• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
যে পথে যাবেন যেভাবে

ঢাকা থেকে ভ্রমণের তারিখ অনুযায়ী ভাড়া পরিবর্তিত হতে পারে

সংরক্ষিত ছবি

ফিচার

যে পথে যাবেন যেভাবে

  • প্রকাশিত ২৯ জুলাই ২০১৮

বর্তমানে বাস ও ট্রেনের পাশাপাশি বিমান পথও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। জ্যাম এড়ানো, দ্রুত ও আরামদায়ক ভ্রমণে অনেক যাত্রী এখন আকাশপথে বেশি উৎসাহ দেখাচ্ছেন।

অভ্যন্তরীণ বিমানে ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজন নেই। তবে সম্প্রতি নিরাপত্তার খাতিরে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা অন্য কোনো স্বীকৃত মাধ্যমের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ঢাকা থেকে দেশের যে কোনো অঞ্চলে যেতে বিমানের টিকেট করা যাবে পছন্দের বিমান সংস্থার অফিস অথবা ওয়েবসাইট থেকে। অগ্রিম টিকেট করাটা বেশি সুবিধাজনক। ভাড়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় ছাড়াও পছন্দের আসন বেছে নেওয়ারও সুযোগ থাকে এতে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো থেকেও টিকেট করা যায়।

বিমান ভাড়া সবসময়ই পরিবর্তনশীল। ঢাকা থেকে ভ্রমণের তারিখ অনুযায়ী ভাড়া পরিবর্তিত হতে পারে। তবে পার্থক্যটা সাধারণত খুব বেশি হয় না।

প্রায় সব বিমানেই নিয়ম অনুযায়ী ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীদের প্রত্যেকে ২০ কেজি মালামাল বহন করতে পারেন। তা ছাড়া কেবিন লাগেজ হিসেবে ৭ কেজি মাল বহন করা যাবে। বিজনেস ক্লাসের যাত্রীরা ৩০ কেজি মালামাল এবং ৭ কেজি কেবিন লাগেজ বহন করতে পারেন। এর চেয়ে বেশি লাগেজ পরিবহনে অতিরিক্ত ফি।

পরিবহন সীমাবদ্ধতা ও নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আরো তথ্য পেতে দেখতে পারেন এই লিংকটি- www.flightexpert.com/blog/baggage-rules-for-air-travelers

 

অভ্যন্তরীণ রুটগুলোর মধ্যে ব্যস্ততম চারটি রুট সম্পর্কেও জেনে নিন-

ঢাকা টু সৈয়দপুর

নীলফামারী জেলার অন্তর্গত একটি অতিপ্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ উপজেলা শহর সৈয়দপুর। কথিত আছে, ভারতের কোচবিহার থেকে মুসলিম সাইয়্যেদ পরিবার এখানে এসে বসবাস শুরু করেছিল। সেখান থেকেই এর নাম সৈয়দপুর। ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই শহরে একটি সেনানিবাস, একটি বিমানবন্দর, দেশের একমাত্র ইএমই সেন্টার ও স্কুল আছে।

বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুরসহ মোট ৮ জেলার করিডোর বা নার্ভ সেন্টারে সৈয়দপুরের অবস্থান। এসব জেলা হয়েই ভারত থেকে আমদানি করা মালামাল আসে। তাই আমদানি-রফতানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী, ক্রেতা, কারখানা মালিকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ প্রতিনিয়ত ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে চলাচল করে। এজন্য ঢাকা-সৈয়দপুর রুটটিকে বিভিন্ন পরিবহন সংস্থা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।

বিমান বাংলাদেশ সহ সব বিমান সংস্থাই ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আকাশপথে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর পৌঁছা যায় এক ঘণ্টা বা তারও কম সময়ের মধ্যে।

এই রুটে প্রতিদিনই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১টি, নভোএয়ারের ৪টি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ২টি এবং ইউএস-বাংলার ৪টিসহ মোট ১১টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে চড়ে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৯০০ এবং সর্বোচ্চ ৬ হাজার ২০০ টাকায় সৈয়দপুর যাওয়া যায়। এ ছাড়া এই রুটে নভোএয়ারের সর্বনিম্ন ভাড়া ২ হাজার ৭০০ এবং সর্বোচ্চ ৮ হাজার ২০০ টাকা। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের সর্বনিম্ন ভাড়া ২ হাজার ৬৯৯ এবং সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৫০০ টাকা। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস সর্বনিম্ন ৩ হাজার ২০০ এবং সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৭০০ টাকায় যাত্রী আনা-নেওয়া করে।

 

30725909_994916460661235_6270564179560628224_n

ঢাকা টু সিলেট

বাংলাদেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত সিলেট অর্থনৈতিকভাবেও যথেষ্ট শক্তিশালী। শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম সম্পদশালী একটি জেলা সিলেট। এই অঞ্চলের অসংখ্য লোক দেশের বাইরে অবস্থান করছে। বিশেষ করে ব্রিটেনে লন্ডনের বাংলাদেশি কমিউনিটির শতকরা ৯৫ ভাগই সিলেটের।

বারো আউলিয়ার দেশ সিলেটে অসংখ্য মাজার দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক মানুষ সিলেটে ভিড় করেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকেও সিলেট তুলনাহীন, প্রচুর পর্যটককে আকর্ষণ করে। অসংখ্য বিদেশি পর্যটকও সিলেটে যাতায়াত করেন।

দ্রুত সিলেটে পৌঁছাতে চাইলে আদর্শ উপায় আকাশপথ। ঢাকা থেকে মাত্র ৪৫ থেকে ৫০ মিনিটেই সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছা যায়। সপ্তাহে প্রায় ৩০টিরও বেশি ফ্লাইট ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। প্রত্যেক শনি ও বুধবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৪টি করে ফ্লাইট সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়, শুক্রবার যায় ৫টি। এ ছাড়া অন্যান্য দিনে ১টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ। আর প্রতিদিনই নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলার ১টি করে ফ্লাইট ঢাকা সিলেট-রুটে চলাচল করে।

ক্লাস অনুযায়ী সাধারণত সর্বনিম্ন ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকায় এই রুটে যাত্রী পরিবহন করে বিমান বাংলাদেশ। এ ছাড়া নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস সর্বনিম্ন ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় যাত্রী পরিবহন করে।

 

ঢাকা টু রাজশাহী

পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত রাজশাহী বেশ প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শহর। রেশমি পোশাক, আম, লিচু ছাড়াও শিক্ষানগরী হিসেবে রাজশাহীর বেশ খ্যাতি আছে। বিভিন্ন কারণে ঢাকা-রাজশাহী রুট বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত একটি রুট। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সারা দেশের সঙ্গে রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবসায়িক যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা দ্রুত ভ্রমণ করতে চান, তারা এই রুটে আকাশপথ ব্যবহার করেন। স্বাভাবিকভাবেই আকাশপথে ঢাকা-রাজশাহী ভ্রমণ অনেক সংক্ষিপ্ত এবং ঝামেলাবিহীন।

ঢাকা-রাজশাহী বিমানপথে যাত্রীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম হলেও সময় বদলে যাচ্ছে। অনেকে এখন বাস কিংবা ট্রেনে চড়ে ৭-৮ ঘণ্টার সড়কপথের ঝামেলায় না গিয়ে কিছু খরচ বেশি হলেও ৪৫-৫৫ মিনিটে ঢাকা-রাজশাহী ভ্রমণ শেষ করতে আগ্রহী।

নভোএয়ার এবং ইউএস-বাংলা সপ্তাহের প্রতিদিনই রাজশাহী রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে। বাংলাদেশ বিমান শুধু রবি, সোম, মঙ্গল ও শুক্রবার একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সর্বনিম্ন ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকায় এই রুটে যাত্রী পরিবহন করে। আর বেসরকারি নভোএয়ার এবং ইউএস-বাংলা সর্বনিম্ন ২ হাজার ৭০০ টাকায় যাত্রী পরিবহন করে। এই রুটে নভোএয়ারের সর্বোচ্চ ভাড়া ৮ হাজার ২০০ টাকা এবং ইউএস-বাংলার সর্বোচ্চ ভাড়া ৬ হাজার টাকা।

 

ঢাকা টু চট্টগ্রাম

ঢাকার পরই বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নগরী চট্টগ্রাম। এটি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানীও। ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগও তাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসা, চাকরি, পড়াশোনা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিদিন প্রচুর লোক এই পথে যাতায়াত করে। এ ছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত বাংলাদেশের পর্যটনের অনেক বড় একটা অংশ হওয়ায় দেশি-বিদেশি অনেক ভ্রমণকারী এই রুটে চলাচল করে।

ট্রেন, বাস যে পথেই যাওয়া হোক না কেন, গড়ে ৮-১০ ঘণ্টা সময় লেগেই যায়। রয়েছে যানজটের ঝামেলাও। তাই এই রুটের নিয়মিত যাত্রীদের জন্য আকাশপথ অনেকটা আশীর্বাদের মতো। মাত্র ৪০-৫০ মিনিটের মধ্যেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছা সম্ভব।

এই রুটে চাহিদার কারণে টিকেট সঙ্কটও হচ্ছে। প্রতিটি বিমান সংস্থা তাদের সর্বোচ্চ সংখ্যক ফ্লাইট রেখেছে ব্যস্ততম এই রুটে। বাংলাদেশ বিমান কোনো দিন ৩টি আবার কোনো দিন ৭টি ফ্লাইটও পরিচালনা করে। প্রতিদিনই ৫-৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস-বাংলা, ৭-৮টি ফ্লাইট রিজেন্ট এয়ারওয়েজের, নভোএয়ারও প্রতিদিন ৫-৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করে এই রুটে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা ভাড়া নেয়। বেসরকারি সব বিমান সংস্থার সর্বনিম্ন ভাড়া ২ হাজার ৫০০ টাকা করে। সর্বোচ্চ ভাড়া ইউএস-বাংলার ৮ হাজার ৭০০, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ৯ হাজার ২০০ এবং নভোএয়ারের ৭ হাজার ৮০০ টাকা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads