• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
‘সন্ত্রাস দমনের ওপর বিমসটেক জোর দিয়েছে’

ছবি : সংগৃহীত

ফিচার

‘সন্ত্রাস দমনের ওপর বিমসটেক জোর দিয়েছে’

  • ফিচার ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৯ জুন ২০১৯

গত ৬ জুন ছিল বিমসটেক ডে। দিবসটি রোজার মাসে হওয়ায় ঢাকায় বিমসটেকের সদর দপ্তর ২৫ জুন বিমসটেক ডে উদযাপন করা হয়।

‘বিমসটেক ডে’-কে উপলক্ষ করে বিমসটেকের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে গুলশানের বিমসটেকের সদর দপ্তরে সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল এম শহিদুল ইসলামের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

শুরুতেই তিনি বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন-বিমসটেক গঠনের পটভূমি তুলে ধরেন।

১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংককে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড- এই চারটি দেশ মিলে বিআইএসটি-ইসি গঠন করে। দেশগুলোর আদ্যাক্ষর দিয়ে আঞ্চলিক এই সংগঠনের নামকরণ করা হয়েছে।

পরে মিয়ানমার যোগ দেওয়ায় এই সংস্থার নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা অ্যান্ড থাইল্যান্ড ইকোনমিক কো অপারেশন- বিমসটেক (বিআইএমএসটি-ইসি)। পরে ২০০৪ সালে নেপাল ও ভুটান যোগ দেওয়ার পর সংস্থাটির নতুন নামকরণ করা হয়। এটির নাম দেওয়া হয় বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন-বিমসটেক।

বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল এম শহিদুল ইসলাম জানান, বিমসটেক গঠনের উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো, বাণিজ্য বাড়ানো, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও জ্বালানি সহযোগিতা বাড়ানো।

তিনি বলেন, বিমসটেকের সাত সদস্যের পাঁচটি হলো দক্ষিণ এশিয়ার, দুটি হলো পূর্ব এশিয়ার। এর মানে হলো বিমসটেক দক্ষিণ এশিয়ার ও পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে। দেশগুলো বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যুক্ত। পাঁচটি দেশ একেবারে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে, আর অপর দুটি দেশ অর্থনৈতিকভাবে, যোগাযোগ ও পরিবেশগতভাবে সরাসরি বঙ্গোপসাগরের ওপর নির্ভরশীল।

এম শহিদুল ইসলাম জানান, বিমসটেক যখন গঠিত হলো, তখন সার্ক ও আসিয়ান নামে দুটি শক্ত কাঠামোর আঞ্চলিক সংগঠন ছিল। তাহলে নতুন সংগঠনের কী প্রয়োজন ছিল। জবাবে তিনি বলেন, এই অঞ্চলের নেতৃত্বের ইচ্ছে ছিল, বাণিজ্যের মাধ্যমে বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো, প্রযুক্তি হস্তান্তর, জ্বালানি সহযোগিতা বাড়ানো এবং যোগাযোগ বা কানেক্টিভিটি প্রতিষ্ঠা করা।

যখন বিমসটেক গঠিত হলো, তখন মূলত এটি ছিল প্রকল্পভিত্তিক সংস্থা। পরে এটি ভূমিকাভিত্তিক বা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক হয়ে পড়ল। ২০১৪ সালে ঢাকায় বিমসটেকের সদর দপ্তর হলো। তারপর ১৪টি খাত বা সেক্টর চিহ্নিত হলো। যেমন- বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সন্ত্রাস দমন, জলবায়ু পরিবর্তন ও কানেক্টিভিটি।

বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালে নেপালে বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে চার্টার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। একটা খসড়া তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন মিটিংয়ের নিয়মকানুন তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলনে চার্টার চূড়ান্ত হবে। সম্মেলনটি হবে শ্রীলঙ্কায় ২০২০ সালে।

প্রতিষ্ঠার পর আজ পর্যন্ত বিমসটেকের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে এটির কোনো কাঠামো ছিল না। এখন সংস্থাটির একটি সদর দপ্তর হয়েছে। আগে তিনজন পরিচালক ছিলেন, এখন হচ্ছেন সাতজন। এই মুহূর্তে পাঁচজন পরিচালক আছেন। তারপর চার্টার হতে যাচ্ছে। তহবিল তৈরির মেকানিজম নিয়ে সমস্যা ছিল। এখন বিমসটেক উন্নয়ন তহবিল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ বলছেন শুরুতে তহবিল ২ বিলিয়ন ডলার হোক, কেউ বলছেন ৫০ মিলিয়ন ডলার। বিমসটেক আবহাওয়া ও জলবায়ু ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ভারতে। এ ছাড়া বিমসটেক এনার্জি সেন্টার ও কালচারাল সেন্টার হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় প্রযুক্তি হস্তান্তর বিষয়ে সেন্টার হতে যাচ্ছে।

বিমসটেক নিয়ে আগে যে অনিশ্চয়তা ছিল, এখন তা নেই বলে মনে করেন সেক্রেটারি জেনারেল এম শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সন্ত্রাস দমনের ওপর বিমসটেক জোর দিয়েছে। ২০০৯ সালে একটি কনভেশন সই হয়েছে। যদিও এটি রেটিফাই হয়নি। ভুটান করেনি। বিমস্টেক কনভেনশন অন মিউচুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স ইন ক্রিমিনাল ম্যাটারস সই হবে শিগগির।

এ বছর বাংলাদেশে দুটি মন্ত্রী পর্যায়ের মিটিং হবে বলে জানান সেক্রেটারি জেনারেল এম শহিদুল ইসলাম। কালচারাল মন্ত্রীদের বৈঠক জুলাইয়ে ও পর্যটনমন্ত্রীদের বৈঠক হবে সেপ্টেম্বরে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads