ডা. ফারহানা বিন্তে ফুলজার
মেডিকেল অফিসার, ল্যাবএইড হাসপাতাল
গর্ভাবস্থায় অ্যাজমা মা ও সন্তানের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রথমে আমাদের জানতে হবে অ্যাজমা কী? আমরা সবাই জানি যে, অ্যাজমা একটি শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ। এ রোগে ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস যাতায়াত করতে পারে না এবং দেহ অক্সিজেনের অভাব অনুভব করে।
অ্যাজমার লক্ষণ
- শ্বাসকষ্টের সঙ্গে শুকনা কাশি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুরু হয় রাতে।
- শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শাঁ শাঁ শব্দ হয়।
- দম বন্ধ অনুভব করা।
- বুকে চাপ অনুভব এবং ব্যথা।
-ঋতু পরিবর্তনের সময় শ্বাসকষ্ট।
অ্যাজমার কারণ
- নাক, গলা ও বুকে ভাইরাস সংক্রমণ।
- ঘরের ধুলা, পরাগ রেণু, প্রাণীর পশম বা পালক।
- ঘন ধোঁয়া ও তীব্র গন্ধ।
- ভারী ব্যয়াম ও অতিপরিশ্রম।
- দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন।
- মানসিক চাপ ও অবসাদ।
- রাসায়নিক সামগ্রী, ডিটারজেন্ট।
- ক্ষতিকারক রঙ মেশানো খাদ্য।
গর্ভাবস্থায় অ্যাজমা
- গর্ভাবস্থায় এক-তৃতীয়াংশ অ্যাজমা রোগীর অ্যাজমা আরো বাড়ে। এক-তৃতীয়াংশ একইরকম থাকে এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ উন্নতি লাভ করে।
- প্রসবকালে নব্বই ভাগ রোগীর কোনো অ্যাজমা উপসর্গ থাকে না।
যখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি
- শ্বাসকষ্টের সঙ্গে বুকে ব্যথা।
- ঠোঁট বা জিভ নীল বর্ণ ধারণ করলে।
- শ্বাসকষ্টের সঙ্গে জ্বর থাকলে।
- শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কাশি এবং কাশির সঙ্গে রক্ত।
- সর্দি হলে তা সারতে ১৫ দিনের বেশি সময় লাগলে।
- শ্বাস-প্রশ্বাসের হার প্রতি মিনিটে ৩০ বা বেশি।
- নাড়ির স্পন্দন প্রতি মিনিটে ১১০ বা বেশি।
চিকিৎসা
- সাধারণ অবস্থায় অ্যাজমা রোগে যেসব ওষুধ ব্যবহূত হয় : সালবিউটামল, ইনহেলার, মন্টিলুকাস্ট।
- স্তন্যদায়ী মায়েদের ক্ষেত্রেও এসব ওষুধ নিরাপদ।
চিকিৎসা না হলে হতে পারে
- রেসপিরেটরি ফেইলিওর।
- হার্ট ফেইলিওর।
- অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ।
- হাই ব্লাড প্রেশার।
- প্রি ম্যচিওর ডেলিভারি (সময়ের আগে বাচ্চা প্রসব)।
- অ্যাজমার কারণে শরীরে অক্সিজেনের অভাব হয়। এতে গর্ভফুল ঠিকমতো কাজ করতে পারে না এবং বাচ্চার শরীরে ঠিকমতো অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না।
গর্ভাবস্থায় শরীরের যত্ন নিন। যে কোনো সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন। আপনি এবং আপনার সন্তান সুস্থ থাকুন।