শুঁটকির নাম শুনলেই অনেকের জিভে জল চলে আসে। আবার কেউ কেউ শুঁটকির কথা শুনলেই পালায়। শুঁটকি আসলে খুবই মজাদার আর জিভে জল আনার মতোই খাবার, যদি সেভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। যারা শুধু শুঁটকির গন্ধের কথা চিন্তা করে কখনোই শুঁটকি চেখে দেখেননি, তারা লইট্টা শুঁটকির এই পদটি একবারের জন্য হলেও স্বাদ নিতে পারেন। শুঁটকি রান্না করতে গেলে প্রথমে একটু গন্ধ লাগবেই কিন্তু ঠিকভাবে রান্না করতে পারলে রান্নার শেষে আর কোনো গন্ধ থাকবে না। লইট্টা শুঁটকির দারুণ এই রেসিপিটি দিয়েছেন- আননিসা সেজুতি
উপকরণ
১. লইট্টা শুঁটকি ৫-৭ পিস
২. পেঁয়াজকুচি ৩ কাপ
৩. আস্ত রসুন কোয়া ২ কাপ (ভালোভাবে ছিলে নিতে হবে)
৪. পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ
৫. রসুন বাটা ২ চা চামচ
৬. জিরা বাটা ১ চা চামচ
৭. ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ
৮. আদা বাটা ১ চা চামচ
৯. কাঁচামরিচ কুচি ১ কাপ (ঘ্রাণের জন্য চাইলে বোম্বাই মরিচও দিতে পারেন)
১০. হলুদ গুঁড়া পরিমাণমতো
১১. মরিচ গুঁড়া ২ চা চামচ
১৩. মটরশুটি ১ কাপ
১৪. লবণ পরিমাণমতো
প্রণালি : প্রথমে লইট্টা মাছের মাথা, লেজ আর পাশের কাঁটা ফেলে ১ ইঞ্চি পরিমাণ ছোট ছোট পিস করে কেটে নিতে হবে। তেল ছাড়া একটি কড়াইতে ভালোভাবে টেলে নিতে হবে। এরপর মাছগুলোকে হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর মাছগুলোকে খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যেহেতু শুঁটকি মাছ, তাতে বালু থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত বালু পুরোপুরি না চলে যায়, ততক্ষণ ভালোভাবে ধুতে হবে। এরপর একটি প্যানে তেল দিয়ে তার মধ্যে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা বাদামি করে ভেজে নিয়ে একে একে সব বাটা মসলা দিয়ে কষাতে হবে। একটু কষানোর পর সামান্য পানি দিয়ে তার মধ্যে ধনে গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, আস্ত রসুন কোয়া আর লবণ দিয়ে আবার ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। মশলা কষানো হয়ে গেলে তার মধ্যে মাছ দিয়ে আরো কষাতে হবে। কিছুক্ষণ পরে মটরশুটি আর কাঁচামরিচ দিয়ে দিতে হবে। খুব ভালোভাবে কষানো হয়ে গেলে পানি দিয়ে দিতে হবে। মাছটা যেন সিদ্ধ হয় ততটুকু পরিমাণ পানি দিলেই হবে। পানি মোটামুটি শুকিয়ে এলে মাছ খুন্তি দিয়ে নাড়তে হবে। এমনভাবে নাড়তে হবে যেন নাড়তে নাড়তে মাছ খুলে যায়। পানি শুকিয়ে তেল না ওঠা পর্যন্ত নাড়তে হবে। নাড়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে কোনো মাছের টুকরা যেন আস্ত না থাকে। সব যেন গলে যায়। নাড়ার সময় যদি মনে হয় মাছ কড়াইয়ের তলায় লেগে যাচ্ছে, তাহলে বুঝতে হবে রান্না প্রায় হয়ে গেছে। আরো কিছুক্ষণ নাড়ার পর শুঁটকির রঙ একটু হালকা কালচে হয়ে গেলেই চুলা থেকে নামিয়ে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন লইট্টা শুঁটকি ভুনা।