• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শক্তিশালী নৌবাহিনী চান প্রধানমন্ত্রী

ছবি: পিআইডি

সরকার

আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শক্তিশালী নৌবাহিনী চান প্রধানমন্ত্রী

  • বাসস
  • প্রকাশিত ১৮ জুন ২০২০

বাংলাদেশ যুদ্ধ নয় শান্তি চায়, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা এবং সম্পদ রক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এই বিশাল সমুদ্রসীমা এবং সম্পদ রক্ষার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন এবং সেজন্য ইতোমধ্যেই অনেক আধুনিক সরঞ্জাম এবং জাহাজ আমরা ক্রয় করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নতুন সংযোজিত যুদ্ধ জাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর কমিশনিং প্রদানকালে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

চট্টগ্রামের নৌঘাঁটি বিএনএস ঈসা খানে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন।

বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। আমরা শান্তি চাই।’

‘আমরা শান্তি চাই, এটা যেমন সত্য আবার কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা করে তাহলে সেটা যেন আমরা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারি সেজন্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘সেজন্যই আমরা চাচ্ছি আমাদের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন হয়।’

তার সরকারের উদ্যোগে দেশে আন্তর্জাতিক মানের যুদ্ধ জাহাজ তৈরির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নিজেরাও এখন দেশে স্বল্প পরিসরে নৌবাহিনীর জাহাজ বানানো শুরু করেছি, মেরামত করছি এবং বন্ধু প্রতীম দেশের সঙ্গে মিলে যেখানে যা প্রয়োজন তা করে যাচ্ছি।’

‘তবে, ভবিষ্যতে এ ধরনের জাহাজ যেন আমরা নিজেরাই তৈরী এবং রপ্তানি করতে পারি সেজন্য আমাদের জানতে হবে, শিখতে হবে এবং এই চিন্তাটাকেও মাথায় রাখতে হবে,’ বলেন তিনি।

তিনিই সর্বপ্রথম খুলনা শিপইয়ার্ডকে নৌবাহিনীর দায়িত্বে দিয়ে দেন এবং পাশাপাশি চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জের দুটি ড্রাইডককেও নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।

তিনি কমিশনিং করা এই যুদ্ধ জাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদানে লেবাননে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, করো সঙ্গে বৈরিতা নয়-’ সেই নীতি নিয়েই আমরা চলবো। কাজেই যেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা দরকার সেখানে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে। এই সহযোগিতা আমরা করে যাব।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত দেশ হিসেবে এটাকে আমাদের কর্তব্য বলে আমরা মনে করি। তবে, অহেতুক ঝুঁকি না নিয়ে সকলে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন।’
শেখ হাসিনা এ সময় কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেই দায়িত্ব পালনেরও পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, ‘আমি নৌবাহিনীর সকল সদস্যকে বলবো আপনার নিজেদের সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেই স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করেনাভাইরাসের সময় নিজেকে এবং পরিবারকে সকলে সুরক্ষিত রাখবেন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এই সময় নৌ বাহিনীর সকল সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য তিনি সর্বাঙ্গীন মঙ্গল ও দোয়া কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ক্রমে বানৌজা সংগ্রামের কমিশনিং ফরমান জাহাজটির অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আরিফুর রহমানের কাছে হস্থান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে জাহাজটি নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয়। গণচীনে তৈরী বানৌজা সংগ্রাম ৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ১১ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট। শত্রু বিমান, জাহাজ এবং স্থাপনায় আঘাত হানতে সক্ষম জাহাজটি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপণযোগ্য মিসাইল, অত্যাধুনিক থ্রিডি রাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, রাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত।

জাহাজটিতে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য ডেক ল্যান্ডিংসহ অন্যান্য সুবিধাদি রয়েছে।

সূত্র জানায়, গভীর সমুদ্রে দীর্ঘ সময়ব্যাপী মোতায়েনযোগ্য এ জাহাজর মাধ্যমে বিশাল সমুদ্র এলাকায় অনুপ্রবেশ ঠেকানো, চোরাচালান ও জলদস্যুতা রোধ, সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা, সমুদ্র অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালনাসহ মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার পাশাপাশি তেল, গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দকৃত ব্লকসমূহের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এছাড়া, জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত শান্তিরক্ষা মিশনে লেবাননের ভূমধ্যসাগরে মোতায়েনের জন্য আজকের কমিশনিং শেষে আগামীকাল ৯ জুন বানৌজা সংগ্রাম লেবাননের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads