• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
কেঁচো সারের গ্রাম

গ্রামের ৮০টি পরিবার এখন কেঁচো সার উৎপাদন করছেন

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

কেঁচো সারের গ্রাম

  • প্রকাশিত ২৯ আগস্ট ২০১৮

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার কুশমাইল ইউনিয়নে শিবগঞ্জ সড়কে উত্তর পাশে নাটুয়াপাড়া গ্রাম। ছোট্ট ঘনবসতি একটি গ্রাম। সড়কের পাশেই একটি গাছে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘এই গ্রামে কেঁচো সার পাওয়া যায়’। গ্রামটিতে পরিবারের সংখ্যা মাত্র ১২০টি। বেশির ভাগ পরিবারই দরিদ্র। দরিদ্রতা দূর করার স্বপ্ন নিয়ে এই গ্রামের ৫ জন নারী- মিনারা বেগম, শিল্পী বেগম, সাজেদা খাতুন, আমেনা খাতুন ও মর্জিনা খাতুন ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশনের সহায়তায় কেঁচো সার উৎপাদনে তিন দিনের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে ৫ জনে আলাদা আলাদা একটি করে চাড়িতে ২০টি কেঁচো দিয়ে কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন। প্রত্যেকের এখন ৬ থেকে ১০টি কেঁচো সার উৎপাদনের চাড়ি রয়েছে। তাদের দেখে একই বছর গ্রামের আরো ২০ নারী ওয়ার্ল্ড ভিশনে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন। তাদের অনুপ্রেরণায় গ্রামের ৮০টি পরিবার এখন কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। নাটুয়াপাড়া গ্রামটি এখন ‘কেঁচো সারের গ্রাম’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। 

নাটুয়াপাড়া গ্রামটিতে প্রায় প্রতিটি পরিবার নিজ ঘরের পাশে চাড়ি ও বালতিতে কেঁচো সার উৎপাদন করছে। প্রতি মাসে কমপক্ষে ৪ টন কেঁচো সার উৎপাদন করছেন এ গ্রামের নারীরা। ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে কেঁচো সার বিক্রি করলেও দুই হাজার টাকা কেজি কেঁচো বিক্রি করছেন তারা। নাটুয়াপাড়া গ্রামে কম্পোস্ট সার উৎপাদন দেখে আশপাশের গ্রামের অনেকেই কেঁচো দিয়ে কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে নিজেদের কৃষিজমিতে ব্যবহার করছেন। তবে কেঁচো সার উৎপাদনের তুলনায় বাজারজাত করতে পারছেন না এ গ্রামের নারীরা।  কেঁচো দিয়ে উৎপাদিত ভার্মি কম্পোস্ট সার পাইকারি বাজারজাত করতে পারলে এ গ্রামে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৯ থেকে ১০ টন উৎপাদন করা সম্ভব বলে মনে করেন গ্রামের নারীরা।  

কেঁচো সার উৎপাদনকারী সাজেদা খাতুন বলেন, দরিদ্র পরিবার আমাদের, এক সময় সংসার ও  ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগানো একমাত্র ভ্যানচালক স্বামীর ওপর নির্ভর ছিল। এখন খরচবিহীন কেঁচো কম্পোস্ট সার বিক্রি করে বাড়তি আয় করছি এবং ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ সুন্দরভাবে সংসার চলছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ৩০০ দরিদ্র পরিবারের নারীদের কেঁচো সার উৎপাদনে প্রশিক্ষণসহ উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. নাসরিন আক্তার বানু বলেন,  উপজেলায় ভার্মি (কেঁচো কম্পোস্ট) সার উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। যারা কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি করছেন, তারা যদি প্যাকেটজাত করতে চান, তাহলে উপজেলা কৃষি অফিসে আবেদন করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে প্যাকেটজাত করার ব্যবস্থা করে দেব। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads