• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
রাজধানীর চারদিকে এলিভেটেড রিং রোড় নির্মাণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর রামপুরা-বাড্ডা-প্রগতি সরণী এলাকায় হাতির ঝিল প্রকল্পের নর্থ ইউ-লুপ উদ্বোধনকালে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবি: সংগৃহীত

সরকার

রাজধানীর চারদিকে এলিভেটেড রিং রোড় নির্মাণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ জুলাই ২০১৮

রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এবং যানজট নিরসনে সমগ্র ঢাকাকে ঘিরে একটি এলিভেটেড রিং রোড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পুরো ঢাকা ঘিরে একটা রিং রোড করবো। যেটা হবে সম্পূর্ণভাবে এলিভেটেড রিং রোড। যানবাহন রাস্তা দিয়ে নয়, উপর দিয়েই যাবে-এইভাবে একটা এলিভেটেড রিং রোড আমরা নির্মাণ করে মানুষের যোগাযোগটা যাতে আরো সহজ হয় সেই ব্যবস্থাও আমরা করে দেব। আমরা ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজ হাতে নিয়েছি।’
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর রামপুরা-বাড্ডা-প্রগতি সরণী এলাকায় হাতির ঝিল প্রকল্পের নর্থ ইউ-লুপ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন শেখ হাসিনা। ইউ-লুপটি উদ্বোধনের পর পুরো এলাকাটি ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। এটি উদ্বোধনের পর পরই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ’র (রাজউক) পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড এটি নির্মাণ করে। ৫৫৮ দশমিক ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই ইউ-লুপটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। ঢাকা শহরকে যানজট মুক্ত ও এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা এবং শহরকে আধুনিক ও উন্নতমানের করা যায় তার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই বিজয় সরনী ফ্লাইওভার, জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, কুড়িল ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছি। দুই স্তর বিশিষ্ট মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে এবং এক্সপ্রেস রেলওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ ও নেওয়া হয়েছে, ঢাকা সার্কুলার রুট এবং ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণেরও কার্যক্রম আমরা গ্রহণ করেছি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, ঢাকা-১২ আসনের সংসদ সদস্য একেএম রহমতউল্লাহ এবং সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। হাতির ঝিল প্রকল্পের প্রকল্প মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাইদ মোহম্মদ মাসুদ অনুষ্ঠানে ইউ-লুপ প্রকল্পটির ওপর একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
যাত্রাবাড়ি থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম ৮ লেনের মহাসড়ক চালু করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। যেটা শিগগিরই ছয় লেনে উন্নীত করা হবে। ঢাকা-সিলেট রোডও ছয় লেন করা হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রো রেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেল চালু হবে। অবশিষ্ট অংশ ২০২০ সালের মধ্যে চালু হবে ইনশাল্লাহ।
সরকার প্রধান বলেন, গাজিপুর-বিমানবন্দর বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৪০ কিলোমিটার পাতাল রেল এবং পূর্বাচল হতে কুড়িল পর্যন্ত ১০ দশমিক ২০ কিলোমিটার মেট্রো রেল বাস্তবায়নের কার্যক্রম গহণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, রেল এখন মাটির নিচ দিয়েও যাবে আবার উপর দিয়ে যাবে। দুইদিকেই আমরা করছি। তিনি বলেন, হেমায়েতপুর হতে গাবতলী, মিরপুর, গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার এম.আর.টি লাইন-৫ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাম্ভব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এই লাইনেও শহর এলাকায় ১৩ দশমিক ৬০ কিলোমিটার পাতাল রেল নির্মাণ করা হবে।
হাতির ঝিল প্রকল্প রাজধানীর যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ঢাকার শহরের অভ্যন্তরে এই হাতির ঝিল প্রকল্প বাস্তায়নের ফলে এই এলাকার বর্জ্য মিশ্রিত পানিতে নিমজ্জিত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং এই বিষাক্ত পরিবেশকে সবুজের সমারোহ দিয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে গড়ে তোলা হয়েছে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ায় রাজধানীতে মানুষের আগমন বাড়ার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে ঘিরে যেমন রিং রোড করবো পাশাপাশি ঢাকার আশাপাশে ছোট ছোট শহর গড়ে তুলবো। যে শহরগুলো হবে বহুতল ভবন বিশিষ্ট। যেসব ভবনে সব ধরনের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা থাকবে। তিনি বলেন, আর কয়েক বছর পর মানুষের ঢাকায় আর বসবাসের প্রয়োজন হবে না। মানুষ বাইরে থেকে এসে ঢাকায় কাজ করবে, আবার চলে যাবে। সেই পরিকল্পনা নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, মাত্র এক ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছানো যাবে ট্রেনে, এমন দ্রুতগামী বা বুলেট ট্রেন চালু করবো। এই ট্রেন ঢাকা টু চট্টগ্রাম, ঢাকা টু সিলেট, ঢাকা টু রাজশাহী, ঢাকা টু দিনাজপুর, ঢাকা টু বরিশাল, এমনকি ঢাকা টু কলকাতাও চালু করবো।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads