অর্থমন্ত্রী হিসেবে আজ শপথ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বদলে যাবে ‘অর্থ মন্ত্রণালয়’। এতদিন যেভাবে চলেছিল সেভাবে আর নয়। আগামীকাল (আজ) থেকেই কাজ শুরু হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশালতা ও পরিসর অনেক বাড়বে। যেখানে চ্যালেঞ্জ সেখানে সম্ভাবনা রয়েছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাওয়া হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত আয়োজন মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে গতকাল রোববার তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেতে যাওয়া অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীসহ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ২৭ দশমিক ৪২ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান মুস্তফা কামাল।
এ সময় নতুন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, দায়িত্ব নিয়েই আমি আগে দেখব কোন কোন জায়গায় কী কী সমস্যা আছে। তারপর কাজ করব। আমি কাজ করব নম্বর বেইজ, অবজেকটিভ বেইজ এবং টাইম বেইজ। বিনিয়োগ এবং ব্যাংকিং খাত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব সমস্যার সমাধান হবে। আমি সে লক্ষ্যেই কাজ করব।
তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশালতা ও পরিসর অনেক বাড়বে। নিজের শিক্ষা ও অর্জিত জ্ঞান দিয়ে এ মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, আমি মিথ্যা আশ্বাস দেব না। আমি ফেইল বা ব্যর্থ হব না। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আমরা এগিয়ে যাব। তিনি বলেন, যেখানে চ্যালেঞ্জ সেখানে সম্ভাবনা রয়েছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
এ সময় সাবেক হতে যাওয়া পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বরাদ্দের ২৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছিল।
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনের তথ্য দিয়ে তিনি জানান, ছয় মাসে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মিলে এডিপির ৪৯ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৪৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা।
আইএমইডি সূত্র জানায়, এবার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে ৭ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।
ছয় মাসে সরকারের নিজস্ব তহবিলের বরাদ্দ থেকে ২৮ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এ খাতে ব্যয় হয়েছে বরাদ্দের ২৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বিদেশি সহায়তা থেকে ব্যয় হয়েছে ১৭ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ২৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো নিজেদের তহবিল থেকে ২ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এ তহবিল থেকে ব্যয়ের হার সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৯২ শতাংশ।