• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
শিক্ষকদের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

শিক্ষকদের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২১ অক্টোবর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সহযোগিতা চেয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই, যাতে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চলমান গতি বজায় থাকে এবং আমাদের শুরু করা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো শেষ করা যায়। কারণ, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না পারায় আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল।’ গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশন (এফবিইউটিএ) আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে এগিয়ে নিতে চাই; কিন্তু আমি বিশ্বাস করি একটি শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোনো দেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারে না। এ জন্য তার সরকার শিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনারা শিক্ষক, আপনারা মানুষ গড়ার কারিগর। আপনাদের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা।’

এ সময় শিক্ষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই আপনারা এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, আপনাদের হাতে দেশের ভবিষ্যৎ রয়েছে, জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ গড়ার কারিগর সোনার ছেলেমেয়েদের আপনারাই গড়ে তুলবেন। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসতে পারলে শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি পূরণের ইঙ্গিতও দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তাদের দাবিগুলো লিখিত আকারে তার কাছে দেওয়ারও পরামর্শ দেন। তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান স্মরণ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নেরও তাগিদ দেন। তিনি এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বেশি না বাড়িয়ে বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যাতে বিভিন্ন এলাকার ছেলেমেয়েরা ঘরে বসেই লেখাপড়া করতে পারে, সে পরিকল্পনা তার সরকারের রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি শিক্ষার প্রসার এবং শিক্ষকদের কল্যাণে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন।

বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত রাখায় তার সরকারের অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে সরকারের গড়ে তোলা সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন জোরদার করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেটা করতে হলে শিক্ষক, অভিভাবক, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন, জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই মিলেই করতে হবে, সরকারের একার পক্ষে সম্ভব হবে না, সমগ্র সমাজকেই দায়িত্ব নিতে হবে।

তার সরকারের কওমি মাদরাসা শিক্ষাকে মূলধারায় নিয়ে আসার উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে ১৪-১৫ লাখ ছেলেমেয়ে মাদরাসা শিক্ষায় সম্পৃক্ত তারাও যেন উচ্চশিক্ষা পায়, তারাও যেন ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি পার্থিব শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মতো মানুষ হয়ে নিজেদের কর্মোপযোগী করে গড়ে তুলতে পারে, সেটাও আমরা ব্যবস্থা করেছি। আগামীর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাবে বলে এ সময় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো রকম সাম্প্রদায়িকতা যেন আমাদের গ্রাস করতে না পারে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে জনগণ যদি ভোট দেয় তাহলে হয়তো নির্বাচিত হয়ে আসব। আর যদি নাও দেয়, তাহলেও কোনো আফসোস থাকবে না। কারণ বাংলাদেশে উন্নয়নের যে ধারাটা আমরা শুরু করেছি, সেটা যেন অব্যাহত থাকে, তা আপনারাই নিশ্চিত করবেন, সেটাই আমি চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার একটা লক্ষ্যই ছিল টানা দুই মেয়াদে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে পারে তবে উন্নয়নটা দৃশ্যমান হবে যেমনটি নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তারপরও সামনে যেহেতু নির্বাচন এবং নির্বাচনে সবাই যেমন ভোট চায়, আমরাও ভোট চাই। যাতে আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে।’

২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না পারার কারণে উন্নয়নের ধারাটি পিছিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের কর্মসূচিগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কথাও এ সময় স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

এফবিইউটিএ’র সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবায়তুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

দেশের শিক্ষা সম্প্রসারণে বর্তমান সরকারের উদ্যোগগুলো নিয়ে অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি প্রামাণ্যচিত্রও পরিবেশিত হয়। বাসস

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads