• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
বিদেশ গিয়ে কেউ যেন প্রতারিত না হন : প্রধানমন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত

সরকার

বিদেশ গিয়ে কেউ যেন প্রতারিত না হন : প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ আগস্ট ২০১৯

বিদেশে যাওয়ার সময় সাধারণ মানুষ যেন প্রতারিত ও দালালের ধোঁকায় না পড়েন, সেজন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নজরদারি জোরদারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘প্রবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় সরকার।’ প্রবাসীদের পাঠানো টাকা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু এখন আর শ্রমিক পাঠাব না। দক্ষ জনশক্তিও আমাদের পাঠাতে হবে।’

গতকাল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি ২০১৬-এর আলোকে গঠিত অভিবাসনবিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণা বন্ধে আমাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। কেননা তারা (প্রবাসী) আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তুলতে রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। এখন আমরা শুধু লেবার পাঠাব না। স্কিলড ম্যানপাওয়ার অর্থাৎ দক্ষ জনশক্তি কীভাবে আমরা পাঠাতে পারি, রপ্তানি করতে পারি, তা ভাবতে হবে। এতে যে যাবে সেও লাভবান হবে; দেশও লাভবান হবে।’

তিনি বলেন, ‘তারা যেন অকালে হারিয়ে না যায়, সেজন্য তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের দিকে নজর দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তারা আমাদের দেশেরই নাগরিক।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের প্রায় একশটি দেশে অবস্থান করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। যা আমাদের দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। তারা দেশে তাদের পরিবারের জন্য যে বিদেশি মুদ্রা পাঠাচ্ছেন তার পরিমাণ জিডিপির ১২ শতাংশের  মতো।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু কিছু দালাল শ্রেণির লোক সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মানুষকে দেশের বাইরে পাঠায়। মানুষ যাতে ওদের মুখরোচক কথার ধোঁকাবাজিতে না পড়ে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে। এভাবে কোথাও গিয়ে কেউ যেন অকালে হারিয়ে না যান।’ বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে দালালদের মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মতো অনিয়মের কথাও প্রধানমন্ত্রী সভায় তুলে ধরেন। এসব অনিয়ম বন্ধ করতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও সভায় তুলে ধরেন তিনি।

এসব সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও অনেকে দালালের খপ্পরে পড়ে বিপদে পড়ে যায় মন্তব্য করে সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে অনেক বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনা মনে করিয়ে দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। পাশাপাশি কর্মক্ষম যুবসমাজকে দক্ষ করে গড়ে তোলার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কর্মক্ষম যুবসমাজ রয়েছে, সেটা আমাদের জন্য বিরাট শক্তি। তাদের বিভিন্ন কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা বাড়াতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক দেশে আমাদের মেয়েরা কাজ করতে যান। ওই নারীশ্রমিক কোন ধরনের কাজ করবেন, তার জন্য যে প্রশিক্ষণ দরকার, সেটাও তারা নেন না। এর ফলে কাজ না জানার কারণে নির্যাতনের শিকার হতে হয়।’

যারা কাজের জন্য বিদেশ যাচ্ছে তাদের জীবনবৃত্তান্ত সহযোগে একটি ডাটাবেজ প্রস্তুত করার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে তারা কোন কাজের জন্য কোন দেশে যাচ্ছে, তার বিবরণ থাকতে হবে।’

বিদেশে গমনেচ্ছুরা যে কাজের জন্য বিদেশে যাচ্ছেন তার প্রশিক্ষণ ও সে দেশের ভাষার ওপর দখল থাকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আমরা যৌথভাবেই প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারি, যেমনটি অতীতেও করা হয়েছে।’

অন্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads