• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
অ্যালোভেরার গুণাবলি

ষোড়শ খ্রিস্টাব্দের দিকে মিসরীয় সভ্যতায় অ্যালোভেরার ব্যবহার প্রথম দেখা যায়

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

অ্যালোভেরার গুণাবলি

  • প্রকাশিত ১৬ আগস্ট ২০১৮

ফারজানা আহমেদ

অ্যালোভেরা বর্তমানে আমাদের দেশে বহুল ব্যবহূত একটি নাম। এর জুস সবাই চেনে এবং এর ওষুধি গুণ সম্পর্কে গ্রাম ও শহরের অনেক মানুষ জানে। অ্যালোভেরাকে ওয়ান্ডার প্লান্ট বলা হয়। নর্থ আফ্রিকায় এটি প্রচুর জন্মায়, কিন্তু সাধারণ টবেও অ্যালোভেরার গাছ দেখা যায়। আমাদের দেশে অনেক বাড়িতে অ্যালোভেরা চাষ করা হয়।

এটি একটি সরস পাতা, রঙ সবুজ। অ্যালোভেরার পাতার ভেতরে থকথকে সাদা জেলির মতো অংশটি বহুল ব্যবহূত হয়। এর পাতা ৬০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা।

ষোড়শ খ্রিস্টাব্দের দিকে মিসরীয় সভ্যতায় এর ব্যবহার প্রথম দেখা যায়। এরপর চিকিৎসাশাস্ত্রে চীন, জাপান, ভারত, গ্রিস, মিসর, মেক্সিকোয় এটি বহুল ব্যবহূত ছিল।

আজ আমরা অ্যালোভেরার গুণাবলি সম্পর্কে জানব :

১. দাঁত ও মাড়ির জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে অ্যালোভেরা। এটি টুথপেস্টে ব্যবহূত হয়। 

২. কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে সহায়তা করে।

৩. মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে ভূমিকা রাখে। এটি মাউথ ওয়াশে ব্যবহূত হয়।

৪. ডায়াবেটিক রোগীর পায়ের ক্ষত সারাতে সহায়তা করে।

৫. অ্যালোভেরা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে শরীরে কাজ করে।

৬. সান বার্ন দূরীকরণে সহায়তা করে।

৭. হজম শক্তি বাড়ায়।

৮. মুখের ঘা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৯. পোড়া বা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।

১০. ডায়াবেটিক রোগীর রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়িয়ে অ্যালোভেরা এই কাজটি করে।

১১. অ্যালোভেরা ত্বকের গুণাগুণ বাড়াতে সাহায্য করে। ৪৫ বছরের পর ত্বকে কোলাজেনের মাত্রা কমে যায়। অ্যালোভেরা তা বাড়ায় এবং ত্বকের কোমলতা রক্ষা করে।

১২. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমায়। হজম শক্তি বাড়ায়।

১৩. ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

১৪.  চুলের খুশকি কমায়।

১৫. অ্যালার্জি প্রতিরোধে এবং ব্রুনের বিরুদ্ধে কাজ করে।

১৬. অ্যালোভেরা হূদরোগ প্রতিহত করতে সহায়তা করে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের মতে, অ্যালোভেরা খেলে রক্তের লিপিড লেভেল কমে আসে।

১৭. ওজন কমাতে অ্যালোভেরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষত সেন্ট্রাল ওবেসিটি কমাতে সাহায্য করে।

অ্যালোভেরার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অ্যালোভেরার অতিরিক্ত ব্যবহারে পেটে ব্যথা, পেট কামড়ানো বা মোচড়ানো হয়। দীর্ঘদিনের ব্যবহারে ডায়রিয়া, কিডনি সমস্যা, মূত্রে রক্ত, রক্তে পটাশিয়াম লেভেল কমা, ওজন কমা, মাংসপেশি দুর্বল হওয়া, হূৎপিণ্ডে সমস্যা দেখা দেয়।

গর্ভবতী, স্তন্যদাত্রী মায়েদের জন্য অ্যালোভেরা একদম নিষেধ। এমনকি যে মা সন্তান নিতে আগ্রহী, তার জন্য অ্যালোভেরা নিষেধ। কিডনি, লিভার রোগে আক্রান্ত রোগীদের অ্যালোভেরা গ্রহণে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

অ্যালোভেরা গ্রহণের মাত্রা

প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ অ্যালো জেল (অ্যালোভেরার পাতার ভেতরের থকথকে সাদা অংশ) পানির সঙ্গে মিলিয়ে খাওয়া যায়। এ ছাড়া ওষুধ হিসেবে অ্যালোভেরার ব্যবহার খুব সাধারণ। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ আবশ্যক।

আমাদের দেশে অ্যালোভেরা খুব সহজলভ্য। বড় বড় সুপার শপে, সবজির দোকানে অ্যালোভেরা পাওয়া যায়। এটি ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করা যায়। 

লেখক : পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হানপাতাল

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads