প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফেরত যাবে। সবাই এটাই চায় কিন্তু মিয়ানমার চায় না। এটাই সমস্যা। আমরা চুক্তি করেছি কিন্তু তাদের সাড়া পাইনি। মিয়ানমারই আগ্রহী না। তবু দেখা যাক, সবাই মিলে বললে হয়তো সাড়া পাব।
আজ রোববার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ড সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কাজ চলছে। মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তিও হয়েছে। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী নয়।
তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গা ইস্যুটি নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কথা বলছি, জাপানের সঙ্গে কথা বলছি, অন্যদের সঙ্গে কথা বলছি– সবাই বলছে, হ্যাঁ তারা মিয়ানমারের নাগরিক, তাদের ফিরে যাওয়া উচিত।'
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'রাখাইনে তো এখনও কিছু মানুষ আছে। আমাদের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে এসেছে। সবকিছু যখন প্রায় চূড়ান্ত, তখন দেখা গেল রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চায় না। তারা ফিরে না যাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করলো। কিন্তু এই আন্দোলনের উসকানিটা কারা দিল?'
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো চায় না রোহিঙ্গারা ফিরে যাক– এমন অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারণ রোহিঙ্গারা ফিরে গেলে বিদেশ থেকে তাদের কাছে সাহায্য আসা বন্ধ হয়ে যাবে। এই যে একটা বিশাল অংকের টাকা-পয়সা আছে...। তাই তারা চায় না রোহিঙ্গারা ফিরে যাক।
সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের বিষয়টি সৌদি আরবে ওআইসি সম্মেলনেও তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে ওআইসির সদস্য দেশগুলো আশ্বাস দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানে যেমন সফর হয়েছে, চীনেও হবে। দাওয়াত ছিল, সে সময় পার্লামেন্টে জরুরি কিছু বিষয় থাকায় সময় করতে পারিনি। আগামী জুলাই মাসে আবার দাওয়াত দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। তখন আমাদের বাজেট পাস হবে। ওখানে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সামিট হবে সামারে। যে শীত সেখানে, ওই শীতে জীবনেও যেতে পারব না। এখন সামার সামিট হবে ওখানে। চীনের রাষ্ট্রপতিও দাওয়াত দিয়েছেন। ইনশাল্লাহ জুলাইতেই যাব সেখানে।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সবাই সম্মান করে। অথচ বাংলাদেশ থেকে তার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস থেকে তো মুছে ফেলা যায় না। ওই সময় যারা তরুণ ছিলেন, তারাই রাজনীতির শীর্ষে। তারা বঙ্গবন্ধুকে জানেন। তাই তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে। তাদের দাওয়াত আছে। কিন্তু সব দাওয়াত তো রাখা যায় না। বয়সও হয়ে গেছে। গতবার সময় স্বল্পতার কারণে পারিনি। আশা করছি জুলাই মাসে চীনে যাব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।