• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

ফিচার

‘যে খাবারের ব্যবসাই করুন মানের দিক থেকে আপস নয়’

  • ফিচার ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৭ অক্টোবর ২০২০

অভিষেক সিনহা। জন্ম ভারতের ধানবাদে। বড় হয়েছেন কোলোনিতে। পড়াশোনা করেন হোটেল ম্যানেজমেন্টের ওপর, ইউকের রবার্টগার্ডেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

২০০২ সালে পাড়ি জমান আমেরিকায়। সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ শুরু করেন। অভিষেক সানফ্রানসিসকোতেও কাজ করেন। ২০০৪ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন। কলকাতার হোটেল শেরাটনে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। ২০০৬ সালে আসেন বাংলাদেশে। যোগ দেন ‘খাজানা’তে। সেখানে ১২ বছর জিএম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে সেই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হন। তারপর অভিষেক চিন্তা করলেন নিজেই যদি একটি ফুড বিজনেস করতে পারেন মন্দ কীসের। যেই ভাবনা সেই কাজ। চালু করলেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘কারিএসেন্ট’। এটি ‘আইএসও’ সনদপ্রাপ্ত। ‘কারিএসেন্ট’-এ ইন্ডিয়ান ফুড পাওয়া যায়। বাংলাদেশে ক্যান সুইটস এখানে পাওয়া যায়। এই ক্যানে যে কোনো মিষ্টি ৬ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

বর্তমানে করোনার প্রভাব পড়েছে এই ব্যবসার ওপর। অভিষেক বলেন, ‘কোভিডে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি আমাদের ক্ষতিটা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য। যেহেতু আমাদের এখানে খাবারের মান আলাদা ও মূল্যটা একটু বেশি। এখানে করপোরেট লেভেলের লোকজনই বেশি আসে। কিন্তু করোনার কারণে এখন এখানে অনেকেই বাইরে বেরোতে সাহস পান না। যতক্ষণ পর্যন্ত না পরিবেশ স্বাভাবিক হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের এভাবেই চলতে হবে। আগে আমাদের লাউঞ্জ ভরা থাকত। বিভিন্ন পার্টি হতো। এখন আর তা হচ্ছে না। এর মূল কারণই হলো করোনা।’

বড় বড় হোটেলগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হলেও ক্যাফেগুলোর ব্যবসা ভালোই চলে। এর কারণও আছে বলে জানান অভিষেক। বলেন, ‘ক্যাফেগুলো ভালো চলার কারণ হচ্ছে সেখানে দাম কম। যেমন ধরুন, একদল ছেলেমেয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে। তারা একটি ক্যাফেতে বসলো। সবাই মিলে সেলফি তুলল। কোল্ড কফি খেল। আড্ডাও দিতে পারল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কম খরচেই তাদের আয়োজন সফল হয়।’ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঢাকায়। বাংলাদেশকেই নিজের দেশ মনে করেন অভিষেক। বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশ অনেক ভালো একটি দেশ। এদেশের মানুষ সংস্কৃতিমনা। তারা অতিথিদের আপ্যায়ন করে। এখানে খাবারের ব্যবসা করার ভালো পরিবেশ আছে। এখানকার মানুষের সঙ্গে মানুষের ভ্রাতৃত্ববন্ধন রয়েছে। ভালোবাসার টানে, মায়ার টানে এখানে থেকে গেলাম। এদেশের পরিবেশ, সমাজের সঙ্গে আমি মিশে গেছি। তাই এখানেই স্থায়ী হয়ে গেলাম।’

এই ব্যবসায় অনেক তরুণও এগিয়ে আসছে। অভিষেক মনে করেন রাজধানী ঢাকায় এ ব্যবসায় লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে। অভিষেক বলেন, ‘নতুনদের মধ্যে অপার সম্ভাবনা আছে। আপনি খেয়াল করলে দেখবেন রাজধানী ঢাকায় অনেক ফুডকোট গড়ে উঠেছে। সেসব জায়গায় সন্ধ্যার পর তিলধারণের জায়গা থাকে না। আগে মানুষ ঘরে খাবার খেত। এখন মানুষ কোনো অনুষ্ঠান ছাড়াই বাইরে বেরোয়। বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খায়। এটা রাজধানীবাসীর এক ধরনের ট্রেন্ড হয়ে গেছে। আবার যারা বাসায় থেকে খাবার খেতে চান, তাদের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান হোম ডেলিভারি দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে অনেক তরুণ এখন এ ব্যবসা শুরু করেছেন। তবে আমি নতুনদের ক্ষেত্রে বলব, অবশ্যই নতুন ও ব্যতিক্রমী ফুড মেনু নিয়ে ব্যবসা শুরু করুন। গৎবাঁধা ফুডের ব্যবসা করলে আপনার ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে।  তার বদলে আপনি যদি সেখানে নতুন যে কোনো ফুডের সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করেন, তাহলে অনেকেই তা খেতে চাইবে। একটি কথা মনে রাখা দরকার, যে খাবারের ব্যবসাই করুন মানের দিক থেকে কখনোই আপস করবেন না।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads