• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নৌকার প্রচারণায় পাঁচটি গান করেছি

গীতিকবি সুজন হাজং

সংগৃহীত ছবি

আনন্দ বিনোদন

নৌকার প্রচারণায় পাঁচটি গান করেছি

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ নভেম্বর ২০১৮

গীতিকবি সুজন হাজং। সংস্কৃতি অঙ্গনের পরিচিত মুখ। তার লেখা বেশ কিছু আধুনিক ও দেশের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশের শীর্ষ কণ্ঠশিল্পীরা। সম্প্রতি দেশের উন্নয়ন নিয়ে লিখেছেন গান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে সার্কভুক্ত ৬টি দেশের ৮ জন শিল্পীকে নিয়ে অ্যালবাম করছেন।

সংস্কৃতি চর্চার বাইরে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেও রয়েছে তার পরিচিতি। নেত্রকোনা জেলার কৃতী সন্তান ও আদিবাসী জনপদের জনপ্রিয় যুবনেতা সুজন হাজং মাঠে নেমেছেন নৌকার প্রচারণায়। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তার ভাবনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশের খবরের মুখোমুখি হন তিনি-

নৌকার প্রচারণায় কেন মাঠে নেমেছেন?

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার জন্য নৌকার কোনো বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল। এখানে স্বাধীনতার স্বপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের রাজনীতি করার সুযোগ রয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা সবার জন্য অসম্প্রাদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই করছেন। তার এই লড়াইয়ে আমরা পাশে থাকতে চাই। আবারো আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনার জন্য নৌকার প্রচারণায় মাঠে নেমেছি।

প্রচারণায় কিভাবে ভূমিকা রাখছেন?

নির্বাচনী প্রচারণা যেভাবে হয়ে থাকে, সেভাবেই ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। এর বাইরে আমি যেহেতু সংস্কৃতিকর্মী, আমার কর্তব্য আরেকটু বেশি মনে করি। সে কারণেই আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য নিয়ে পাঁচটি গান লিখেছি। সেগুলো দেশের স্বনামধন্য সুরকার-শিল্পীদের কণ্ঠে রেকর্ড হয়েছে। ব্যক্তিগত অর্থায়নে তৈরি এই গানগুলো আমি প্রচারের ব্যবস্থাও করেছি। ইউটিউব, টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশবাসীকে এই উন্নয়নের গল্প আমি শোনাচ্ছি। দেশের সব জেলা-উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণায় এই গানগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।

আপনার কি মনে হয় আওয়ামী লীগ সরকার যথাযথভাবে দেশের উন্নয়ন করেছে?

দেশরত্ন শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। আওয়ামী লীগ উন্নয়নমুখী সরকার। গণমানুষের সরকার। জনগণের সার্বিক উন্নয়নে এই সরকারের নানামুখী পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন দেশের মানুষের জীবনমান বদলে দিয়েছে। আজ পদ্মা সেতুর মতো একটি বড় প্রকল্প দেশের নিজস্ব অর্থায়নে হচ্ছে এটি সত্যিই বিস্ময়। এ রকম একটি বড় চ্যালেঞ্জ শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাই নিতে পারেন। আজ তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের একটি রোল মডেল।

আপনি আদিবাসী জনপদের যুবনেতা। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি আস্থা কতটুকু? তাদের স্বার্থরক্ষায় আওয়ামী সরকার কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারছে বলে মনে করেন?

বাংলাদেশ একটি বহুজাতি, বহুভাষা ও বহু সংস্কৃতির অনন্য দেশ। এ দেশে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর বাইরে প্রায় ৪৫টিরও বেশি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। তাদের সংখ্যাও কম নয়। প্রায় ৪০ লক্ষাধিক। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এসব আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। ১৯৭৫ সালেও তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার আদিবাসী-বান্ধব সরকার বলে আমি মনে করি। আদিবাসী জনগণের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধার প্রতি এই সরকারের মনোভাব ইতিবাচক। আদিবাসী জনগণ বরাবরই আওয়ামী লীগ তথা নৌকাকেই সমর্থন দিয়ে আসছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করি।

ভবিষ্যতে পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কিংবা দেশের সেবা করার ইচ্ছা আছে কি?

অবশ্যই। দেশের সেবা করার ব্রত নিয়েই রাজনীতি করছি। পার্লামেন্টের সদস্য হতে পারলে সেবা করার সুযোগ আরো বেড়ে যায়। আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও দেশের সেবা করার সে সুযোগ পেলে আমি সর্বোচ্চ সততা দিয়েই সেটা করার চেষ্টা করব।

আপনি সংস্কৃতি অঙ্গনের পরিচিত মুখ। সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে রাজনৈতিক আদর্শ কীভাবে সাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায়?

সংস্কৃতি একটি জীবন বোধ। বাঙালি জাতির সংস্কৃতির ইতিহাস হাজার বছরের। আর আমাদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অগণিত গল্প, কবিতা, উপন্যাস, গান রচিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমন করেই অন্যায়ের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে দেশের শিল্প-সংস্কৃতিজনরা ভূমিকা রেখেছেন। একাত্তরে অনেক কণ্ঠযোদ্ধা ছিলেন। ছিলেন কলমযোদ্ধা। যুগে যুগে আদর্শের বীজ বুনতে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা বিশেষ ভূমিকা রেখে গেছেন। আমি একজন ক্ষুদ্র সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে অগ্রজদের পদাঙ্ক অনুসরণের চেষ্টা করছি। আমিও আমার গান-কবিতা লেখার মাধ্যমে আদর্শের বীজ বুনে যাওয়ারই চেষ্টা করছি। আমি মনে করি, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের নিজেদের সংস্কৃতিকে ঠিক চিনে নিতে পারবে। নিজের সংস্কৃতি চিনতে পারাটাই বড় কথা। কেউ একবার নিজের পরিচয় জেনে নিতে পারলে তার মধ্যে আদর্শের বিচ্যুতি ঘটার সম্ভাবনা কম থাকে।

গীতিকবি হিসেবে আপনার উল্লেখযোগ্য কাজগুলো কী কী?

বেশ কিছু আধুনিক গান লিখেছি। সেসবে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশের বেশ কজন শীর্ষ ও তরুণ শিল্পী। এ ছাড়া দেশের গান নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবামের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই প্রজন্মের চারজন শিল্পীকে দিয়ে আরেকটি গান করিয়েছিলাম। একটা বিশেষ প্রজেক্ট চলছে এখন। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক মনে করি নিজেকে। সে কারণে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবামের কাজে হাত দিয়েছি। সার্কভুক্ত ৬টি দেশের ৮ জন শিল্পী এই অ্যালবামে গান গাইবেন। ভারত থেকে কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী (গানের কথা : দেখো তোমার জন্য বাংলার আকাশে গাঙচিল উড়ে যায়/ দেখো তোমার জন্যে রঙতুলিতে কত শিশু ছবি এঁকে যায়) ও শুভমিতা (গানের কথা: সোনার মানুষ খুঁজি আমি বাংলার ঘরে ঘরে/ মুজিব ছিল সোনার মানুষ বাঙালির অন্তরে), নেপাল থেকে আশরা কুনওয়ার (ভয়েস অব নেপাল, গানের কথা: আমি হিমালয় দেখেছি, দেখেছি ফিদেল ক্যাস্ত্রোকে/ আমি দেখেছি দক্ষিণ আফ্রিকা, দেখেছি নেলসন ম্যান্ডেলাকে/ আমি দেখিনি তোমায়, শুনেছি তোমার কথা/ তুমি নিপীড়িত বঞ্চিত মানুষের মহান নেতা), ভুটান থেকে সাংগে হ্লাদেন শেরিং (গানের কথা: তুমি বাংলার আকাশে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য/ তুমি মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক একাত্তরের রণতূর্য), শ্রীলঙ্কা থেকে ডেভিড (গানের কথা: বঙ্গবন্ধু তুমি স্বপ্ন বাঙালির হাজার বছর ধরে/ বঙ্গবন্ধু তুমি ভোরের সূর্য, উঠুক পৃথিবী জুড়ে), এবং মালদ্বীপ থেকে শালাবী ইব্রাহীম (গানের কথা: সেই কারাগার তোমাকে রুখে দিতে পারেনি/ সেই অন্ধকার তোমাকে রুখে দিতে পারেনি) বাংলাদেশের জাতির জনক নিয়ে এই গানের অ্যালবামে কণ্ঠ দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads