• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মহান মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন

ছবি : পিআইডি

সরকার

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে : প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং এর অর্জনগুলো সমুন্নত রাখার জন্য তার সরকার দুর্নীতিবিরোধী লড়াই অব্যাহত রাখবে।

টানা তৃতীয়বার এবং চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর গতকাল রোববার তার প্রথম কর্মদিবসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, যদিও কোনো দেশের পক্ষেই শতভাগ দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়, তবে আমাদের সরকারের একটা দায়িত্ব হলো এই দুর্নীতি প্রতিরোধ করা; যাতে এটি দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে না পারে এবং আমাদের সব সাফল্য ম্লান করে না দেয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোর দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও মাদক নির্মূলের ক্ষেত্রে আমাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনা দেশে বার বার ঘটেছে। কিন্তু আমরা দেশকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে পেরেছি। প্রযুক্তির বদৌলতে এই সাফল্য এসেছে এবং এটা ডিজিটাল বাংলাদেশের একটা ভালো ফল। তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের দেশের উন্নয়নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের জনগণের কল্যাণে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, যাতে জনগণ তার সুফল ভোগ করতে পারে। আমরা দেশকে উন্নত ও সম্ভাবনাময় জাতিতে পরিণত করতে চাই। ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছি। এটাকে অবশ্যই আমাদের ধরে রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সময় তার সরকারকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তার সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সহযোগিতা করেন। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় সব ধরনের উন্নয়নকাজ শেষ করতে চাই, যাতে দেশ আরো এগিয়ে যায়। দেশ সব ক্ষেত্রে নিজস্ব সক্ষমতা অর্জন করতে চায়। বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও শান্তি বজায় রাখতে সচেষ্ট রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আর অপরের ওপর নির্ভরশীল থাকব না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আর যেন দেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসতে না পারে তার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা চাই যে বা যারা দেশের ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করবে এবং উন্নয়নকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের কারণে বিশ্ববাসী আমাদের দেশকে সম্মানের চোখে দেখে থাকে। কিন্তু একসময় বাংলাদেশকে খরা, দুর্ভিক্ষ, বন্যার দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছিল। যা আমাদের কষ্ট দিত। আর আমরা এটাকে সহ্য করতে চাই না। তিনি বলেন, সেই সময় থেকে আমি মনে করতাম আর কাউকে দেশকে খাটো করতে  দেব না। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছি তাই সব সময় মাথা উঁচু করে থাকতে চাই।

এদিকে চতুর্থবার এবং টানা তৃতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করায় সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা সেনানিবানের শিখা অনির্বাণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তিনি এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শেখ হাসিনা শিখা অনির্বাণের বেদিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের পর মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত শেখ হাসিনা পরে শিখা অনির্বাণ চত্বরে সংরক্ষিত দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মো. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাশিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর নতুন মেয়াদে দায়িত্ব পালনে এদিনই প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে তার প্রথম অফিস করেন। শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে পৌঁছালে তাকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পিএসও এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মহাপরিচালক অভ্যর্থনা জানান। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads