• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
অবশেষে প্রবাসী মতিয়ারের দায়িত্ব নিল সরকার

মালয়েশিয়া প্রবাসী মুমূর্ষু মতিয়ার

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সরকার

অবশেষে প্রবাসী মতিয়ারের দায়িত্ব নিল সরকার

  • আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৮ নভেম্বর ২০১৮

মুমূর্ষু মতিয়ার কি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরতে পারবে? এই শিরোনামে জাতীয় দৈনিক ‘বাংলাদেশের খবর‘-এ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।  বিষয়টি প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মতিয়ার রহমানের দেশে ফেরার ব্যপারে যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শনিবার মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের শ্রম কাউন্সিলর জনাব সায়েদূল হক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব অব মালয়েশিয়ার সিনিয়র সহ- সভাপতি শেখ আহমাদুল কবিরসহ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত মার্চ মাসে মালয়েশিয়া প্রবাসী পাবনা আতাইকুলা থানার সরাডাংগী গ্রামের মোঃ মতিয়ার রহমান (৪০) কে অপহরণ করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চেয়ে পরবর্তীতে না পেয়ে নির্যাতন করে মৃত ভেবে মালয়েশিয়ার সাবা বারনাম প্রদেশের একটি জঙ্গলে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে বাংলাদেশী প্রবাসীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেই থেকে আজ অবধি তার চিকিৎসায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে ইতিমধ্যে এই টাকা বাংলাদেশী কমিউনিটি ও দানশীল ব্যাক্তিরা পরিশোধ করলেও এখন তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে হলে কিছু ঔষধপত্র, হাসপাতালের খরচ এবং বিমানভাড়া বাবদ আরো কয়েক লক্ষ টাকা প্রয়োজন। মতিয়ার রহমান দীর্ঘ সময়ের চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হলেও বর্তমানে কোনো কথা বলতে পারে না, নিজে চলাফেরা করতে পারছে না এবং কোনো স্মৃতি মনে করতে পারছে না। এমনকি প্রাকৃতিক কাজ বিছানাতেই সারছেন। এমতাবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে উন্নতমানের ইনজেকশন ও খাবার হিসাবে বিশেষ ধরনের জুস এবং স্যুপ দিচ্ছেন। ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন তাকে বাংলাদেশের প্রচলিত চিকিৎসা ও স্বজনদের সেবা শুশ্রূষায় সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে কারন মালয়েশিয়ার চিকিৎসা অত্যান্ত ব্যয়বহুল। তাই তার দেশে ফেরায় সহায়তার জন্য সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মতিয়ার রহমানের দেখ ভাল করা সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী বললেন ‘বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকার মালয়েশিয়া প্রতিনিধি আশরাফুল মামুনসহ নিউজ ডেস্কের সংশ্লিষ্ট সবাইকে অসংখ্যা ধন্যবাদ সংবাদটি প্রকাশের জন্য। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে মতিয়ারের জন্য বড় ধরনের একটা আর্থিক ফান্ড গঠনের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মালয়েশিয়া শাখা, বিএনপি মালয়েশিয়া শাখা সভাপতি বাদলুর রহমানের কমিটি, জাতীয় শ্রমিকলীগ মালয়েশিয়া শাখারসহ সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার এবং মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশী বিভিন্ন কমিউনিটি।

সরকারসহ মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটি মতিয়ার রহমানের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার খবর মতিয়ারের স্ত্রী বিউটি বেগমকে মুঠো ফোনে জানালে তিনি প্রথমে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন ‘আমার স্বামীর জীবন বাচাতে যারা এগিয়ে এসেছেন বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকার ও মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশী বিভিন্ন কমিউনিটির কাছে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো’। তিনি আরো বলেন, ‘আমি কত বড় অর্থ কষ্টে আছি বলে বুঝাতে পারবো না সে মালয়েশিয়া গিয়ে মাত্র ৩১ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল তারপর থেকে একমাস নিখোঁজ ছিল, তার বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। আমার শুধু একটাই মেয়ে নাম পপি আক্তার আমার আর কোনো সন্তান নাই। সে অনেক কষ্ট করে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে কিন্তু টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি করাতে পারিনি। আপনাদের সবার কাছে আমার কড়জোর অনুরোধ আমার স্বামীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফেরত পাঠান’। এ কথাগুলো যখন বিউটি বেগম বলেছিলেন তখন তিনি অঝোরে কাঁদছিলেন। মতিয়ার রহমানের এক মেয়ে। তার নাম পপি। মতিয়ারের তিন ভাই দুই বোন। এক ভাই মারা গেছে। তার বাবা নেই  মা আছেন। 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads