টা থেমে থাকা ঢাকা নগরী আমাদের জন্য খুব জরুরি ছিল।’

প্রশাসন কি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গেছে? এমন প্রশ্নই করেছেন সঙ্গীতশিল্পী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন। তিনি লিখেছেন, ‘সৌদি আরবের বিচার ব্যবস্থা প্রয়োগ করা যায় না এই খুনি ড্রাইভারগুলোর উপর? হাতের বদলে হাত, চাকার নিচে পিষে খুনের বদলে চাকার নিচে পিষে ফেলা! এই প্রজন্মের কিশোর ছেলেমেয়েগুলোকে স্যালুট। তোমাদের দেখে লজ্জায় শরমে মরে যাক দায়িত্বে অবহেলা করা প্রশাসন।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads