• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ত্যাগের ভাঙ্গা পেয়ালায় জীবনকে উপভোগ করতে হবে

কণ্ঠশিল্পী অর্জুন বিশ্বাস

সংগৃহীত ছবি

আনন্দ বিনোদন

ত্যাগের ভাঙ্গা পেয়ালায় জীবনকে উপভোগ করতে হবে

  • প্রকাশিত ১৬ অক্টোবর ২০১৮

জীবনমুখী গানের খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী অর্জুন বিশ্বাস। নিজের লেখা গানে নিজেই সুর তুলছেন, ধারণ করছেন আপন কণ্ঠবীণায়। দেড় যুগের বেশি সময় ধরে নিয়মিত জীবনমুখী গানের চর্চা করছেন, উপহার দিয়েছেন অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান। সামাজিক জীবনে নানা অসঙ্গতি-অন্যায় এবং তা থেকে বাঁচার পথ নির্দেশনাকে উপজীব্য করেই তার সঙ্গীতসাধনা। অর্জুন বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেছেন হাবিব মোস্তফা

গানের এই বিচিত্র সমাহারের মধ্যে জীবনমুখী গানকেই কেন বাছাই করলেন?

- গান আমার কাছে আরাধনার মতো। আত্মদর্শনের আয়নায় জীবনকে যেভাবে অবলোকন করি, যাপিত জীবনের হাসিকান্নাকে যেভাবে লালন করি, তাকে প্রকাশ করার জন্যই মূলত জীবনমুখী গান করি। অন্য কোনো পেশায় তা এত সহজভাবে করা যাবে না বলেই জীবনমুখী গানের আশ্রয় নেওয়া।

শুরুর দিকের সংগ্রামের কথাগুলো যদি বলতেন—

- আসলে একজন মানুষের বেঁচে থাকার গোটা সময়টাই সংগ্রামের ভেতর দিয়ে যায়। আর জীবন ধারণ ও জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে যদি কেউ সঙ্গীতকে বেছে নেয়, তাহলে তো তার সংগ্রামটা আরো ভয়াবহ। শুরুর দিকে আমাদের দেশে জীবনমুখী গানের তেমন কোনো বাজার ছিল না। মানুষ এ ধরনের গান বুঝতো না। সমাজের নিম্নস্তরের মানুষের জীবনস্রোতকে নিয়ে তৈরি গান হলেও ধীরে ধীরে জীবনমুখী গানগুলো সমাজের এলিট সোসাইটির করিডোরে পৌঁছে গেছে। এটা বড় আশার কথা। আর আমার বর্তমান পরিচিতির পেছনে আমি যার নামটি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব, তিনি হলেন নন্দিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ‘হানিফ সংকেত’ দাদা।

জীবনমুখী গান করতে গিয়ে কোনো হুমকি-ধমকি-প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন?

- হুমকি-ধমকি সব যুগেই ছিল। এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অসঙ্গতির বিরুদ্ধে যখনই কেউ আঙুল তুলেছে তার হাত কেটে দেওয়া হয়েছে, সক্রেটিসের মতো ব্যক্তিকে বিষপানের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। জীবনমুখী গানের শিল্পী হিসেবে আমি মনে করি, চোখের সামনে কোনো অন্যায় সংঘটিত হবে আর আমি তা বসে বসে দেখব, তা কখনো হতে পারে না। একজন শিল্পী হিসেবে গানের বাণীতে আমি তার প্রতিবাদ জানাব। প্রতিটি মানুষেরই উচিত স্ব স্ব অবস্থানে থেকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, অন্যকেও প্রতিবাদে উদ্বুদ্ধ করা। অকুণ্ঠ চিত্তে সেই কাজটিই করে যাচ্ছি।

যারা জীবনমুখী গান করছেন, তাদের উদ্দেশে পরামর্শ...

- পরামর্শ দেওয়ার মতো জ্ঞান-গুণ কোনোটাই আমার নেই। শুধু এতটুকু বলব, জীবনমুখী গান করার আগে জীবনকে ভালোভাবে-গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে, ত্যাগের ভাঙ্গা পেয়ালায় জীবনকে উপভোগ করতে হবে, ভেতরে-বাইরে একজন পবিত্র-শুদ্ধ আত্মার মানুষ হতে হবে। তা না করে কেউ যদি আমাদের পাশের দেশের কোনো শিল্পীর গান শুনে তার মতো করে গান গেয়ে নাম কামাই করতে চান, সেই স্বপ্ন কোনোদিনও পূরণ হবে না।

গান নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন...

- যতদিন দেহে প্রাণ আছে, ততদিন গান গেয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করব। আর্থিক সঙ্গতি ও সামর্থ্য হলে ভবিষ্যতে একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads