• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা টাওয়ার

ছবি: ইন্টারনেট

ফিচার

আকাশ ছুঁতে চায় ইট কংক্রিট

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০১৮

উনবিংশ শতক পর্যন্ত ৬ ভবনের সন্ধান পাওয়াই দুষ্কর ছিল। সে সময় দুর্বল ও নিম্নমানের নির্মাণ উপকরণের জন্য উচ্চ ভবনগুলো ভেঙে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকত। তা ছাড়া সাধারণ মানুষেরও অনেকগুলো সিঁড়ি পেরিয়ে উপরে ওঠা ও বসবাসে অনীহা ছিল। ১৮৮৪-৮৫ সালে প্রথম দশতলা ভবনটি নির্মিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে। বর্তমানে আধুনিক ও উন্নততর প্রযুক্তির সাহায্যে গগনচুম্বী অট্টালিকা তৈরির প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে দেশে দেশে। বাংলাদেশও এ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই। তবে শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং বাস্তব প্রেক্ষাপটে শহরে একসঙ্গে অধিক সংখ্যক মানুষের আবাসন নিশ্চিত করতে উঁচু ভবন নির্মাণ সময়ের দাবি হয়ে গেছে। বিশ্বের সুউচ্চ কিছু ভবন নিয়ে আজকের আয়োজন

 

দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা

ভাবুন তো পৃথিবীর দ্রুততম এলিভেটরে চড়ে, ২ হাজার ৭১৭ ফুট উঁচুতে বসে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্ত দেখছেন। সমতলে সূর্যকিরণ পৌঁছানোর আগেই সে আলো স্পর্শ করছে আপনাকে। এমন রোমাঞ্চকর অনুভূতি পেতে আপনাকে যেতে হবে আরব আমিরাতের দুবাই শহরে। এ শহরেই বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ খলিফা।

২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি ১৬০ তলাবিশিষ্ট বুর্জ খলিফার উদ্বোধন করেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সম্মানেই ভবনটির নামকরণ করা হয়েছে বুর্জ খলিফা। সুউচ্চ ‘বুর্জ খলিফা’ মোট কত তলা তা নিয়েও রয়েছে নানা মত। উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায় এর মোট তলার সংখ্যা ১৬০টি। অবশ্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেফিরে ১৬০ থেকে ১৬৯ তলার কথাই বেশি এসেছে। তবে সম্পূর্ণ বুর্জ খলিফার মোট তলার সংখ্যা ২০৬। এর মধ্যে ১৬০ তলা পর্যন্ত রয়েছে বিভিন্ন অফিস, আবাসন, মসজিদ, সুইমিংপুল। আর ১৬০ তলার পর থেকে ২০৬ তলা পর্যন্ত আছে ভবনটি পরিচালনায় সহায়ক বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান।

রকেটের মতো দেখতে ১৬০ তলাবিশিষ্ট বুর্জ খলিফার মোট উচ্চতা ২ হাজার ৭১৭ ফুট। ছয় লাখ বর্গফুটবিশিষ্ট এই ভবনে একসঙ্গে ১২ হাজারেরও বেশি লোকের সমাবেশ হতে পারে। বুর্জ ভবনে ওঠানামার জন্য রয়েছে ৫৪টি এলিভেটর বা লিফট, যার গতি ঘণ্টায় ৪০ মাইল।

বিলাসবহুল এই ভবনের একেকটি কামরা কেনার জন্য বর্গমিটার প্রতি ক্রেতাদের গুনতে হয়েছে গড়ে ৩৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। আর প্রতি বর্গফুট জায়গার মাসিক ভাড়া (অফিস-আদালতের জন্য) চার হাজার ডলার বা ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ভবনটিতে ঢুকতে হলেও গুনতে হয় বেশকিছু টাকা। ১৬০ তলা ভবনের মধ্যে ১০০ তলায় যেতে কিনতে হবে ২০০ দিরহামের টিকেট; বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আর ১৬০ তলায় যেতে হলে অনুমতি নিয়ে আরো অনেক বেশি দিরহাম গুনতে হয়।

২০০৪ সালে শুরু হয়ে ২০০৯ সালে শেষ হওয়া ভবনটি নির্মাণে চলেছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এটি তৈরি করতে একসঙ্গে ১২ হাজার শ্রমিক কাজ করেছে। নির্মাণকালে প্রতি তিন দিনে একেকটি ছাদ ঢালাই দেওয়া হতো। দুবাইয়ে প্রচণ্ড গরমের কারণে কংক্রিট জমাট বাঁধতে পারত না। তাই দিনে অন্য কাজ করে রাতে ছাদ ঢালাই দেওয়া হতো যেন শীতল বাতাসের সংস্পর্শে কংক্রিট সহজেই জমে যেতে পারে। কখনো কংক্রিট জমাট বাঁধতে বরফও ব্যবহার করা হয়েছে। যে পরিমাণ গ্লাস ও স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে এই ভবনটি তৈরি করতে সেগুলো একসঙ্গে রাখতে ১৭টি স্টেডিয়ামের সমান জায়গা প্রয়োজন হতো। ১২৮৩ মাইল লম্বা দেয়াল তৈরি করার মতো ইট-বালি-সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে ভবন নির্মাণে। সম্পূর্ণ ভবনটি তৈরি করতে মোট ব্যয় হয় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ১১ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা।

নানা দিক দিয়েই রেকর্ড তৈরি করেছে বুর্জ খলিফা। এতে আছে উচ্চতম আবাসন ব্যবস্থা (১০৮ তলা), সর্বোচ্চ স্থানে মসজিদ (১৫৮ তলা), উচ্চতম স্থানে সুইমিংপুল (৭৬ তলা), সর্বোচ্চ স্থানে পর্যবেক্ষণ ডেক (৪৪২ মিটার) এবং দীর্ঘতম এলিভেটর যাত্রা।

 

তাইপে ১০১

দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা নির্মাণের পূর্বে ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবনের খেতাবটি ছিল ‘তাইপে-১০১’-এর। তাইওয়ানের জিনই জেলার তাইপে শহরে অবস্থিত ভবনটির সর্বোচ্চ উচ্চতা ১ হাজার ৬৭০ ফুট। ১০১ তলা ভবনটির মাটির নিচে রয়েছে ৫টি তলা। ‘তাইপে-১০১’-এর নকশা প্রণয়ন করেছে সিওয়াই লি. অ্যান্ড পার্টনার্স এবং নির্মাণ করেছে কেটিআরটি জয়েন্ট ভেঞ্চার। ২০০৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভবনটি উদ্বোধনের পর থেকে এটি আধুনিক তাইওয়ানের প্রতিচ্ছবি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

এ ভবনেই রয়েছে দ্রুতগতিসম্পন্ন লিফট। যেটিতে চড়ে ৮৯ তলা ভ্রমণের জন্য সময় লাগবে মাত্র ৩৭ সেকেন্ড। কেননা প্রতি সেকেন্ডে এর গতি প্রায় ৫৫.২২ ফুট, যা পূর্ববর্তী রেকর্ড সৃষ্টিকারী ভবনের লিফট জাপানের ইয়োকোহামা ল্যান্ডমার্কের চেয়ে ৩৪.৩৭ গুণ বেশি দ্রুতগতিসম্পন্ন। আধুনিক এই ভবনটির ভিত্তি নির্মাণের সময় মাটির ২৬২ ফুট গভীরে ৮০টি পিলার স্থাপন করা হয় এবং একেকটি পিলারের ব্যাস ৫ ফুট, যার ধারণক্ষমতা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।

১০১ তলা এ ভবনটিতে দুবাই বুর্জের মতো বসবাসের জন্য কোনো ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন ব্যাংক এবং অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও এ ভবনে রয়েছে বিশ্বের নামকরা শতাধিক রেস্টুরেন্ট।

শহরের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারটি থেকে পুরো শহরের অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখার জন্য ৮৯ এবং ৯১ তলায় রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এখান থেকে ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে পর্যটকরা দেখতে পারবে এ দৃশ্য। তবে এর জন্য টিকেট কাটতে হয়- যার পরিমাণ স্থানীয় মুদ্রায় ৪০০ ডলার (মার্কিন ডলার ১৩)।

পুরো ভবনটি নির্মাণের পেছনে মোট ব্যয় হয়েছে ১.৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ‘তাইপে-১০১’ থেকে করা আতশবাজির দৃশ্য ইংরেজি নববর্ষের অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বে সম্প্রচারিত হয়।

 

পেট্রোনাস টাওয়ার

মালয়েশিয়া গিয়ে পেট্রোনাস টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে একটা সেলফি তোলেননি এমন মানুষ কমই আছে। দৃষ্টিনন্দন এই টুইন টাওয়ারটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে একটি পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। কুয়ালালামপুর শহরের যে স্থানে পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার অবস্থিত, তার নাম কেএলসিসি বা কুয়ালালামপুর সিটি সেন্টার। পেট্রোনাস টাওয়ার এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বোচ্চ টুইন টাওয়ার। ৮৮ তলার দালানটির উচ্চতা ৪৫১ দশমিক ৯ মিটার। বর্তমানে যে স্থানে স্থাপনাটি দাঁড়িয়ে আছে, এটি মূলত একটি জলাভূমি ছিল। নকশা অনুমোদনের পর ১ জানুয়ারি, ১৯৯৩ সালে ভবন নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়া শুরু হয়। এটি নির্মাণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এর মূল ভিত্তি স্থাপনে। যে কারণে ১৯৭ থেকে ৩৭৪ ফিট পর্যন্ত গভীর পাইলিং করে মূল ভিত্তির ১০৪টি কংক্রিটের স্তম্ভ স্থাপন করা হয় এবং মজবুত ভিত্তি তৈরির জন্য এর তলদেশে ৪ লাখ ৭০ হাজার বর্গফুট কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়। ৪২ লাখ ৫২ হাজার স্কয়ার বর্গফুট মোট আয়তনের ভবনটি নির্মাণ সম্পন্ন হয় ১ মার্চ, ১৯৯৬ সালে। নির্মাণ শেষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনের উদ্বোধন করা হয় ১ আগস্ট, ১৯৯৯ সালে। এই নির্মাণযজ্ঞে খরচ হয় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

পাঁচটি বেজমেন্ট ফ্লোরছাড়া ৮৮ তলার ভবনটিতে রয়েছে আটতলার শপিং মল। এই শপিং মলটির পাঁচতলা মাটির নিচে অবস্থিত। মালয়েশিয়ার প্রধান তেলভিত্তিক প্রতিষ্ঠান পেট্রোনাসের হেড অফিস এখানে। এই পেট্রোনাস কোম্পানির নামেই টাওয়ারটির নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ভবনে রয়েছে আলজাজিরা, বোয়িং, আইবিএম, ক্রওলার নেটওয়ার্ক, মাইক্রোসফট, রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক দফতরগুলো। পুরো টাওয়ারটির নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ঠিকঠাক রাখার জন্য পেট্রোনাস টাওয়ারের পশ্চিম দিকে একটি ‘সার্ভিস বিল্ডিং’ আছে। টুইন টাওয়ারটিতে রয়েছে সংযোগকারী একটি ব্রিজ, যেটি স্কাই ব্রিজ নামে পরিচিত। সেখানে উঠলে এক ধরনের শিহরণ জাগে। প্রতিদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত পর্যটকদের মধ্যে স্কাই ব্রিজ পরিদর্শনের জন্য বিনামূল্যে টিকেট বিতরণ করা হয়।

দর্শনার্থী আকর্ষণের জন্য পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের চারপাশ খুব সুন্দর করে সাজানো-গোছানো। টাওয়ারের পেছনের দিকটা শুধুই পর্যটকদের জন্য। এখানে রয়েছে নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা। এখানে বিকাল বেলায় আয়োজন করা হয় ওয়াটার শো’র। এখানে রয়েছে কৃত্রিম একটি সেতু। এই সেতুতে দাঁড়িয়ে পুরো টাওয়ারের ছবি তোলা যায়। তবে পর্যটকদের জন্য শুধু ৪১ তলা পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ওপরের অংশটি পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত।

 

আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ

অবিশ্বাস্য শোনালেও উন্নত দেশগুলোর মতো গগনচুম্বী ভবন নির্মাণে অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। ১৪২ তলা উঁচু এ ভবনটি নির্মিত হবে রাজধানীর পূর্বাচলে। শুধু তাই নয়, ‘আইকনিক টাওয়ার’ নামে ১৪২ তলা এই ভবনের পাশে তৈরি হবে ৫০ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক স্টেডিয়াম, বিশাল কনভেনশন সেন্টার এবং শপিংমলসহ মোট ৯টি স্থাপনা। এসব নির্মাণে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে চার বিলিয়ন ডলার বা ৩২ হাজার কোটি টাকা। নির্মাণের পর এটিই হবে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ টাওয়ার।

পদ্মপাতার ছাউনির মতো নান্দনিকভাবে গড়ে তোলা হবে ‘ঢাকা কনভেনশন’ সেন্টারটি। ভেতরে থাকবে উন্নত ডিজাইন। আর লবিতে থাকবে এক্সিবিশনের ব্যবস্থা। এ ছাড়া কনফারেন্স হলে একসঙ্গে বসতে পারবে ৫ হাজার মানুষ। আর একসঙ্গে খাবার খেতে পারবে দেড় হাজার জন। এ ছাড়াও মিটিং রুম, সেমিনারসহ আধুনিক সবই থাকবে এখানে। আইকনিক টাওয়ারে থাকবে সেভেন স্টার হোটেল, শপিংমল, এক্সিবিশন সেন্টার ও থিয়েটার।

এর পাশের স্থাপনার মধ্যে আরো রয়েছে হাসপাতাল, নার্সিং কলেজ, সুইমিং ক্লাব, বোর্ড স্টেডিয়াম এবং গলফ ক্লাব। এ ছাড়া থাকবে আবাসিক ভবনও।

আইকন টাওয়ার নির্মাণে পূর্বাচলের ১৯ নম্বর সেক্টরের সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি) এলাকায় ১০০ একর জমি লিজ দেওয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আইকনিক টাওয়ার নির্মাণকাজ শুরু করবে কনসোর্টিয়াম অফ পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস লিমিটেড অ্যান্ড কাজিমা করপোরেশন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্র্রের কেপিসি গ্রুপ এক প্রস্তাবে পূর্বাচলের ১৯ নম্বর সেক্টরে সিবিডি এলাকায় আইকনিক টাওয়ার, স্টেডিয়াম, কনভেনশন সেন্টার, আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল নির্মাণসহ ইকোপার্ক ও গলফ কোর্স উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য প্রস্তাবটি দিয়েছিল।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ও বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ ভবনটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া, প্রস্তাবিত জমির মাটি ১৩০ তলা ভবন নির্মাণের জন্য উপযুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআরটিসি বিভাগ। তারা সেখানকার ফাউন্ডেশনের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত দেবে।

বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স হিসেবে আইকন টাওয়ার হবে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ ভবন। এ ছাড়া উচ্চতা ও আয়তনের দিক দিয়ে এটি হবে বিশ্বের সর্বোচ্চ তৃতীয় বৃহত্তম ভবন।

 

ক্রিক হারবার টাওয়ার

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা। যার উচ্চতা ২ হাজার ৭১৭ ফুট। তবে দুবাইতেই এখন নির্মিত হচ্ছে তার চেয়েও উঁচু একটি ভবন। যার উচ্চতা হবে ৩ হাজার ৪৫ ফুট। তলার সংখ্যা হবে ২১০টি। নির্মাণ শেষ হলে এটিই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে সুউচ্চ ভবন। এর নাম ক্রিক হারবার টাওয়ার। এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে, শেষ হবে ২০২০ সালে। ২০২১ সাল থেকেই ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্রিক হারবার টাওয়ার নিয়ে দুবাইয়ের উচ্চাভিলাষ বুর্জ খলিফার চেয়েও বেশি। এটিকে ঘিরে গড়ে তোলা হবে ‘ক্রিক হারবার সিটি’। যেখানে সব ভবনই হবে সুউচ্চ। এই শহরে আবাসন হবে প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষের। ক্রিক হারবার সিটির মধ্যমণি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে টাওয়ারটি। আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠান এমার এই প্রকল্পের কাজ পেয়েছে।

আরব বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ এখন দুবাইয়ের ওপর নির্ভরশীল। তার সঙ্গে বিশ্বের বিত্তশালী পর্যটকদেরও আকর্ষণ করার জন্য তারা যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করছে। আফ্রিকা, ভারত ও ইউরোপ থেকে প্রায় ৩০ কোটি পর্যটক দেশটিতে বিভিন্ন সময়ে অবস্থান করে। তাই দুবাইয়ের শাসকদের নীতি হলো, বিনোদনের ব্যবস্থা করে রেখে দাও, গ্রাহক আসবেই। বর্তমানে সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু দুবাই শহরের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প হলো ক্রিক হারবার। এটি দুবাইকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads