• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
উপভোগ করুন গর্ভকালীন সময়টি

শুয়ে-বসে একঘেয়েভাবে না কাটিয়ে আনন্দময় করে তুলুন

ছবি : ইন্টারনেট

ফিচার

উপভোগ করুন গর্ভকালীন সময়টি

  • বেদৌরা বিনতে আফাক
  • প্রকাশিত ২৬ আগস্ট ২০১৮

গর্ভাবস্থা নারীদের জীবনের এক অভূতপূর্ব সময়। গর্ভধারণের পর থেকে সন্তান প্রসবের পূর্ব পর্যন্ত দীর্ঘ এ  সময়টি প্রতিটি নারীর জীবনে আকাঙ্ক্ষিত। নয়-দশ মাসব্যাপী বহুমুখী আবেগ, শারীরিক পরিবর্তন, মানসিক টানাপড়েন, অনাগত সন্তানের প্রতি উদ্বেগ ইত্যাদি সবকিছু মিলিয়ে অদ্ভুত সময় পার করেন মায়েরা। এই সময়টা শুয়ে-বসে একঘেয়েভাবে না কাটিয়ে আনন্দময় করে তুলুন। কেননা এ সময়ে আপনার মনমরা ভাব আর দুশ্চিন্তা অনাগত সন্তানের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সবসময় হাসিখুশি আর দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার জন্য এ সময় সেসব কাজই করুন, যা আপনাকে প্রশান্তি এনে দেবে। এ সময়টিকে উপভোগ্য করে তুলতে পারলে সন্তানের সঙ্গে যেমন বন্ধন দৃঢ় হবে, তেমনি একঘেয়ে কাটবে না সময়ও। 

হালকা ব্যায়ামে ঝরঝরে : গর্ভকালীন সময়টাতে সারাদিন শুয়ে-বসে কাটানো থেকে বিরত থাকুন। অনেকে গর্ভাবস্থাকে অসুস্থতার পর্যায়ে নিয়ে যান। এটি মোটেই উচিত নয়। নিজেকে ঝরঝরে রাখতে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। হালকা ব্যায়াম মা ও শিশুর মধ্যে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়; কোমর ও পা ইত্যাদির ব্যথার উপশমে সাহায্য করে; সন্ধি, লিগামেন্ট, পেশিকে শিথিল করে; কাজে উদ্যম আনে, ফিটনেস বাড়ায়; অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি থেকে রক্ষা করে; পরিপূর্ণ ও গভীর ঘুমে সাহায্য করে; কোষ্ঠকাঠিন্য, অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি দূর করে; পায়ের রক্তনালি ফুলে ওঠা দূর করে এবং স্বাভাবিক প্রসবে সাহায্য করে।

এ সময়ের মানসিক অস্থিরতা দূর করতে যোগাসন করতে পারেন। নিয়মিত হাঁটা, হালকা ঘরের কাজ, সাঁতার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সহজ কিছু যোগাসন মুহূর্তেই শরীর-মন দুটোতেই প্রশান্তি এনে দেবে।

নির্মল আলো-বাতাসে বেড়িয়ে আসুন : সারাদিন বাসায় শুয়ে-বসে না থেকে মাঝে মাঝে একটু খোলা হাওয়ার বাইরে বেড়িয়ে আসুন। বিকাল বেলাটা কাটিয়ে দিতে পারেন বাইরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে। এতে হবু মায়ের জন্য একঘেয়ে ভাবটা দূর হবে খুব সহজেই।

হালকা সাজে পরিপাটি থাকুন : গর্ভাবস্থার সময়টিতে নিজেকে পর্যাপ্ত সময় দিন। উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরুন। উজ্জ্বল রং মনকে প্রফুল্ল রাখে। নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। হালকা সাজও এ সময় আপনার মনকে ফুরফুরে রাখবে।

পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কিছু সময় : পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠুন। ঘরেই আয়োজন করতে পারেন এমন ছোটখাটো আড্ডার। পুরনো স্মৃতিচারণে বেশ কাটবে সময়টা। এই অল্প সময়ের হাসি আনন্দ অনেকটা সময় আপনাকে সতেজ রাখবে নিঃসন্দেহে।

সখ্য গড়ুন বইয়ের সঙ্গে : বই আমাদের সবসময়ের বন্ধু। সুন্দর সময় কাটানোর জন্য বইয়ের কোনো বিকল্প হয় না। গর্ভের সময়টা যেহেতু অনেক দীর্ঘ এবং সহজে কাটতে চায় না, সেহেতু নিঃসন্দেহে এ সময় সঙ্গী হতে পারে ভালো কিছু বই। সময় যখন চলছে না বলে মনে হবে, তখনই বই নিয়ে বসে যান। বারান্দায় বসে বই হাতে চা খেতে খেতে দেখবেন সময়টা কী করে চলে যাচ্ছে টেরই পাবেন না। একটি ভালো বই যে মানসিক প্রশান্তি দেবে তা নিঃসন্দেহে  গর্ভের সন্তানের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

প্রার্থনায় আত্মনিয়োগ : ধর্মীয়  প্রার্থনায়  নিজেকে সঁপে দিন স্রষ্টার কাছে। আপনি যে ধর্মেরই হোন না কেন এ সময় ধর্মীয় কাজে আত্মনিয়োগ আপনার অস্থিরতা দূর করবে অনেকটাই। প্রশান্তিময় কিছু সময় কাটবে আপনার।  

শিশুবিষয়ক ওয়েবসাইটগুলো ব্রাউজ করুন : গর্ভাবস্থার দিনগুলোতে আপনার অনাগত শিশুটি কীভাবে বেড়ে উঠছে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে ঘাঁটতে পারেন শিশুবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট। এতে করে গর্ভাবস্থায়  বিভিন্ন করণীয় বিষয় সম্পর্কে জানা যায়। যা শিশুর জন্মের পর শিশু পালনে বেশ সহায়ক হয়। আপনার গর্ভকালীন যত্ন এবং আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার জন্য এসব সাইট ঘেঁটেই দিনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দিতে পারবেন অনায়াসেই।

ভালো সিনেমা : গর্ভকালে  সবসময় ফুরফুরে থাকার চেষ্টা করা উচিত। তাই মন ভালো রাখতে এবং সময় কাটাতে এ সময়ে আপনার বন্ধু হতে পারে কমেডি ও রোমান্টিক সিনেমা। এই সময়ে অ্যাকশন, থ্রিলার কিংবা ভৌতিক সিনেমা দেখা উচিত নয় একেবারেই। এসব সিনেমা মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে, যা গর্ভের সন্তানের জন্য ক্ষতিকর।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads