• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য সম্প্রীতির দেশ হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। গতকাল বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী তার নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আলোচনা করতে গিয়ে সম্প্রীতির কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী এছাড়াও দেশের সাংবাদিকদের সুযোগ সুবিধা প্রসঙ্গে বলেন, নবম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদের সুপারিশমালা পরীক্ষা করে দ্রুত গেজেট প্রকাশ করা হবে। সরকার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে প্রতি ৫ বছর পর পর ওয়েজ বোর্ড গঠন করছে। নবম ওয়েজ বোর্ড সব সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ৪৫ ভাগ মহার্ঘভাতা প্রদানের সুপারিশ করেছে। তিনি বলেন, অসচ্ছল, অসুস্থ ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিকদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন করা হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এ ট্রাস্ট থেকে মোট ১ হাজার ৩৯৬ জনকে মোট ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। খবর বাসস।

শেখ হাসিনা বলেন, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ তহবিলে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ডে সিড মানি হিসেবে ২০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ডে বর্তমানে মোট ৩৫ কোটি টাকা সিড মানি রয়েছে। তিনি বলেন, সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহের অধিকার সুরক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। ইতোমধ্যে সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের আলোকে দেশে গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে সাংবাদিকদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪টি টেলিভিশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৩টি সম্প্রচার করছে। ২৮টি এফএম রেডিওর লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি এফএম রেডিও সম্প্রচার করছে। এলাকা ও অঞ্চলভিত্তিক ৩২টি কমিউনিটি রেডিও লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, এর মধ্যে ১৭টি সম্প্রচারে রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে সারা দেশে প্রকাশিত মোট দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ১ হাজার ২৪৮টি, যার মধ্যে ঢাকা থেকে প্রকাশিত পত্রিকার সংখ্যা ৫০২টি ও আঞ্চলিক পত্রিকার সংখ্যা ৭৪৬টি। সারা দেশে সাপ্তাহিক পত্রিকার সংখ্যা ১ হাজার ১৯২টি, মাসিক পত্রিকার সংখ্যা ৪১৪টি ও অন্যান্য পত্রিকার সংখ্যা ৪১টি। এ ছাড়া ২ হাজার ২১৭টি অনলাইন মিডিয়া রয়েছে, যার মধ্যে অনলাইন পত্রিকা ১ হাজার ৮৭৪টি, ইন্টারনেট টেলিভিশন ২৫৭টি, অনলাইন রেডিও ৪৫টি ও ই-পেপার ৪১টি।

শেখ হাসিনা বলেন, সম্প্রচার আইন, ২০১৮-এর খসড়া তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত অক্টোবর খসড়া আইনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে। এটি গত ৪ নভেম্বরে ভেটিংয়ের জন্য লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪-এর অনুচ্ছেদ ৩.২.২ থেকে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য পরিবেশনের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে। দেশের প্রচলিত অন্যান্য আইনেও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের বিরুদ্ধে বিধি-নিষেধ রয়েছে। মিথ্যা সংবাদ প্রচার করলে টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরি সুরক্ষার জন্য ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরি ও শর্তাবলি) আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। গত বছর ১৫ অক্টোবর মন্ত্রিসভা বৈঠকে এর নীতিগত অনুমোদন করা হয়।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক বন্ধন ও সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা হলে সরকার তা কঠোরভাবে দমন করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। দেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদেও সব ধর্মাবলম্বীর নিজ নিজ ধর্ম পালন ও প্রচারে অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে বসবাসরত সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষের মধ্যে গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে চেয়েছে। তবে সরকারের ঐকান্তিক চেষ্টায় তা ব্যর্থ হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ক্ষেত্র তৈরির কুচক্রী মহলের যেকোনো চেষ্টা ব্যর্থ করতে বদ্ধপরিকর। এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর। শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ধর্মীয় উগ্রপন্থা তথা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে অসাম্প্রদায়িক জাতি-রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রম ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads