• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
উন্নয়নে ভারতের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

উন্নয়নে ভারতের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারতের অব্যাহত সাহায্য এবং সহযোগিতা কামনা করে বলেছেন, প্রতিবেশী এই দুই দেশকে তাদের উন্নয়ন এবং জনগণের সমৃদ্ধির জন্য একযোগে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের উন্নয়নে  ভারত সরকারের নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একযোগে ‘বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং দুটি রেলওয়ে প্রকল্পের উদ্বোধনকালে ভাষণে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছরে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। জ্বালানি, বিদ্যুৎ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাতসহ আরো নতুন নতুন খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা দুই দেশের জনগণের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছি এবং আমরা এটা অব্যাহত রাখতে চাই। আমি নিশ্চিত যে, আমাদের জনগণের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের মধ্যে উপস্থিত হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ৯ বছরে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বাণিজ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিবেশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনযোগাযোগ ও স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য়-৪র্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডবল লাইন চালু হলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু হয়ে উত্তরাঞ্চল এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও দ্রুততর হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পটির অবস্থান কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত। প্রকল্পটির আওতায় রেলওয়ের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ ৯৬ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার ‘বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’ নির্মাণ উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক। তিনি বলেন, এটি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রথম পাইপলাইন- যা দিয়ে ভারতের শিলিগুড়িতে অবস্থিত নুমালীগড় তেল শোধনাগার হতে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে। শেখ হাসিনা বলেন, প্রাথমিকভাবে বছরে আড়াই লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করা হবে এবং তা পর্যায়ক্রমে ৪ লাখ টনে উন্নীত হবে। তিনি এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। অর্থনৈতিক উন্নয়ন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন সম্ভাবনার দিগন্ত আরো সম্প্রসারিত হবে। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও জনগণের সাহায্য-সহযোগিতার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণ সব সময়ই সুপ্রতিবেশী। আজকের এই আনন্দঘন মুহূর্তে আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও সেদেশের জনগণের অকুণ্ঠ সহযোগিতার কথা।

শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তার জন্মদিন (গত সোমবার) উপলক্ষে হিন্দিতে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর আমরা যৌথভাবে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং রেলওয়ের দুটি প্রকল্পের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করি। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে আজ আমরা আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ যৌথ প্রকল্পের সূচনা করতে যাচ্ছি। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে তার সরকারের উদ্যোগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে এই যোগাযোগ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতার বন্ধনকে নিশ্চিতভাবে আরো সুদৃঢ় করবে।’ বাসস

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads