• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
একনেকের শেষ বৈঠকে ছোট-বড় ৩৫ প্রকল্প

একনেকের বৈঠক

সংগৃহীত ছবি

সরকার

একনেকের শেষ বৈঠকে ছোট-বড় ৩৫ প্রকল্প

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিয়ে সংশয়

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ০৭ নভেম্বর ২০১৮

চার দিনের ব্যবধানে ১ লাখ ১১ হাজার ৪২৭ কোটি টাকার ৬৩টি প্রকল্পের পর আরো ২০ প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ লক্ষ্যে দুই দিনের ব্যবধানে আজ আবার বসছে একনেক বৈঠক। বড় প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি বৈঠকে ৫০ কোটি টাকার কম বরাদ্দের ১৫টি প্রকল্পই প্রাধান্য পাচ্ছে। আর্থিক সামর্থ্য আর বাস্তবায়ন সক্ষমতা বিচার না করে প্রকল্প অনুমোদনের ‘হিড়িক’ ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। আগামীকাল ৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে এটিই হবে সরকারের বর্তমান মেয়াদে একনেকের শেষ বৈঠক। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, কোনো প্রকল্পের ব্যয় ৫০ কোটি টাকার বেশি হলেই তা অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপন করতে হয়। আর্থিক বিচারে এর  চেয়ে ছোট আকারের প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষমতা পরিকল্পনামন্ত্রীর রয়েছে। তবে তা অবগতির জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করতে হয়। আজ একনেকের বৈঠকেও উঠবে মন্ত্রীর অনুমোদন করা রেকর্ড ১৫টি প্রকল্প। সেগুলো ছাড়াও অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের তালিকায় রাখা হয়েছে আরো ২০ প্রকল্প।

এর বাইরে নোটিশ ছাড়াই সরাসরি উপস্থাপন হতে পারে আরো কিছু প্রকল্প। কমিশন থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এমন প্রকল্প রয়েছে তিনটি। তবে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বৈঠক শুরুর আগেও আরো প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এই তালিকায়।

এদিকে সরকারের আর্থিক সামর্থ্য আর বাস্তবায়ন সক্ষমতা বিচার না করেই বাড়তি প্রকল্প নেওয়া হলে তা আগামীতে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, আগামীতে উন্নয়ন কার্যক্রমে ছোট প্রকল্পগুলোই বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশের খবরকে তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এমনিতেই সামর্থ্যের চেয়ে বেশি প্রকল্প রয়েছে। বাঁচিয়ে রাখতে হলেও প্রতিটি প্রকল্পে কিছু অর্থ বরাদ্দ দিতে হয়। সব প্রকল্পে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দিতে হলে এডিপির আকার অনেক বাড়াতে হবে। তা করতে না পারলে বছরের পর বছর ঝুলে থাকবে সেগুলো। সেক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় অবধারিতভাবেই বাড়বে।

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নেত্রকোনায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে কয়েক বছর ধরে। ২ হাজার ৬৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ধরে এ সংক্রান্ত প্রকল্প একনেকে উঠছে আজ। আগামী বছরের শুরু থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর কাজ শেষ করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোনা কর্তৃপক্ষ। অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া ২৮ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তার ব্যবসা উদ্যোগের সক্ষমতা বাড়াতে ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্প ওঠানো হচ্ছে একনেক সভায়।

জামালপুরের মান্দায় শহীদ কামরুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব উঠছে একনেকে। ৭৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয় ধরে অনুমোদন করা প্রকল্পটির সংশোধিত ব্যয় ১৫৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব উঠছে একনেকে।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ, বহদ্দারহাট বারইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন, চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, ১১টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্থাপন, মাদারীপুরে সরকারি অফিসমূহের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ, চট্টগ্রাম-খুলনা-রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, র্যাব ফোর্সের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন, সোনাগাজী ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ এবং বীজ প্রত্যয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প উঠছে একনেকে।

পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন দেওয়া ১৫ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে আকাশ আলোকচিত্র ধারণের মাধ্যমে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বৃহৎ স্কেলের টপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র প্রণয়ন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দায় শেখ হাসিনা সেতু এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র, নেয়াখালীর হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপে পর্যটনকেন্দ্র, চরফ্যাশন পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন, বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা হতে রুমা পর্যন্ত পল্লী সড়ক নির্মাণ, প্রত্যন্ত এবং চর এলাকায় সৌরশক্তি, নদীর ভাঙন থেকে খুলনা শহরের সরকারি স্থাপনা রক্ষা, খুলনা মিলিটারি কলেজিয়েট স্কুলের অবকাঠামো, যশোর বিএএফএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, বাসসের সাংবাদিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অনলাইনে গণগ্রন্থাগারসমূহের ব্যবস্থাপনা, মোহনগঞ্জ উপজেলায় শৈলজারঞ্জন সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ এবং দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি পরিচালনা প্রকল্প।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads