• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

সরকার

শিশুহত্যাকারীদের কঠোর সাজা হবে

শিশুদের সৎ থাকার পরামর্শ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ অক্টোবর ২০১৯

যারা শিশু হত্যা করবে তাদের কঠোর থেকে কঠোর সাজা পেতে হবে, অবশ্যই পেতে হবে। আমরা চাই, আমাদের প্রতিটি শিশু লেখাপড়া শিখবে, উন্নত জীবন পাবে, সুন্দর জীবন পাবে। গতকাল শুক্রবার বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় শিশুদের সৎ থাকারও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সততার সঙ্গে জীবন যাপন করলে নিজের মধ্যে একটি শক্তি সঞ্চার হয়। কারণ কারো কাছে জীবনে মাথা নত করতে হয় না।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ। শিশু হত্যাকারীদের কঠোর সাজা পেতে হবে বলে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই আমাদের শিশুরা সমাজের  খারাপ দিক থেকে দূরে থাকবে। যেমন মাদকসহ নানা ধরনের অপকর্ম। এ ধরনের অপকর্মে যেন শিশুরা না জড়ায়। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক থেকে সবাইকে দূরে থাকতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, সততার সঙ্গে জীবন যাপন করা। কারো একটা গাড়ি আছে বলে আমারও লাগবে, কারো একটা দামি কাপড় আছে বলে আমারও লাগবে- এই চিন্তাটা যেন মনে না আসে। নিজেকে কখনো ছোট মনে করবে না, এটা আমার অনুরোধ থাকবে।

সব শিশুর মধ্যে একটা সুপ্ত চেতনা রয়েছে, মনন রয়েছে, তা বিকশিত করে গড়ে তুলতে হবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।     

এ সময় শিশুদের জন্য তার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই কোনো কিছুতেই যেন মানুষ হত্যার শিকার না হয়, প্রতিটি শিশু যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। প্রতিটি শিশুর জীবন যেন অর্থবহ হয় এটাই আমাদের লক্ষ্য। শিশুদের ওপর অন্যায় অবিচার কখনো বরদাশত করা হবে না। যারা শিশু হত্যা করবে তাদের কঠোর থেকে কঠোর সাজা পেতে হবে, অবশ্যই পেতে হবে। আমরা চাই, আমাদের প্রতিটি শিশু লেখাপড়া শিখবে, উন্নত জীবন পাবে, সুন্দর জীবন পাবে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কিছুদিন থেকে দেখছি শিশুদের ওপর অমানবিক অত্যাচার। সমাজে যে এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটছে, সে সময় যদি (১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট) শিশু হত্যাকারী, নারী হত্যাকারীদের বিচার হতো তাহলে মানুষের ভেতরে একটা ভয় থাকত। খুনের মানসিকতা গড়ে উঠত না।

তিনি বলেন, যারা ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের পর ক্ষমতায় এসেছিল তারা দেশের কথা, জাতির কথা ভাবেনি। তারা শুধু ভেবেছিল তাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখা, ধন-সম্পদ বানানো, অর্থশালী-বিত্তশালী হওয়ার, নিজেদের জীবনটাকে অন্তত সেভাবে আর্থিকভাবে সচ্ছল করে গড়ে তোলার কথা।

প্রতিবন্ধী শিশুদের অবহেলা না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা শিশু আছে, তাদের বলব- তোমাদের আশপাশে যারা প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র আছে, তাদের কখনো অবহেলা করো না। তাদের আপন করে নিও। তাদের পাশে থেকো, সহযোগিতা করো। কারণ তারাও তো তোমাদের মতোই শিশু। কারণ আমরা ছোটবেলায় পড়েছি, কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না। আসলে এটা বলা নিষ্ঠুরতা ও অমানবিতা। আমাদের শিশুরা নিশ্চয়ই তা করবে না।  

ছোটভাই রাসেলের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন, রাসেল তখন আব্বা বলে কান্না করত। এজন্য মা বলেছিলেন, আমাকেই আব্বা বলে ডাকো। জেলখানায় গিয়ে সে একবার আব্বার দিকে তাকাতো, একবার মায়ের দিকে তাকাতো। একটা ছোট্ট শিশু পিতার স্নেহবঞ্চিত ছিল। আমরা তো বঞ্চিত ছিলামই। ১৯৬৯ সালে যখন তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুকে এদেশের মানুষ মুক্ত করে নিয়ে এলো তখন রাসেল বাবাকে বাড়িতে পেল। তখন একটা জিনিস আমরা লক্ষ করতাম সে খেলার ছলে কিছুক্ষণ পরপর আব্বা কোথায় আছেন দেখতে আসত। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে ১৮ নম্বর ধানমন্ডির একটি বাড়িতে নিয়ে রাখা হলো। রাসেল খুব চাপা স্বভাবের ছিল, সহসা নিজে কিছু বলত না। তার চোখে পানি দেখে যদি বলতাম, তোমার চোখে পানি কেন? বলত চোখে যেন কী পড়েছে। এইটুকুন ছোট বাচ্চা, সে তার নিজের মনের ব্যথাটা পর্যন্ত লুকিয়ে রাখত।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads