• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

আনন্দ বিনোদন

পর্দা নামল ফোক ফেস্টের

শেষ দিনে সঙ্গীতপ্রিয় মানুষের ঢল

  • সোহেল অটল
  • প্রকাশিত ১৮ নভেম্বর ২০১৮

সুর, তাল, লয় ও ছন্দের হূদয়স্পর্শী ছোঁয়ায় বিভিন্ন ভাষাভাষী সঙ্গীতপ্রিয় মানুষকে এক সুতোয় বাঁধতে পারার এক ঐশ্বরিক ক্ষমতা রয়েছে লোকসংগীতের। লোকসঙ্গীতের মধ্য দিয়েই খুঁজে পাওয়া যায় আত্মার শান্তি। সেই শান্তির খোঁজে ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসবের শেষদিন গতকালও বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে সঙ্গীতপ্রিয় মানুষের ঢল নামে। বিকাল থেকে সারিবদ্ধভাবে স্টেডিয়ামের সব গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে থাকেন সঙ্গীতানুরাগীরা। এই ধারা অব্যাহত থাকে রাত ১০টা পর্যন্ত। রাত ১২টায় পাকিস্তানি শিল্পী শাফকাত আমানত আলীর গাওয়া লোকসঙ্গীতের মাধ্যমে শেষ হয় উৎসবের পরিবেশনা।

গতকাল বাংলাদেশ থেকে শিল্পী শায়ান চৌধুরী অর্ণব, ফোকব্যান্ড নকশিকাঁথা ও বাউল শিল্পী কবির শাহ্ এবং বিদেশি শিল্পীদের মধ্যে স্প্যানিশ ফোকব্যান্ড লাস মিগাস ও পাকিস্তানের পাটিয়ালি-সুফি ঘরানার শিল্পী শাফকাত আমানত আলী গান পরিবেশন করেন।

তিন দিনের ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব ২০১৮’-এর শেষ দিন গতকালকের মূল আকর্ষণ ছিল উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী ক্লাসিক্যাল ঘরানার লোকসঙ্গীতের পাকিস্তানি গায়ক শাফকাত আমানত আলী। শুধু শেষ দিনের নয়, এবারের উৎসবের প্রধান আকর্ষণও ছিলেন তিনি। পাকিস্তানের এই সুফি বাউলকে নিয়ে সুরপ্রেমীদের গভীর ভালোলাগা আর ভালোবাসার কারণে সন্ধ্যা থেকেই স্টেডিয়ামের মাঠটি দখলে নেয় রাজধানীর গানপাগলরা। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতেই অন্য শিল্পীদের মায়াজালে জড়িয়ে সুরের কাঙালরা মেতে ওঠেন উল্লাস আর উন্মাদনায়। বাংলাদেশের গানের দল ‘নকশিকাঁথা’র পরিবেশনার মধ্য দিয়েই গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেষরাতের পর্দা ওঠে। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ডটি গ্রামের মেঠোপথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন গানের সুরের ঝরনাধারায় ভেজায় স্টেডিয়ামের কয়েক হাজার দর্শকশ্রোতাকে।

এরপর মঞ্চে আসেনলাস মিগাস’। তারপরই মঞ্চে ওঠেন শায়ান চৌধুরী অর্ণব। অর্ণবের গান মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করে শ্রোতারা। অর্ণব মঞ্চ থেকে নামার পরপরই আসেন এবারের আসরের বড় আকর্ষণ পাকিস্তানের শাফকাত আমানত আলী। পাকিস্তানের স্বনামধন্য ওস্তাদ আমানত আলী খানের ছেলে শাফকাত পাটিয়ালা ঘরানার নবম বংশধর। ১৯৬৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী চার বছর বয়স থেকে হিন্দুস্তানি ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতে তালিম নেন। তিনি সুফি ও পাকিস্তানের লোকজসঙ্গীতের জন্য বিশ্বের সঙ্গীতাঙ্গনে বিশেষভাবে সমাদৃত।

হাজার বছর ধরে বাংলার শেকড়ে ছড়িয়ে থাকা লোকজ শিল্পশৈলী আলোড়িত করে যাচ্ছে শ্রোতাদের প্রাণ। দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ছে এর মুগ্ধতা। লোকসঙ্গীতের চর্চা ও প্রসারের জন্য গত তিন বছর ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব’। এবার বাংলাদেশসহ বিশ্বের সাতটি দেশ থেকে আসা ১৭৪ জন লোকসঙ্গীত শিল্পী অনুষ্ঠানে তিন দিন তাদের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেকড় সন্ধানী গানগুলো সঙ্গীতপ্রিয়দের সামনে তুলে ধরেছেন একমঞ্চে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads