• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯

ফিচার

আলোকিত ব্যক্তিত্ব

  • মাগুরা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৮ আগস্ট ২০১৮

ফররুখ আহমদ : কবি ফররুখ আহমদ ১৯১৮ সালের ১০ জুন বৃহত্তর যশোর জেলার বর্তমান মাগুরা জেলার সদর উপজেলাধীন মাঝাইল গ্রামের বিখ্যাত সৈয়দ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালের ১৯ অক্টোবর মাত্র ৫৬ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার রচিত কাব্য গ্রন্থগুলো হলো সাত সাগরের মাঝি, সিরাজুম মুনিরা, নৌফেল ও হাতেম ইত্যাদি। ছোটদের কবিতা ও ছড়া- হরফের ছড়া, পাখির বাসা, ছড়ার আসর, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে স্বীকৃতি এবং পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি কবিতায় বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান এবং বাংলা একাডেমির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯৬১ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট পুরস্কার এবং ১৯৬৬ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার লাভ করেন।

মোহাম্মদ লুৎফর রহমান : মাগুরা শহরের নিকটবর্তী পারনান্দুয়ালী গ্রামে ১৮৮৯ সালে লুৎফর রহমান তার মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৬ সালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মহৎজীবন, উন্নত জীবন, পথহারা, মানবজীবন, ছেলেদের মহত্ব কথা, ছেলেদের কারবালা, রানী হেলেন, প্রীতি উপহার, উচ্চজীবন, বাসর উপহার, রায়হান, সরলা, উত্তম জীবন, সত্য জীবন, ডনকুইকজোটের অনুবাদ, মুসলমান ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য রচনা। তিনি ‘নারীশক্তি’ পত্রিকার মাধ্যমে নারীদের জাগরণের চেষ্টা করেছেন এবং ‘নারী তীর্থ’ নামক আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে নারীদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের দ্বারা জীবিকা নির্বাহের পথ সুগম করেছিলেন।

শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন : ১৯২৯ সালের ১ মার্চ শালিখা উপজেলার শরুশনা গ্রামে সাংবাদিক ও সাহিত্যিক শহীদ সিরাজুদ্দীন জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর হাতে তিনি শহীদ হন। তিনি ১৯৫৪ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ও পরে কার্যনির্বাহী সম্পাদক হন। তার লেখা ‘ইতিহাস কথা কও’, ‘ছোট থেকে বড়’, ‘মহীয়সী নারী’,  ‘জার্মান রূপকথা’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

সৈয়দ আলী আহসান : সৈয়দ আলী আহসান ১৯২২ সালে মাগুরা জেলার আলোকদিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকাশিত কাব্য ‘চাহার দরবেশ’ পুঁথি সাহিত্যের উপাদানে রচিত। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘আধুনিক কাব্য চেতনা’। তিনি কিছু বিদেশি কবিতা ও নাটকের অনুবাদ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে— ‘ইডিপাস’, ‘হুইটম্যানের কবিতা’, ‘ইকবালের কবিতা’, ‘ইভানগলের কবিতা’, ‘মেরিডিথের কবিতা’ ইত্যাদি।

কাজী কাদের নেওয়াজ : ১৯০৯ সালে পশ্চিম বাংলার বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোর্ট গ্রামে কবি কাদের নেওয়াজের জন্ম। ১৯৫২ সালে শ্রীপুর উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রামে তিনি স্থায়ীবসতি স্থাপন করেন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ— ‘মরাল’, ‘নীল কৌমুদি’, ‘আশেকে রাসুল’, ‘দাদুর বৈঠক’, ‘উতলাসন্ধ্যা’, ‘মরুচন্দ্রিকা’ ইত্যাদি।

সৈয়দা সুফিয়া খাতুন : সৈয়দা সুফিয়া খাতুন (সাহিত্যরত্ন) ১৯২৭ সালে মাগুরা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তার গল্পগুলোর একটি সঙ্কলন প্রকাশ করার জন্য একটি পাণ্ডুলিপি তিনি কবি গোলাম মোস্তফার কাছে দিয়েছিলেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরই কবি গোলাম মোস্তফা মৃত্যুবরণ করলে সৈয়দা সুফিয়া পাণ্ডুলিপিটি আর ফেরত পাননি। যশোরের ‘অবলাকান্ত মজুমদার সাহিত্য পরিষদ’ সৈয়দা সুফিয়া খাতুনকে তার সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করে।

শেখ হবিবর রহমান : শেখ হবিবর রহমান (সাহিত্যরত্ন) ১৮৯০ মতান্তরে ১৮৯৪ সালে বর্তমান মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলাধীন ঘোষগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৭ মে ১৯৬২ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো- পারিজাত কাব্য, কোহিনুর কাব্য, চেতনা কাব্য, আবেহায়াত কাব্য, নিয়ামত, বাঁশরী, গুলশান ইত্যাদি। ফারসি কবি শেখ সাদীর ‘গুলিস্তাঁ’ ও ‘বুস্তা’র কাব্যানুবাদও করেছেন তিনি। কিশোর পাঠকদের জন্য তিনি রচনা করেছেন পরীর কাহিনী, মরণের পরে, ছোটদের হযরত মুসা, হাসির গল্প ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ, শয়তানের সভা এবং শেখ সাদীর জীবনী ‘হায়াতে সাদী’। তিনি কলকাতার ‘পারিজাত সাহিত্য কুটিরের’ প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads