• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নৌকার জন্য দ্বারে দ্বারে যান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

আ.লীগের বর্ধিত সভায় শেখ হাসিনা

নৌকার জন্য দ্বারে দ্বারে যান

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৮ জুলাই ২০১৮

আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আগামী সাধারণ নির্বাচনের জন্য ভোট চাইতে এখন থেকেই মানুষের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগই দেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করে। মানুষ কিন্তু ভুলে যায়। এ জন্য আমাদের উন্নয়ন দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে, তাদের বোঝাতে হবে, তাদের কাছে বার বার যেতে হবে।’ গতকাল শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার তৃতীয়পর্যায়ে প্রদত্ত ভাষণে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। একই দিন পৃথক অনুষ্ঠানে রাজধানীতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১০টি বহুতল ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাসস

বিশেষ বর্ধিত সভায় জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনকে সমর্থন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু আমরা নির্বাচন নিয়ে জোট করেছিলাম। আমাদের সেই নির্বাচনী জোটকে বজায় রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সঙ্গে সঙ্গে যাদের আমরা নমিনেশন দেব, (তৃণমূলের মতামত নিয়ে এবং সার্ভের ভিত্তিতে যে নমিনেশন দেওয়া হবে) যাকে নৌকা মার্কা দেব, তার পক্ষে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যেন নৌকা কোনো মতে না হারে।’ ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে একটা ধর্ম হয়ে যায়, সবগুলোতে তো জিতব এই একটা সিটে না জিতলে আর কী হবে, ২০০৮ সালে এই চিন্তাধারাটা ছিল- এটার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়,’ সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরো মামলা থাকার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু তিনি হাজিরা দেন না। হাজিরা দিলেই ধরা খাবে।’ খালেদা জিয়া অসুস্থ হলেও মামলায় হাজিরা দিতে না পারার মতো অতটা গুরুতর অসুস্থ কি না- এ বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করেন প্রধানমন্ত্রী। মানবিক কারণে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় সারা বিশ্বের সমর্থন আমরা পেয়েছি, সেই সমর্থন নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের মানুষের উন্নতি হয়। গ্রামের অর্থনীতি আজ উন্নত হয়েছে এবং জনগণের আয় বাড়ায় তারা সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারছে, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করতে পারছে- এ কথাগুলো সবাইকে বলতে হবে। ‘জনগণের কাছে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ভোট চাইতে হবে। যাতে তারা অতীতের মতো আবারো আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়’, বলেন তিনি। দল ও সহযোগী সংগঠনের অভ্যন্তরীণ মতভেদ ও দ্বন্দ্ব এখনই মিটিয়ে ফেলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে আগামীর নির্বাচন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়েই কঠিন হবে। কোনো আসন নিয়ে অমনোযোগী হওয়ার সুযোগ নেই, কোনো আসন নিয়ে অমনোযোগী হওয়ার মানেই হবে সে আসনে পরাজয়, যার কারণে আমাদের সরকার গঠনের সুযোগ ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে, বলেন তিনি।

তার সরকারের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখবেন, আওয়ামী লীগ যদি আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে, তাহলে এ বিচার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত) আবার মানুষের ওপর, তাদের জানমালের ওপর আক্রমণ শুরু করে দেবে, দারিদ্র্য বাড়িয়ে শিক্ষার হার কমিয়ে ফেলবে, সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচি, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সব বন্ধ করে দেবে, অতীতে যেমনটি করেছিল’, বলেন তিনি। ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে খালেদা জিয়ার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই মানুষ হত্যা করেও সে নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। কারণ জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আর এ জনগণই তো মূল শক্তি। আমাদের শক্তিই হচ্ছে জনগণ। সেই জনগণকে নিয়েই আমরা রাজনীতি করি, তাদের কল্যাণেই আমাদের রাজনীতি। এ কথাটা সাধারণ মানুষের কাছে আপনাদের তুলে ধরতে হবে।

সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্বাগত বক্তৃতা দেন। দলের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ শোক প্রস্তাব পাঠ করেন। প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। তৃতীয় পর্যায়ের এদিনের বিশেষ বর্ধিত সভায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনা বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এর আগে ৩০ জুন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের সভা হয়। আর ২৩ জুন জেলা-উপজেলা, মহানগর, পৌরসভার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যানদের নিয়ে প্রথম পর্যায়ের বর্ধিত সভা হয়।

১০ বহুতল ভবন উদ্বোধন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রাজধানীর মতিঝিল এবং আজিমপুর সরকারি কলোনি এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ১০টি বহুতল ভবন উদ্বোধন করেছেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিদ্যমান আবাসন সুবিধা ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার অংশ হিসেবে সকালে পৃথক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মতিঝিলে ৪টি ২০-তলা ভবনে মোট ৫৩২টি এবং আজিমপুরে ৬টি ২০-তলা ভবনে মোট ৪৫৬টি ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করা হয়।

উল্লেখ্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ অন্যান্য শহরে বহুতলের মোট ২৩টি আবাসিক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন আয়তনের মোট ৯৭০২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো ১৯টি প্রকল্পের আওতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৮ হাজার ১৯০টি ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ চলমান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads