• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বিদায় হে কিংবদন্তি

শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

ছবি : সংগৃহীত

আনন্দ বিনোদন

বিদায় হে কিংবদন্তি

  • আল কাছির
  • প্রকাশিত ২৪ জানুয়ারি ২০১৯

অশ্রু, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, সঙ্গীতজ্ঞ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী গতকাল মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে তাকে। এর আগে গতকাল  বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয় বুলবুলের মরদেহ। এ সময় আবেগঘন হয়ে ওঠে শহীদ মিনারের পরিবেশ। ফুল হাতে অঝোরে কেঁদে ওঠেন অনেক বুলবুলভক্ত। বেলা ১১টা ৫ মিনিটের দিকে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ।

প্রয়াত এ সঙ্গীতজ্ঞের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল শুধু গানের জন্য নয়, দেশের প্রতি যে অবিস্মরণীয় ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা ভোলার নয়। ২০১২ সালে গঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন তিনি। যার কারণে পরবর্তী সময়ে তার ভাই প্রাণ হারান। তার প্রতি আমাদের দেশবাসীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইল।’

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘বুলবুল একজন সঙ্গীত পরিচালক এবং গীতিকার হিসেবে কী মানে ছিলেন সেটা আমার আর বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন পড়ে না। জনগণ সেটা জানেন। আমরা কী হারিয়েছি সেটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। একজন সঙ্গীতের মহাজনকে আমরা হারিয়েছি। এই শূন্যতা কোন জনমে পূরণ হবে তা আমার জানা নেই। বুলবুল ভাই তার গান দিয়ে আমাকে সমৃদ্ধ করেছেন। দেশকে সমৃদ্ধ করেছেন। এই ক্ষতি আমরা কীভাবে কাটিয়ে ওঠব জানি না। আমি তার আত্মার জন্য শান্তি এবং দোয়া কামনা করছি।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘বুলবুল ভাই যেখানে গেছেন সেখানে ভালো থাকবেন, এটাই আশা করি। আমরা একটা ছায়া হারালাম। পারিবারিকভাবে আমরা খুব কাছের ছিলাম। মানুষের মৃত্যুর পরে এত সুন্দর মুখ দেখা যায় না। বুলবুল ভাইয়ের মুখটা খুব সুন্দর আর পবিত্র দেখেছি। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন তার দেখানো পথে চলতে পারি, তার ইচ্ছাগুলো যেন পূরণ করতে পারি।’

বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে শহীদ মিনার থেকে বুলবুলের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। বাদ জোহর সেখানেই তার প্রথম জানাজা হয়। পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাবের সামনে তার দ্বিতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জানাজার আগে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। তারপর বুলবুলের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। এখানেই দাফন করা হয় তাকে।

দীর্ঘদিন ধরেই হূদরোগে আক্রান্ত ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। গত বছরের মাঝামাঝিতে আটটি ব্লক ধরা পড়ে তার হূদযন্ত্রে। মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় তার। দ্রুত রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে জানান, হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের। হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান তিনি।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads