• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

উৎসব

বৈশাখে ঘোরাঘুরি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৯ এপ্রিল ২০১৮

ঢাকা শহরে এমনিতেই ঘোরাঘুরি করে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতন জায়গা কম। যা-ও দুই-একটা আছে বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে তা হয়ে ওঠে জনারণ্য। নিঃশ্বাস নিতে গিয়ে আরো হাঁপিয়ে উঠতে হয়। তবুও নগরবাসীর কাছে কয়েকটি স্থান স্বল্প সময়ে ঘোরাঘুরির শেষ ভরসা। ঢাকা শহরের ঘোরাঘুরি করার মতো জায়গাগুলোর খবরাখবর জানাচ্ছেন সৈয়দ মিজান

 

বছিলা ব্রিজ

মোহাম্মদপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতুটি সবার কাছে পরিচিত ‘বছিলা ব্রিজ’ নামেই। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর স্থাপিত এই ব্রিজটিতে বিকালের বাতাস উপভোগ করতে আসেন অনেকেই। গ্রামের একটা আবহ আছে এলাকাটিতে। নদীর ওপারেই কেরানীগঞ্জ। দশ টাকা অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে যাওয়া যায় আটিবাজার। ওখানে নানা তাজা শাকসবজির দেখা মেলে। ব্রিজের ওপর দাঁড়ালে বিকালের সূর্যাস্ত দেখা যায় প্রাণভরে। এখানে নদীতে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানোও যায়। এজন্য ঘণ্টায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ভাড়া পড়বে।

 

হাতিরঝিল

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকাটিতে হুট করেই পাওয়া যায় শীতল বাতাসের ছোঁয়া। ধুলোবালির ঢাকা শহরে হাতিরঝিল যেন একখণ্ড মরুদ্যান। এখানে নিমেষেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। নাগরিক জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে পহেলা বৈশাখের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার বা প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরতে গেলে প্রশান্তি নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবেন। হাতিরঝিলের প্রধান আকর্ষণ ঝিলের পানি ছুঁয়ে আসা বাতাস। সন্ধ্যার পর হাতিরঝিলের আরেক রূপ দেখা যায়। রঙবাহারি বাতি আর পানিতে তার ছায়া দেখে যে-কারো চোখ জুড়াতে বাধ্য।

 

রবীন্দ্র সরোবর

শহরের বুকে জলের কাছাকাছি হবার আরেকটি জায়গা হলো রবীন্দ্র সরোবর। ধানমন্ডি লেক নগরবাসীর জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তির এক জায়গা। সবুজ প্রকৃতির কোলে দাঁড়িয়ে চোখ মুদে জলের ঘ্রাণ নিলে ভেতরটা সতেজ হয়ে যায় মুহূর্তেই। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্র সরোবরে থাকে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজনও।

মঙ্গল শোভাযাত্রা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে প্রতিবছর মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই শোভাযাত্রাটি বাংলা নববর্ষের মূল আকর্ষণে পরিণত হচ্ছে দিনকে দিন। নববর্ষের সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারাটাও নিঃসন্দেহে মনকে রাঙিয়ে তুলবে বহু রঙে। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নববর্ষকে ঘিরে নানান আয়োজন থাকে। চাইলে উপভোগ করা যায় সেগুলোও।

রমনার বটমূল

ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তনের আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে রমনার বটমূলে থাকে আয়োজন। ছায়ানটের শিল্পীরা বর্ষবরণ করেন গানে গানে। প্রতিবছরই দারুণ উপভোগ্য একটি অনুষ্ঠান করে ছায়ানট। এই অনুষ্ঠান দেখার পাশাপাশি ঘোরা যায় রমনা পার্কের গাছের রাজ্যে। নানা প্রজাতির গাছ আছে রমনা পার্কে। নতুন বছরের এই সময়টা মহুয়া ফুল ফোটার মৌসুম। রমনা পার্কে বেশ কয়েকটি মহুয়া গাছ আছে। গাছের নিচে বসলে সুন্দর একটি সময় কেটে যাবে অনায়াসে।

পুরান ঢাকা

ঢাকা শহরের খাবারের খনি বলা হয় পুরান ঢাকাকে। ভোজনপ্রিয়দের পছন্দের তালিকাতে তাই প্রথম অবস্থানেই থাকে পুরান ঢাকা। ঐতিহ্যবাহী নানান খাবার মিলবে পুরান ঢাকার অলিতে-গলিতে। হাজির বিরিয়ানি, নান্না বিরিয়ানি, বিসমিল্লাহ কাবাব, বিউটি লাচ্ছি- এরকম হরেক রকম বিখ্যাত খাবার পাওয়া যাবে পুরান ঢাকায়। এ ছাড়াও বিখ্যাত খাবার বাকরখানি তো আছেই। নববর্ষের প্রথম দিনটিতে পরিবারকে নিয়ে সুন্দর একটি সময় কাটাতে পুরান ঢাকা পছন্দ অনেকের।

নববর্ষ আসার আগেই গরম আবহাওয়ার আগমন ঘটে প্রকৃতিতে। উৎসবপ্রিয় বাঙালি গরমকে উপেক্ষা করেই বের হয় নববর্ষের দিন প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে। ঘুরতে বের হলে বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। রোদ থেকে বাঁচতে ছাতা রাখতে হবে সঙ্গে এবং অবশ্যই ভিড়ের সময় মোবাইল মানিব্যাগ সাবধানে রাখতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads