• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংগৃহীত ছবি

সরকার

বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করুন : প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৯ নভেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে কাজ করুন যাতে আমাদের দেশে মাদক প্রবেশ করতে না পারে এবং আমাদের দেশ মাদক পাচারের রুট না হয়। ছেলেমেয়েদের মাদকাসক্তির কারণে অনেক পরিবার সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পিলখানায় ‘বিজিবি দরবার’-এ নবপ্রতিষ্ঠিত বিজিবি রামু আঞ্চলিক সদর দফতরের পতাকা উন্মোচন এবং নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে নতুন দুই বিজিবি ব্যাটালিয়নের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসস।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের আরো চারটি বিজিবি সেক্টর, ১০টি ব্যাটালিয়ন, ডগ ট্রেনিং অ্যান্ড ব্রিডিং ইউনিট এবং নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাহিনীর সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি ও অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিজিবিতে একটি এয়ার উইং সৃষ্টি করা হয়েছে। এজন্য শিগগির দুটি হেলিকপ্টার ক্রয় করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শাফীনুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সিনিয়র সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।

দরবারে বক্তব্যকালে প্রধানমন্ত্রী বিজিবির উন্নয়নে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে বিজিবি জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। এছাড়া তিনি সীমান্ত অঞ্চলের প্রতি ৭৫ কিলোমিটারে বিজিবির একটি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন এবং প্রতি ৫ কিলোমিটারে একটি বিওপি স্থাপনে তার সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, নাফ নদীর কাছে এবং সুন্দরবন এলাকায় নদীতে টহলের জন্য দুটি নদী ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া চলছে। এজন্য ৪টি অত্যাধুনিক জাহাজ কেনা হচ্ছে। সীমান্ত সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, কক্সবাজার সীমান্তসহ প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকায় আধুনিক প্রযুক্তি ও যানসহ সীমান্ত নজরদারি ও সাড়াদানের ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধে সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী (ইপিআর) সদস্যদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ইপিআর সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটি ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে ১২ হাজার বাঙালি সৈন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। যুদ্ধে ৮ হাজার ২৭৪ জন সৈন্য শহীদ হন। তাদের মধ্যে দুজন বীরশ্রেষ্ঠ যথাক্রমে শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ এবং শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আবদুর রউফ আমাদের গর্ব। বিজিবির গৌরবগাথার ইতিহাসে আটজন বীরউত্তম, ৩২ জন বীরবিক্রম এবং ৭৭ জন বীরপ্রতীক রয়েছেন।

শেখ হাসিনা তার সরকার গঠনের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সেনা বিদ্রোহের সময়ে শহীদ ৫৭ সেনা কর্মকর্তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, সরকার দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে এবং বাহিনী সম্পূূর্ণ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করে। এই পুনর্গঠন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিডিআরের পুনঃনামকরণ করা হয় বিজিবি এবং বিজিবি আইন-২০১০ প্রণয়নসহ বিজিবির উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে বিজিবির জন্য আরো ১৫ হাজার জনবল এবং আরো চারটি সেক্টর, ১০টি ব্যাটালিয়ন, ডগ ট্রেনিং ও ব্রিডিং ইউনিট এবং নতুন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বিজিবির কল্যাণে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, বিজিবি কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ছাড়া সীমান্ত ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির সদস্যদের বেতন বৈষম্য সমন্বয় কর্মকাণ্ড চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সর্বনিম্ন স্তর থেকে সুবেদার মেজর পর্যন্ত বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত ভাতা পাচ্ছে এবং দুই মাসের অগ্রিম বেতনসহ বছরে দুই মাসের অর্জিত ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। তাদের রেশন সুবিধাসহ অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করে বলেন, তার সরকার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন ইস্যু বিবেচনা করে গত বছরের জুলাই মাসে রামু আঞ্চলিক সদর দফতর প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে গত বছরের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গারা তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় এসে আশ্রয় নেয়। বিজিবি সদস্যরা রোহিঙ্গা শিবিরে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন কর্মসূচি এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় খুবই পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads