• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮
আওয়ামী লীগ থাকলে সব গ্রাম শহর হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিঅ্যাক্টর বিল্ডিং নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন

ছবি : পিআইডি

সরকার

পাবনায় সমাবেশে শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ থাকলে সব গ্রাম শহর হবে

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৫ জুলাই ২০১৮

দেশবাসীকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল পুনরায় নির্বাচিত হলে জনগণের কাছে দেওয়া ওয়াদা পূরণ করবে। প্রত্যেক গ্রামে নগরের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে। গতকাল শনিবার পাবনা পুলিশলাইন্স মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যে ওয়াদা আপনাদের দিয়েছি নিশ্চয়ই তা পূরণ করব। নিশ্চয়ই এদেশ উন্নত-সমৃদ্ধিশালী হবে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আপনারা যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেন আর আওয়ামী লীগ যদি সরকারে আসতে পারে তাহলে প্রত্যেক গ্রামে প্রতিটি জনগোষ্ঠী নগরের সুবিধা পাবে এবং সুন্দরভবে বাঁচবে। প্রত্যেকটি গ্রামকে আমরা নগরে উন্নীত করব-শহরে উন্নীত করব।’

বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শেখ হাসিনা এ সময় সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘আপনাদের দোয়া চাই, সহযোগিতা চাই। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারে না।’ তিনি বলেন, আমার জীবনে তো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আজকে স্বজনহারা বেদনা নিয়েই আমি এসেছি শুধু আপনাদের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছি। কারণ, আমার বাবা চাইতেন এদেশের প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই আমরা সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। আগামী নির্বাচনে আপনারা যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেন আমরা আবারো ক্ষমতায় আসব। আবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ পাব। শেখ হাসিনা এ সময় নৌকায় ভোট প্রদানের জন্য জনগণের অঙ্গীকার আহ্বান করলে উপস্থিত হাজার হাজার জনতা দুই হাত তুলে নৌকায় ভোট প্রদানে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা জানান।

পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, দলের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ‘রিঅ্যাক্টর বিল্ডিং (উৎপাদন কেন্দ্র)’ নির্মাণকাজের দ্বিতীয় পর্যায়ের ঢালাইয়ের কাজ উদ্বোধনের জন্য পাবনা আসেন। সমাবেশস্থল থেকেই তিনি পাবনাবাসীর জন্য ৪৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পাবনাবাসীর উদ্দেশে উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমরা আপনাদের জন্য এতগুলো উপহার নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছেন, আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এই নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলেই উন্নয়ন হয়েছে। কারণ নৌকা দেয়। নৌকায় ভোট দিয়ে আমরা মাতৃভাষার অধিকার পেয়েছি, নৌকায় ভোট দিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ঈশ্বরদী থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত রেললাইন আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন। সেই সঙ্গে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত ট্রেন চালুরও ঘোষণা দেন। চারদলীয় জোট আমলের সঙ্গে তার সরকারের শাসনামলের তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ চায় জনগণের কল্যাণ, আওয়ামী লীগ চায় দেশের কল্যাণ। আমরা ক্ষমতায় এলে মানুষের কল্যাণে কাজ করি। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজই হলো লুটপাট, দুর্নীতি, হত্যা, ধর্ষণ ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ। এ সময় জোট সরকারের আমলে পাবনায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসে নিহত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তালিকা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই মানুষ হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। সারা বাংলাদেশে এই তাণ্ডব তারা সৃষ্টি করেছিল। ‘কই আমরা তো প্রতিশোধ নিতে যাইনি। আমরা পুরোটা সময় কাজে লাগিয়েছি দেশের মানুষের উন্নয়নে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তাকে তো আমরা গ্রেফতার করিনি। কোর্টে রায় হয়েছে। এতিমের সম্পদ চুরি করলে সাজা তো হবেই।’ মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিষয়ে সবাইকে সচেতন করে শেখ হাসিনা বলেন, মাদক একটা পরিবার-সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ একটা দেশ, একটা সমাজ, একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। ‘সাড়ে সাত কোটি মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’, জাতির পিতার ভাষণের এই উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি, দাবিয়ে রাখতে পারবে না। জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করব।

গত জানুয়ারিতে প্রাক-নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর এটি ছিল শেখ হাসিনার সপ্তম সমাবেশ। এর আগে তিনি সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরে জনসভা করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads