• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

সরকার

‘সরকার মিয়ানমারের ফাঁদে পড়েছে’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ আগস্ট ২০১৯

সরকার মিয়ানমারের ফাঁদে পড়েছে উল্লেখ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, বিএনপি সরকারই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পেরেছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এ দাবি করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসের উদ্যোগে কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কিছুটা ভারসাম্যহীন অবস্থায় রয়েছেন। কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেবকে মনে হচ্ছে তিনি খুব বিব্রত। তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলছেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যা নাকি আমরা করেছি, কী বলবেন। হাসিও পায় তার কথা শুনে। এখন উনারা পারছেন না। আমরা পেরেছিলাম। ১৯৭৮ সালে এই রোহিঙ্গারা এসেছিল একইভাবে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান অতি অল্প সময়ের মধ্যে মিয়ানমারকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কেন পেরেছিলেন পাঠিয়ে দিতে সেই শক্তি তার ছিল। তিনি কক্সবাজারে ক্যান্টনমেন্ট তৈরি করে ফেললেন ওই সময়ে, পুরো গ্যারিশন নিয়ে চলে গিয়েছিলেন। বলছেন আইদার ইউ টেইক ব্যাক অর ইউ উইল ফেইস।

খালেদা জিয়ার শাসনামলের কথাও উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার আমলে ১৯৯২ সালে একই ঘটনা ঘটেছিল। প্রায় ২ লাখ ৪৪ হাজার রোহিঙ্গা এসেছিল সেই সময়ে। তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) সরাসরি বললেন যে, তুমি কী ফেরত নেবে নাকি আমি অন্য ব্যবস্থা নেব। তারা (মিয়ারমার) ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে এই সরকার মিয়ানমারকে একবারের জন্য বকাবকিও করে নাই, খেয়াল করে দেখবেন। একটা স্টেটমেন্ট নাই যেখানে বলেছে যে, মিয়ানমার জেনোসাইড করেছে, মিয়ানমার এথনিক ক্লেনজিং করছে, হত্যা করছে, নির্যাতন করছে। বারবার করে তাদেরকে বলছে, ভাই নিয়ে যাও, নিয়ে যাও। অ্যাগ্রিমেন্ট সই করেছে, সেই অ্যাগ্রিমেন্ট সই করার মতো নয়। ওর মধ্যে কোনো কিছুই নাই, মিয়ানমার যা বলেছে তাই করতে হবে এবং তাই করছেও তারা। সরকার ওদের ট্র্যাপে পড়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটা দেশও বাংলাদেশের পক্ষে নেই এখন। চীন, ভারত, জাপান, রাশিয়া- সব মিয়ানমারের পক্ষে। তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে কে? দুই বছর ধরে কী করলেন? অথচ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভারত ও চীনের সঙ্গে। তাহলে বন্ধুরা কী করল? আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় তো জানেনই না এত বিরাট সমাবেশ কি করে হলো? আর আরেকজন বলেছেন, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভারতের সঙ্গে। কী বলব বলেন? কবি নজরুল ইসলামের কবিতার মতো বলতে হয়, ‘আমরা ওই দেখিয়া শুনিয়া খেপিয়া গিয়াছি তাই যা আসে কই মুখে’ সেই অবস্থা দাঁড়িয়েছে।

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। আজকের আওয়ামী লীগ তো সেই আওয়ামী লীগ নেই। যে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাযুদ্ধের আগে সংগ্রাম করেছে গণতন্ত্রের জন্য, সেই আওয়ামী লীগ এখন নেই। এই আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই দল যাদের নিজেদের কোনো কিছুই নেই। তারা ফ্যাসিস্ট, গণবিরোধী, মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের হাত আজকে মানুষের রক্তে রঞ্জিত। তাদেরকে পরাজিত করতে এখন যেটা দরকার তা হচ্ছে সাহস, শক্তি, মনোবল এবং এক লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।

তিনি বলেন, আমরা জানি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা করেছিলেন তখন বেশিরভাগ লোকই কিন্তু পালিয়ে গিয়েছিলেন, ছিল না। তিনি (জিয়া) স্বাধীনতাযুদ্ধ ঘোষণা করে গোটা জাতিকে যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছিলেন। তাকে মনে করে, জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কবিতার কথাগুলো মনে করে আজকে আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাই, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে সংগ্রামের দিকে যেতে হবে, আন্দোলনের দিকে যেতে হবে।

জাসাসের সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন রোকনের পরিচালনায় এই আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুুল হাই শিকদার, জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, মো. নাসিম আহমেদ, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক চৌধুরী, সানাউল হক, শাহিরিয়ার ইসলাম শায়লা, জাহাঙ্গীর আলম রিপন, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads