• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
তিন মাস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে সরকার

সংগৃহীত ছবি

সরকার

তিন মাস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

কোরবানির পশুর চামড়া যদি ট্যানারি মালিকরা সময়মতো আড়তদারদের কাছ থেকে কিনে নাও নেয় তবে সেগুলো তিন মাস পর্যন্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। এজন্য সরকারি উদ্যোগে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন গুদামে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

গতকাল এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় সিদ্ধান্তটি হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় কোরবানির সময় চামড়া সংরক্ষণের জন্য কওমি মাদরাসাগুলোকে প্রস্তুত রাখা হবে বলে জানানো হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে আলাদা ভর্তুকি প্রদান করা হবে। প্রয়োজন হলে উপজেলা পর্যায়ে ন্যূনতম দুজন ডিলারকে চামড়া সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে। তাদেরও প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়াও জানা গেছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন হলে সাময়িকভাবে কাঁচাচামড়ার পাশাপাশি প্রক্রিয়াকৃত (ওয়েট-ব্লু) চামড়া রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এর জন্য সরকারের রপ্তানি নীতি সংশোধন করার দরকার হলে, তা-ও করা হবে।

প্রসঙ্গত, আসন্ন কোরবানির চামড়া যথাযথভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিল্প, বাণিজ্য, পরিবেশ ও বন, ধর্ম, তথ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, অর্থ বিভাগ, ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুপারিশ পেশ করবে। 

সভায় আরো জানানো হয়, গত ঈদুল আজহায় আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া ক্রয়ের জন্য ট্যানারি মালিকদের অনুকূলে ৬৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও ট্যানারিগুলো মোট ৪৩৮ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেছিল। গতবারের অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী ঈদুল আজহায় কোরবানির চামড়া কেনার জন্য ট্যানারি মালিকদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতবার অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে যেসব দীর্ঘসূত্রতা ও সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সেগুলো নিরসনের চেষ্টা করা হবে।   

পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য পেশাদার ও মৌসুমি কোরবানির পশু প্রক্রিয়াজাতকারী, ফড়িয়া, মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের চলমান প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরো শক্তিশালী করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গতবছর ৯ হাজার জনকে এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে বলে সভায় অবহিত করা হয়।

সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, চীনে করোনা ভাইরাস বিস্তারের ফলে দেশীয় চামড়া শিল্প যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার বিকল্প বাজার অনুসন্ধান করছে। ইউরোপের বাজারে দেশীয় চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে ট্যানারিগুলোকে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সার্টিফিকেশন অর্জন করতে হবে। এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে সিইটিপি স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। সার্টিফিকেশন অর্জনে অন্যান্য শর্তও পূরণে ট্যানারি মালিকদের আরো সক্রিয় হতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, কোরবানির চামড়ার সঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতি জড়িত। দেশীয় চামড়া শিল্পের স্বার্থে ট্যানারিগুলোকে রক্ষা করতে হবে। সেইসঙ্গে কোরবানির চামড়া যাতে নষ্ট না হয় এবং তৃণমূলের চামড়া ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টিও দেখতে হবে।

পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এ সময় কোরবানির সময় চামড়া সংক্রান্ত সমস্যাসমূহ নিয়ন্ত্রণে সব অংশীজনদের পারস্পরিক আস্থা বজায় রেখে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। 

সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল হালিম, অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মফিজুল হক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাখাওয়াত হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জন নিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের মহাপরিচালক মনোয়ারুল ইসলাম, বিসিকের পরিচালক ড. মোহা. আব্দুস ছালামসহ চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads