• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের খসড়া অনুমোদন

প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে আজ সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়

ছবি: পিআইডি

সরকার

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের খসড়া অনুমোদন

  • বাসস
  • প্রকাশিত ৩০ জুলাই ২০১৮

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে একটি ট্রাস্টের অধীনে আনতে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন-২০১৮’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, ট্রাস্টের তহবিল ব্যবহার করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা এবং অন্যান্য হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের সঙ্গে কার্যকর রেফারেল ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই এই আইনের লক্ষ্য।

প্রকল্পের আওতায় মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো এই ব্যবস্থায় ট্রাস্টের আওতায় সরকারি-বেসরকারি অর্থায়নের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে আজ অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন-২০১৮’-এর খসড়া মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের প্রেক্ষিতে বিস্তারিত আলোচনার পর কিছু সংশোধনী সাপেক্ষে এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।’

সচিব বলেন, ‘এখন একটি প্রকল্পের আওতায় ক্লিনিকগুলো চলছে। আইনটি পাস হলে ক্লিনিকগুলো ট্রাস্টের আওতায় চলে আসবে।’

সচিব বলেন, ‘সারাদেশেই কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবায় অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। স্বাস্থ্যসেবার যে অগ্রগতি তা কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্যই সাধিত হয়েছে। সারাদেশে ১৪ হাজার ৮৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো থেকে সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৬২ কোটি ৫৭ লাখ।’

বর্তমানে দেশে ১৩ হাজার ৮৬১টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে জানিয়ে জিয়াউল আলম বলেন, ‘আরো এক হাজার ২৯টি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি ন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল আছে। ওই কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের খসড়া করা হয়েছে।’

ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। ট্রাস্টের তহবিল ব্যবহার করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা। এ জন্য প্রয়োজনীয় সামাজিক সহযোগিতা গ্রহণ, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সম্পদ ও অনুদান সংগ্রহ এবং এর সুষ্ঠু ব্যবহার। এ ছাড়া রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকের সঙ্গে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা পর্যায়ে হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি কার্যকর রেফারেল প্রতিষ্ঠা করা।

সচিব বলেন, ‘আইনে কর্মীদের স্থায়ীকরণ, বেতন বৃদ্ধি, পদোন্নতির সুযোগ, গ্রাচুইটি, অবসর ভাতা প্রদান- এসব সুবিধা রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, একটি প্রবিধানের মাধ্যমে এগুলো নিশ্চিত করা হবে। তারা ট্রাস্টের আওতায় থাকবেন। তবে সরকারি যে সুবিধাগুলো আছে সেগুলো সবই তারা পাবেন।’

ট্রাস্টে যে কেউ অনুদান দিতে পারবেন জানিয়ে জিয়াউল আলম বলেন, ‘সরকারি থোক বরাদ্দ থাকবে, অনুদান থাকবে। পাশাপাশি বেসরকারিভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে, স্থানীয় সামাজিক সংগঠন বা ব্যক্তি বিশেষ এখানে দান-অনুদান প্রদান করতে পারবেন।’

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, ‘ট্রাস্টে একটি উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী সভাপতি হবেন। এ ছাড়া একটি বোর্ড থাকবে। যিনি বোর্ডের প্রধান হবেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত খ্যাতিমান ব্যক্তি হবেন। বোর্ড গঠনের বিবরণ আইনে রাখা হয়েছে।’

বোর্ডে একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকও থাকবেন উল্লেখ করে জিয়াউল আলম বলেন, তার পদমর্যাদা হবে সরকারের অতিরিক্ত সচিব বা সমমর্যাদার। বোর্ডের সদস্য সংখ্যা হবে ১৪ জন। বোর্ডের সঙ্গে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যোগোযোগ থাকবে এবং মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে।

তিনি বলেন, ‘কোনো রোগীর চিকিৎসা দিতে ক্লিনিক যদি ব্যর্থ হয়, যদি জটিল রোগী হয় তবে ক্রমান্বয়ে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানো হবে, রেফারেল সিস্টেম থাকবে।’

মন্ত্রিসভার নিয়মিত আলোচনার মধ্যে ছিলো মন্ত্রিসভার বৈঠকের ওপর ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন উপস্থাপন। এই প্রতিবেদনে ১ এপ্রিল ২০১৮ থেকে ৩০ জুন ২০১৮ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।

সচিব জানান, চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল থেকে জুন) মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭৫ শতাংশ। এর আগের বছর একই সময়ে এ হার ছিল ৭১ দশমিক ৬২ শতাংশ। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়েছে।

এন এম জিয়াউল আলম বলেন, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনটি নীতি বা কর্মকৌশল এবং দুটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে সংসদে আইন পাস হয়েছে আটটি।

তিনি বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুরক্ষা সেবা বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং কারা অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে সংগৃহিত দুর্লভ আলোকচিত্র এবং জাতির পিতার বন্দি জীবনের অসংখ্য তথ্য সম্বলিত ‘৩০৫৩ দিন’ পুস্তকের মোড়ক উম্মোচন করেন।

বৈঠকে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সিরিজ জয়ে একটি অভিনন্দন প্রস্তাব উত্থাপিত ও গৃহীত হয়।

এ ছাড়া, বৈঠকে জাতীয় সংসদের খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক হুইপ এবং খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রথম মন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য এবং খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কল্পরঞ্জন চাকমার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads