• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
বাংলা গানের দুর্দশা কাটছে না

দেদার পয়সা খরচ করে তৈরি হচ্ছে গান। তবু বাংলা গানের দুর্দশা কাটছে না

সংগৃহীত ছবি

আনন্দ বিনোদন

বাংলা গানের দুর্দশা কাটছে না

  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রাফিউজ্জামান রাফি

একসময় চলচ্চিত্র আর অ্যালবাম ছাড়া অন্য কোথাও গান ব্যবহারের কথা যেখানে কেউ ভাবতে পারত না, সেখানে বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে গান ব্যবহারের ক্ষেত্রগুলো বেড়েছে। আজকাল চলচ্চিত্র ও অ্যালবামের পাশাপাশি নাটক, শর্টফিল্ম গান ছাড়া চিন্তা করা যায় না। আর আজকাল প্রচুর নাটক ও শর্টফিল্ম নির্মিত হচ্ছে। সেই সূত্রে আগের তুলনায় গান নির্মাণও বেশি হচ্ছে। কিন্তু তারপরও বর্তমান সময়ের আমাদের দেশের গানের বাজার খুবই দুস্থ বলে পরিচিত সবার কাছে।

এখনো গানের সোনালি দিন বলতে অতীতের সেই চলচ্চিত্র ও অ্যালবামনির্ভর সময়ের কথা মনে করে আফসোস করি। সঙ্গীত-সংশ্লিষ্ট সবার মুখে এই আফসোস। আবার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দিক থেকেও এই আফসোস। এদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের অলিতে-গলিতে এই আফসোস। অথচ এখন তো ভালো থাকার কথা সঙ্গীতের। ভালো থাকার কথা সঙ্গীত পরিচালক, সঙ্গীতশিল্পীসহ সংশ্লিষ্টদের। পাশাপাশি ভালো গান আসার কথা। কেননা গান তৈরি বেড়ে যাওয়া মানে তো সঙ্গীত-সংশ্লিষ্ট সবার ভালো থাকার কথা। সঙ্গীতের বাজারে ধনাঢ্য অবস্থা বিরাজ করার কথা। কিন্তু আদৌ কি তা হচ্ছে? কেউ তো বলছে না গানের বাজার ভালো! সবার মুখেই এক কথা, ‘বাংলা গানের দুর্দশা চলছে।’ তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

বাংলা গানের প্রচলিত নিয়মের উল্টোপথে চলার মূল রহস্যটি কোথায়? গান ব্যবহারের ক্ষেত্র বাড়ার পরও বাংলাদেশে গানের এই দুর্দশাই বা কেন? আজো একজন সঙ্গীত পরিচালক গানকে পেশা হিসেবে নিয়ে নিশ্চিন্ত জীবনযাপন করতে পারেন না। আর গীতিকারদের কথা না-ই বলি। কেননা গান লেখা পেশা হিসেবে নেওয়া তাদের জন্য যেন এদেশে দুঃস্বপ্ন দেখার দুঃসাহস। সবার মুখেই একই কথা, গানের বাজার ভালো না। সমস্যা কি ক্যাসেটের যুগ বিলীন হয়ে যাওয়া? ইউটিউব এখনো দেশব্যাপী প্রচলিত না হওয়া? প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানদের সাধারণত এ কথাই বলতে শোনা যায়। কিন্তু শুধু ইউটিউবই কি গান বেচে টাকা আয়ের একমাত্র পথ? ইউটিউব ছাড়াও আরো অনেক ডাউনলোড সাইট রয়েছে, সেখানেও তো গানগুলো থেকে আয় করে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া বিভিন্ন সিম কোম্পানির সঙ্গে গান-সংশ্লিষ্ট ব্যবসা তো রয়েছেই। দেখা যাচ্ছে গান ব্যবহারের ক্ষেত্রর পাশাপাশি গান দিয়ে ব্যবসা করার ক্ষেত্রগুলোও বেড়েছে। তবুও কেন বাংলা গানের এই দুর্দশা?

একটি কথা মনে পড়ে গেল, আমাদের দেশে দেখা যায় মানুষ একটু আয়টা বাড়াতে, পরিবারকে একটু বেশি ভালো রাখতে বিদেশ যায় ভাগ্য পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে। অধিকাংশকেই প্রবাস যাপন করে ভাগ্য ফেরাতে দেখা যায়। কিন্তু কতিপয় প্রবাসীদের দেখা যায় আজীবন প্রবাস যাপন করেও ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না, পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে সক্ষম হয় না। তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা প্রচলিত আছে। তা হলো- বিদেশ সবার ভাগ্যে সয় না। আর যাদের ভাগ্যে বিদেশ সয় না, আজীবন প্রবাসে থেকেও তারা ভালো কিছু করতে পারে না, দরিদ্রতার কশাঘাত থেকে বের হতে পারে না। গান ব্যবহারের এত ক্ষেত্র বাড়ার পরও যখন আমাদের দেশের গানের দুরবস্থা কাটছে না তখন আমারও মনে হচ্ছে এদেশের গানের কপালে সৌভাগ্য সয় না। এদেশের গান যেন আজীবন প্রবাস যাপন করেও দারিদ্র্য যাপন করা মানুষগুলোর মতোই পোড়া কপালের অধিকারী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads