• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
‘রাজধানীর বস্তি হবে ২০তলা ভবন’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

‘রাজধানীর বস্তি হবে ২০তলা ভবন’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২০ আগস্ট ২০১৮

ঢাকা মহানগরীর আধুনিকায়নে তার সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজধানীর বস্তিগুলো বহুতল ভবনে প্রতিস্থাপিত হবে, যাতে নগরবাসী উন্নত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে জীবন-যাপন করতে পারে। গতকাল রোববার সকালে ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে দাশেরকান্দি পয়োশাধনাগার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীতে কোনো বস্তি থাকবে না। এর স্থলে ২০তলা করে ভবন গড়ে তোলা হবে। এখন যেমন বস্তিবাসী ভাড়া দিয়ে থাকেন তেমনি তখন তারা ওসব ভবনেও দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া দিয়ে বসবাস করবেন।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে দরিদ্র মানুষকে রাজধানীতে আসতে হয়। আবার আমাদের দৈনন্দিন কাজেও এই শ্রমিক শ্রেণির প্রয়োজন পড়ে। তারা যেন একটু শান্তিতে থাকতে পারে সে জন্যই তাদের বসবাসের জন্য একটু ভালো পরিবেশের দরকার।’ শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হচ্ছে; কাজেই তারাও যেন সেই ছোঁয়াটা পায়, সেটা আমাদের দেখতে হবে। তিনি বলেন, কেবল অবস্থাসম্পন্নদের জন্যই নয়, আমাদের উন্নয়ন সবার জন্য।

ঢাকার পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাকে একই পাইপলাইনে নিয়ে আসতে চীন সরকারের সহযোগিতায় ঢাকা ওয়াসার ২০২৫ সালের মধ্যে বাস্তবায়নাধীন মহাপ্রকল্পের অংশ হিসেবে খিলগাঁঁও এলাকায় এই দাশেরকান্দি পয়োশোধনাগার প্রকল্প নির্মিত হচ্ছে। রাজধানীর পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে রাজধানীতে আরো চারটি পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এতে পাগলায় বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় দুটি এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহযোগিতায় রায়েরবাজার ও উত্তরায় আরো দুটি পয়োশোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। অনুষ্ঠানে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও উপস্থাপনায় জানানো হয়, তিন হাজার ৩৭৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। ২৪ হেক্টর জমির ওপর বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পয়োবর্জ্য পরিশোধনের মাধ্যমে ৫০ লাখ নগরবাসীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বস্তি এলাকার পানির ব্যবস্থা আমি করছি, কিন্তু ঢাকা শহরের বস্তিগুলো এখন যে দুরবস্থার মধ্যে আছে সে বস্তি ঢাকা শহরে থাকবে না। আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি- মানুষ কেন এই মানবেতরভাবে জীবন যাপন করবে। তারও তো মানুষ, তারা তো কোনো না কোনো কারণেই বস্তিতে আসে। সরকারপ্রধান বলেন, সবাই ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকবে আর আমার বস্তিবাসী থাকবে না, এটা কেমন কথা। বিদ্যুৎ, পানির প্রি-পেইড মিটার থাকবে, তারা যতটুকু ব্যবহার করবে তার বিল দেবে। কারণ শহর যত উন্নত হয় তার কাজের জন্য এ ধরনের কর্মীও লাগে। কজেই তাদের জীবন-মানটা যেন উন্নত হয় সেদিকেও ভালোভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এভাবে সমগ্র ঢাকা এবং ঢাকা ছাড়াও পর্যায়ক্রমে যে পরিকল্পনা করা হবে তাতে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পরিকল্পনা করেই আমরা কাজ করব।’ ‘ভবিষ্যৎ যে উন্নয়নটা হবে তার ছোঁয়া উচ্চবিত্তের পাশাপাশি এই খেটে খাওয়া নিম্নবিত্তরাও যাতে পায়, তা নিশ্চিত করা হবে। কারণ এ নিম্নবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষের জন্যই আমার রাজনীতি’, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়ানোয় তার সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, ঢাকা ওয়াসার কার্যক্রম আধুনিক ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিলিং সিস্টেমকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। ফলে গ্রাহকসেবার মান বেড়েছে। ঢাকা ওয়াসাকে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা এখানে কাজ করবেন প্রত্যেককে এ কথা মনে রাখতে হবে; প্রত্যেককেই মানুষকে সেবা দেওয়ার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাতিরঝিলসহ রাজধানীর একটি বড় অংশে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ দাশেরকান্দি পয়োশোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার সমালোচনা করে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টিকারীদের সতর্ক করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে তিনি সরকার গঠন করতে পারলে রাজধানীর জলাবদ্ধতার মূল কারণ বক্সকালভার্টগুলো উন্মুক্ত করে এর ওপর দিয়ে এলিভেটেড ওয়ে নির্মাণ করে দেবেন। বুড়িগঙ্গার পানি গৃহস্থালির বর্জ্য ও শিল্পবর্জ্যের মাধ্যমে দূষণ প্রতিরোধে দুই ধরনের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা থেকে টুঙ্গীর তুরাগ নদ পর্যন্ত এ প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং করা হবে। কারণ পানির ধারাটা বজায় রাখতে পারলে বুড়িগঙ্গায় আর দূষণ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি বালু নদী ও ধলেশ্বরীও ডেজিং করতে হবে। যেন সেখান থেকে পনির প্রবাহটা বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত ঠিক থাকে এবং বৃষ্টির পানিটাও ধরে রাখতে পারে। নদী ড্রেজিং ছাড়া আমাদের এই দেশকে রক্ষার আর কোনো উপায় নেই। বাসস

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads