• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
স্বপ্নের নায়ক রাখাল রাজা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

সংরক্ষিত ছবি

ফিচার

স্বপ্নের নায়ক রাখাল রাজা

  • বঙ্গ রাখাল
  • প্রকাশিত ১১ আগস্ট ২০১৮

সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য অনাহারী, নির্যাতিত, পদদলিত, নিম্নবিত্ত, বস্ত্রহীন, শিক্ষাহীন, মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর প্রত্যয় নিয়ে একজন বলিষ্ঠ কণ্ঠের নেতার আগমন ঘটে এদেশে। সে অন্তরে শিল্প-সাহিত্য কিংবা দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির অভিপ্রায় কাজ করত। স্বার্থের কোনো ইচ্ছার পাখি নেতার অন্তরে কোনোদিন বাসা বাঁধেনি। তিনি এদেশের মানুষের মুক্তির কথা স্মরণ করে নিজের জীবনও বিলিয়ে দিয়েছেন এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য। যখন তিনি বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এর চেয়ে মহাশক্তি আর কী হতে পারে? আর আমরা সেই জাতি, যে জাতি আমাদের নেতাকে আমরাই ১৫ আগস্ট হত্যা করি। যে আমাদের লাগিয়া কাঁন্দে- আমরা তাকে ভর্ৎসনা করি। শুধু ভর্ৎসনাই নয়, তাকে হত্যা করে পৃথিবীর বুকে এক কালো জাতি হিসেবে নাম লেখাই। একটা জাতি যখন বিক্ষোভ, যন্ত্রণার আত্মপীড়নের মধ্য দিয়ে মানুষের জীবন যখন নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছিল, তখন আমাদের একজন সত্য ন্যায় আর আদর্শের কাণ্ডারির প্রয়োজন হয়। আর ঠিক তখনই একজন প্রত্যয়ী বলিষ্ঠ বিবেকের আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিপর্যস্ত মানুষের নির্মম অসংলগ্নতাকে মনোজগতের উদঘাটনে মৃত্যুচিন্তাকে পদতলে পিষ্ট করে নেতা এগিয়ে যান সামনের দিকে। আজ দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে। মানুষ তার স্বাধিকার নিয়ে কথা বলতে পারবে না। বেকারত্বের পাল্লা দিন দিন ভারী হচ্ছে। সাম্য, ন্যায় আর আর্দশিকতা আজ শূন্যের কোটায়। যে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলার, তাঁর শিক্ষানীতি, সমাজব্যবস্থা আর সামাজিক সুষম বণ্টননীতির পরিসমাপ্তি ঘটছে দিন দিন। যারা বঙ্গবন্ধুর নাম নিতে নিতে মুখে ফেনা তুলছেন, তারাই তাকে ধ্বংস করছেন। তিনি এখন জীবিত থাকলেও বলতেন এই দেশ আমি চাই না। এটা আমার স্বপ্নের দেশ না। এই দেশের মানুষের চোখে জল দেখে নেতার চোখে জল গড়াতো। যিনি মাথায় হাত বুলিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরতেন, সেই নেতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে এখনো সময় আছে সবার আগে নীতি, নৈতিকতা আর আদর্শের চর্চা করতে হবে। একজন সত্য, ন্যায়, সাম্যবাদী নেতা সবুজাভ, শ্যামল দেশ নির্মাণের বাসনায় হাতে তুলে নেন রঙ তুলি কিংবা চিত্রকল্প আঁকেন নিজের অন্তর জগতে সেই আমাদের নেতা, প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুকে বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি রাখাল রাজা হিসেবে।

এই নিখিল বাংলার মানুষ যার অভিজ্ঞান আর ভরাট কণ্ঠস্বর একটা জাতিকে তর্জনী আঙুলের সাহায্যে কতদূর নিয়ে যেতে পারে তার সৃজনীলিরিক স্বয়ং বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু সেই মাপের নেতা, যার চিন্তার আকাশজুড়ে ছিল সমাজতন্ত্রের প্রকাশ, যে কারণে তার বইয়ের তাকে মার্কস, লেনিনের গ্রন্থ ছিল। তিনি অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি, এমনকি নিজে না খেয়ে অন্যকে খাইয়েছেন। তিনি এক দেখাতেই মানুষের মনের কথা অনুভব করতে পারতেন। আমাদের নেতাই হতে পারে আদর্শের কারিগর। যে বাঙালির ঐতিহ্যকে হূদয়ে ধারণ করে নিজস্ব ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটান, তিনিই তো হতে পারেন কোনো স্বপ্নের নায়ক।

একসময় আমিও ভাবতাম বঙ্গবন্ধু হতে পারে আমাদের একমাত্র কাণ্ডারি! যিনি নিজের জীবনও এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য দিয়ে গেলেন। যার মানুষের প্রতি যে উন্নত দৃষ্টিভঙ্গি তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলে নেতার আচার-ব্যবহার আর কর্মের মধ্য দিয়ে। তিনি কখনো কোনো মানুষের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতার সম্পর্ক গড়ে তোলেননি। ব্যবহারের দিক থেকেও তিনি ছিলেন এক অমায়িক মানুষ। তার স্বপ্নকে কিংবা জীবনপ্রণালী মেনেও যদি আজ এ দেশ পরিচালিত হয়, তাহলে এদেশে কোনো মানুষ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। কেউ আর অবহেলিত, নিপীড়িত হবে না। এ দেশ ধনী-দরিদ্র সবার, এ দেশ আমাদের সবার। ৎ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads