• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ভিন্ন নামে আফতাবনগরে পশুর হাট

আফতাবনগরে পশুর হাট

ফাইল ছবি

মহানগর

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা

ভিন্ন নামে আফতাবনগরে পশুর হাট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ আগস্ট ২০১৮

এবারের ঈদুল আজহায় রাজধানীর আফতাবনগরে পশুর হাটের কোনো ইজারা আহ্বান করেনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এরপরও সেখানে পশুর হাট বসানো হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসায় তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ডিএনসিসি। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ভিন্ন নামে চলছে হাট।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে দাওকান্দি ইন্দুলিয়া ভাগাপুর নগর (মেরাদিয়া মৌজা) নাম দিয়ে পশুর হাটের ইজারা দেওয়া হয়। মধ্য বাড্ডার মাদরাসা মারকাজুল হকের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ৫৫ লাখ টাকায় এই পশুর হাটের ইজারা নেন। আফতাবনগরের লোহারপুলের পূর্ব দিকে বনশ্রী রাস্তা সংলগ্ন একটি এলাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যে পড়েছে। ওই স্থানটিতে পশুর হাট বসার কথা দেখিয়ে এই ইজারাটি নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান ভূমি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আফতাবনগর এলাকায় পশুর হাট বসেছে। এ ব্যাপারে আমরা লিখিত চিঠিও দিয়েছি। হাট উচ্ছেদ করতে আমরা পুলিশ ও র্যাবের সহায়তা চেয়েছি।

পশুর হাটের ইজারাদার মোহাম্মদ আলী গতকাল শনিবার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, পশুর হাটটি ডিএসসিসি এলাকায় বসানো হয়েছে। তবে পশুর বড় হাট হওয়ায় পাশেই ডিএনসিসির জমিতে বেপারিরা পশু জড়ো করেছেন। এ ব্যাপারে ডিএনসিসি থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর শুক্রবার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাট পরিদর্শন করেছেন। তবে হাটে প্রবেশের জন্য আফতাবনগরের জহিরুল ইসলাম সিটি আবাসিক এলাকার প্রবেশ সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জহিরুল ইসলাম সিটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাট কর্তৃপক্ষ একটি বৈঠকও করেছে।

২০১৬ সালে আফতাবনগর পশুরহাট ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৬ কোটি টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। গত বছর সেই পশুর হাটের ইজারা দেওয়া হয় মাত্র ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। এ বছর ডিএসসিসির অধীনে অন্য নাম দেখিয়ে মাত্র ৫৫ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে হাট ইজারায় সরকার প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।

গত পাঁচ বছরে আফতাবনগর পশুর হাটের ইজারার চাঁদাবাজির টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে অন্তত আটজন খুন হয়। ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানিরপাম্প এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামা, বাড্ডার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা, ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ মানিক ও যুবলীগ নেতা আবদুস সালাম। ২০১৪ সালে মাহবুবর রহমান গামা আফতাবনগর গরুর হাট সাড়ে ৫ কোটি টাকায় ইজারা নেন। ওই ইজারাকে কেন্দ্র করে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আমেরিকা প্রবাসী সন্ত্রাসী মেহেদি গ্রুপের ক্যাডার বাহিনী। চাঁদা দিতে না চাইলে পরের বছর মাহবুবসহ চারজনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে ২০১৫ সালের ৩ মে বাড্ডা জাগরণী সংসদ ক্লাবে আফতাবনগর পশুর হাটের ৬০ লাখ টাকা চাঁদার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠক চলাকালে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন রাহিনকে।

এসব ঘটনার জের ধরে ডিএনসিসির প্যানেল মেয়র ওসমান গণি চলতি বছর আফতাবনগর পশুর হাট ইজারা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এর আগে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকার কর্তৃপক্ষ প্যানেল মেয়রের কাছে পশুরহাট বন্ধ করে দেওয়ার আবেদন জানায়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads