• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মহড়ায় দুর্ভোগ নগরবাসীর

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মহড়ায় দুর্ভোগে নগরবাসী

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মহড়ায় দুর্ভোগ নগরবাসীর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ নভেম্বর ২০১৮

জনগণের সেবার সুযোগ পেতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হতে চাইছেন অনেকে। সম্ভাব্য এসব প্রার্থীর অনেকের মনোনয়ন মহড়া রাজধানীবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত শুক্রবার থেকে টানা চার দিন আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ফরম দেওয়া শুরুর পর প্রতিদিন চলছে ধানমন্ডি এলাকায় যানজট।

গতকাল সোমবার শুরু হয় বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি। এতে নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশের সড়কেও দেখা দেয় যানজট।

সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনের প্রতিটিতে প্রার্থী থাকছে বড় দুই দলের। মনোনয়নপ্রত্যাশীও বেশি এই দুই দলে। প্রথম তিন দিনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তিন হাজারেরও বেশি প্রার্থী।

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অধিকাংশ নিজেদের শক্তি দেখাতে মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন দলীয় কার্যালয়ে। এদের অনেকের মিছিলে থাকছে মোটরসাইকেল ও গাড়ির বহর।

গতকাল সোমবার দুপুর ১টায় ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান নেত্রকোনা-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরিফ খান জয়। মোটরসাইকেলের বহরের পাশাপাশি বাস-পিকআপ এবং ট্রাকে করে বিশাল মিছিল নিয়ে যান তিনি।

ওই সময় মোহাম্মদপুর থেকে যেসব গাড়ি জিগাতলার দিকে যাচ্ছিল, সবগুলোকে থমকে থমকে মিছিলের পেছনে যেতে হচ্ছিল। এর আগেও ছিল অন্য প্রার্থীদের এমন মিছিল।

মিডলাইন পরিবহনের একটি বাসের কর্মী আবদুল্লাহ জানান, সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুর থেকে রওনা হয়ে দুপুর ১২টায় ধানমন্ডি পৌঁছান তিনি।

তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকেই এই রাস্তায় যানজট শুরু হইছে। গতকাল অবস্থা আরো খারাপ ছিল, সারাদিনে মাত্র দুই ট্রিপ মারতে পারছি। আইজ দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগল এই রাস্তা আইতে।’

যানজটের কারণে রিকশা না পেয়ে হেঁটেই রওনা হন লালবাগগামী তরুণী সুমাইয়া জামান। তিনি আগের দিন যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন।

সুমাইয়া বলেন, ‘গতকাল বাসায় যেতে তিন ঘণ্টা লেগেছে। আজো যানজট থাকায় কোনো রিকশা এদিকে আসে না। বাসও চলে ধীরে। এজন্য ধানমন্ডি ৯ নম্বর থেকে হেঁটে চলে এসেছি। জিগাতলা মোড় পার হয়ে রিকশা নেব।’

জিগাতলার কাছে যেখানে আওয়ামী লীগের কার্যালয় সেই ধানমন্ডি ৩ নম্বর সড়কের দিনের বেশিরভাগ সময়েই পূর্ব পাশের সড়কে যানবাহন আটকে যাচ্ছে। কারণ একটির পর একটি মিছিল যাচ্ছে সেই পথ দিয়ে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের রাখা গাড়িও চলাচলের পথ সঙ্কীর্ণ করে তুলেছে। ধানমন্ডি এলাকায় যানজট সামলাতে হিমশিম ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।

আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনের সড়কে দায়িত্ব পালনরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে যানজট। যত বড় মিছিল আসে, যানজটও তত বেশি হয়। ’

অন্যদিকে গতকাল সোমবার বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি।

এজন্য সকাল থেকেই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড় ছিল নয়া পল্টনে। মনোনয়ন ফরম কিনতে আসা নেতা এবং কর্মীদের বহনকারী যানবাহন রাখা হয় ইনার সার্কুলার রোডে। ফলে ওই সড়কেও যানজট লেগে যায়।

পরে পুলিশ এসে সড়কের এক লেইনে যান চলাচলের ব্যবস্থা করলে ওই এলাকার যানজট পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুটি এলাকার সড়কে চাপ বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা হলেও ‘ম্যানেজ’ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক, দক্ষিণ) এসএম মুরাদ আলী।

তিনি বলেন, ‘এক জায়গায় অতিরিক্ত চাপ হয়ে গেলে একটু সমস্যা হয়ই। তবে সেটা আমরা ডাইভারশন দিয়ে ম্যানেজ করছি। যেসব গাড়ি জিগাতলা হয়ে যেত সেসব গাড়িকে মিরপুর রোড হয়ে পাঠাচ্ছি।

পল্টনের আশপাশে অনেক সড়ক থাকায় যানবাহন বিকল্প পথে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ কারণে ওই এলাকায় যানজট তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে।’

এবার নির্বাচন কমিশন অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিলেও রাজনৈতিক দলগুলোর তেমন কোনো পদক্ষেপ ছিল না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads