• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
প্রবীণ-নবীনের মন্ত্রিসভা হচ্ছে নতুন সরকারে

জাতীয় সংসদ

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

প্রবীণ-নবীনের মন্ত্রিসভা হচ্ছে নতুন সরকারে

বিশ্বকাপের পর মন্ত্রিসভায় যোগ হতে পারেন মাশরাফি

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ০১ জানুয়ারি ২০১৯

নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ঘোষিত বেসরকারি চূড়ান্ত ফলে ২৯৮টি সংসদীয় আসনের মধ্যে দলটির নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৮৮টি। জাতির জনকের কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করবে। নতুন বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে না হলে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা শপথ নিতে পারেন বলে সূত্র জানায়।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সূত্র জানায়, গত রোববার অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে দলের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। কারা ঠাঁই পাচ্ছেন আর কারা মেয়াদ শেষে বাদ পড়ছেন বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে- এমন বিশ্লেষণ ও হিসাব-নিকাশ চলছে। প্রবীণ ও নবীনের সমন্বয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠিত হতে যাচ্ছে। বর্তমান প্রবীণ মন্ত্রীদের বেশিরভাগেরই নতুন মন্ত্রিসভায় থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে কারো কারো মন্ত্রণালয় বদল হতে পারে। এবারের মন্ত্রিসভায় নতুন কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী দেখা যেতে পারে।

সূত্র মতে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন। নতুন মন্ত্রিসভায় তিনি থাকছেন না বলে ধরে নিয়েছেন নীতিনির্ধারকরা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসতে পারে নতুন মুখ। কুমিল্লা-১০ আসন থেকে নির্বাচিত পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বা সিলেট-১ আসনে জয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই ড. একে আবদুল মোমেন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন।

সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, সেতু ও নৌপরিবহনসহ আরো কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন হচ্ছে না। তারা সফল হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন। তবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে নিয়ে দলের কারো কারো অসন্তোষ আছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সফল হলেও তিনি অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন। ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও মন্ত্রিসভায় থাকছেন। মহাজোটের শরিক দলের মধ্যে যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদের কারো বাদ পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে তাদের মধ্যে কারো কারো দায়িত্ব বদলের কথা ভাবা হচ্ছে।

বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় ছিলেন মোস্তাফা জাব্বার, ইয়াফেস ওসমান, মতিউর রহমান ও নূরুল ইসলাম বিএসসি। তাদের কারো ফিরে আসার সম্ভাবনা তেমন নেই। ফলে আইসিটি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ধর্ম এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে নতুন মুখ আসতে পারে। বস্ত্র ও পাট এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নতুন কারোর আসার সম্ভাবনা বেশি। মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় কাউকে রাখার চিন্তা আপাতত নেই। ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াও বাদ পড়তে পারেন।

এবারের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে অন্যতম চমক ছিলেন ক্রিকেটের বরপুত্র ও ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। নড়াইল-২ আসনে দলের টিকেটে বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন তিনি। নতুন মন্ত্রিসভায় তাকে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে মাশরাফির এখনই শপথ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে আরেকটি সূত্র জানায়। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর তিনি শপথ নেবেন, এমনটিই ভাবা হচ্ছে।

এবারের মন্ত্রিসভায় নতুন যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে আছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ থেকে নির্বাচিত র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, দিনাজপুর-২ থেকে নির্বাচিত ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কুমিল্লা-৯ আসন থেকে নির্বাচিত তাজুল ইসলাম, চাঁদপুর-৪ থেকে নির্বাচিত সাংবাদিক নেতা মুহম্মদ শফিকুর রহমান, ঢাকা-১৭ থেকে নির্বাচিত অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, জয়পুরহাট-২ আসনে জয়ী ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কিশোরগঞ্জ-২-এর নূর মোহাম্মদ, চট্টগ্রাম-৯ থেকে নির্বাচিত ও প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং চট্টগ্রামের আরেকটি সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত মহাজোটের প্রার্থী ও জাসদ নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল। তাদের মধ্যে র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (১৯৯৬-২০০১) সাবেক একান্ত সচিব ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আস্থাভাজন এ নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। আর কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে দলের টিকেটে জয়ী পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেখা যেতে পারে।

নতুন করে মন্ত্রিসভায় যোগ হওয়ার তালিকায় আছেন গোপালগঞ্জ-১ থেকে নির্বাচিত ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, টাঙ্গাইল-১ থেকে নির্বাচিত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, চাঁদপুর-৩ আসনে নির্বাচিত ডা. দীপু মনি, চট্টগ্রাম-৭ আসনে জয়ী দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও লালমনিরহাট-৩ আসনে জয়ী মহাজোট প্রার্থী জিএম কাদের। তারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন প্রথম মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন। ঢাকা-১৮ আসনে নির্বাচিত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, চাঁদপুর-১ আসনে নির্বাচিত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও পাবনা-১ থেকে জয়ী সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর মন্ত্রিসভার যোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে সূত্র জানায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads